Call

প্রত্যেক মানুষের হায়াত আল্লাহ তায়ালা নির্ধারিত করে দিয়েছেন. তাই এর থেকে বোঝা যায়, যে আত্মহত্যা বা সাধারণ ভাবে মারা যায়! তার রুহ জিবরাইল (আঃ) কবচ করেন. এ থেকে বোঝা যায় রুহ জিবরাইল (আঃ) এর কাছে থাকে. আর পৃথিবীতে জীন জাতি ছারা ভয় দেখানোর মত আর অন্য কিছু নাই.

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

Call

আত্মহত্যা মানে নিজেকে নিজে হত্যা করা। এর সাথে মৃত্যু এবং আত্মার সম্পর্ক বিদ্যমান। যেহেতু এই দুটি ব্যাপারে আমাদের বিজ্ঞান খুব বেশি কিছু বলতে পারেনা, তাই ধর্মীয় দিক থেকে আত্মা এবং আত্মহত্যার ব্যাপারটি ব্যাখ্যা করতে হবে।

প্রথমে জানি আত্মা কি?
আত্মা হল সকল কার্যকলাপের মূল হাতিয়ার, হোক সে মানুষ বা অন্য কোন প্রাণী। আত্মা ছাড়া দেহ অচল। দেহে যতসময় আত্মা থাকে, তত সময় দেহটি সচল থাকে। আর সে মারা গেলেই আত্মাটি দেহ থেকে বের হয়ে যায়, যার কারনে দেহ অচল এবং মূল্যহীন হয়ে পড়ে। 

আত্মা হল এক প্রকার শক্তি। যার কোন ক্ষয় নেই। আর আমাদের বিজ্ঞানও শক্তির অবিনশ্বতা অসম্পর্কে বলে, "শক্তির কোন ক্ষয় নেই। কেবল এক অবস্থান থেকে অন্য অবস্থানে রূপান্তর আছে মাত্র।"। ঠিক তেমনি ভাবে আমাদের আত্মাও এক অবস্থান থেকে অন্য অবস্থানে স্থানান্তরিত হচ্ছে। 

মানুষ আত্মহত্যা করলে আত্মা কোথায় থাকে?

আসুন, প্রথমে একটি কোরআনের আয়াত শুনি:

وَهُوَ الْقَاهِرُ فَوْقَ عِبَادِهِ وَيُرْسِلُ عَلَيْكُم حَفَظَةً حَتَّىَ إِذَا جَاء أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ تَوَفَّتْهُ رُسُلُنَا وَهُمْ لاَ يُفَرِّطُونَ
অনন্তর তাঁরই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর তোমাদেরকে বলে দিবেন, যা কিছু তোমরা করছিলে। তিনিই স্বীয় বান্দাদের উপর প্রবল। তিনি প্রেরণ করেন তোমাদের কাছে রক্ষণাবেক্ষণকারী। এমন কি, যখন তোমাদের কারও মৃত্যু আসে তখন আমার প্রেরিত ফেরেশতারা তার আত্মা হস্তগত করে নেয়।     
(সূরা: আল আন-আম | আয়াত: ৬১)

উপরোক্ত আয়াতে আল্লাহ তায়ালা স্পষ্টভাবে বলেছেন, যখন কোন ব্যাক্তি মৃত্যু বরন করে তখন আল্লাহ্ প্রেরিত ফেরেশতাগণ সেই ব্যাক্তির আত্মা হস্তগত করে। অর্থাৎ, মৃতব্যাক্তির আত্মা আল্লাহর জিম্মায় চলে যায়। এটি তখন আর পৃথিবীতে বিরাজ করে না। আমরা মৃত ব্যাক্তির উদ্দেশ্যে যে জানাযা আদায় করি, সেটি আসলে সেই আত্মাকে ধর্মীয় নিয়মে বিদায় জানানো। তাই হোক সে স্বাভাবিক মৃত্যু বা অস্বাভাবিক (আত্মহত্যা বা অন্য কিছু), আল্লাহ না চাইলে মৃত ব্যাক্তির আত্মা আর পৃথিবীতে ফিরে আসে না বা অবস্থান করে না।

যেহেতু পৃথিবীতে আত্মাটি বিরাজ করে না, তাই তার পক্ষে মানুষকে ভয় দেখানোর কোন উপায়ও নেই। তাছাড়া মৃত্যুর পরপরই তার শাস্তি বা শান্তির বিষয়টিও চলে আসে। যারা দাবি করে যে মৃত ব্যাক্তির রূপে কাউকে দেখেছে, সেগুলি দুষ্ট জিন ছাড়া আর কিছু নয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

মৃত্যুর পরের সময়টিকে যদিও পরকালের মধ্যে গণ্য করা হয়েছে, তবুও কোরআন-হাদীস মৃত্যু ও বিচার দিনের মধ্যবর্তী সময়কে আলমে বরযখ নামে অভিহিত করেছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন- আরবী হবে,,,,,,,,,,,,,,,,,, এবং তাদের পেছনে রয়েছে বরযখ- যার সময়কাল হচ্ছে সেদিন পর্যন্ত যেদিন তাদেরকে পুনর্জীবিত ও পুনরুত্থিত করা হবে। (সূরা মুমিনুন-১০০) এই আয়াতে যে বরযখ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে, এর অর্থ হলো যবনিকা পর্দা। অর্থাৎ পর্দায় আবৃত একটি জগৎ- যেখানে মৃত্যুর পর থেকে আখিরাতের পূর্ব পর্যন্ত মানুষের রুহ্ অবস্থান করবে। ইসলাম পাঁচটি জগতের ধারণা মানুষের সামনে উপস্থাপন করেছে। প্রথম জগৎ হলো, রুহ্ বা আত্মার জগৎ- যাকে আলমে আরওয়াহ্ বলা হয়েছে। দ্বিতীয় জগৎ হলো মাতৃগর্ভ বা আলমে রেহেম। তৃতীয় জগৎ হলো আলমে আজসাম বা বস্তুজগৎ- অর্থাৎ এই পৃথিবী। চতুর্থ জগৎ হলো আলমে বরযাখ বা মৃত্যুর পর থেকে আখিরাতের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত যে সুক্ষ্ম জগৎ রয়েছে, যেখানে মানুষের আত্মা অবস্থান করছে। পঞ্চম জগৎ হলো আলমে আখিরাত বা পুনরুত্থানের পরে অনন্তকালের জগৎ। এ কথা স্পষ্ট মনে রাখতে হবে যে, রুহ বা আত্মার কখনো মৃত্যু হয় না। মৃত্যুর পর এই পৃথিবী থেকে আত্মা আলমে বরযখে স্থানান্তরিত হয়। অর্থাৎ আত্মা দেহ ত্যাগ করে মাত্র, তার মৃত্যু হয় না। আলমে বরযখের বিশেষভাবে নির্দিষ্ট যে অংশে আত্মা অবস্থান করে সে বিশেষ অংশের নামই হলো কবর। বাহ্যিক দৃষ্টিতে কবর একটি মাটির গর্ত মাত্র যার মধ্যে মৃতদেহ সমাহিত করা হয়। মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই দেহ পচে গলে যায়। মাটি এই দেহ খেয়ে নিঃশেষ করে দেয়। কিন্তু প্রকৃত কবর এক অদৃশ্য সুক্ষ্ম জগৎ। যা মানুষের জ্ঞান, বুদ্ধি ও কল্পনারও অতীত। প্রকৃত ব্যাপার হলো, মৃত্যুর পর মানুষ কবরস্থ হোক, চিতায় জ্বালিয়ে দেয়া হোক, বন্য জন্তুর পেটে যাক অথবা পানিতে ডুবে মাছ বা পানির অন্য কোনো প্রাণীর পেটে যাক, সেটা ধর্তব্য বিষয় নয়। মানুষের দেহচ্যুত আত্মাকে যে স্থানে রাখা হবে সেটাই তার কবর। অর্থাৎ মৃত্যুর পর থেকে শুরু করে আখিরাতের পূর্ব পর্যন্ত যে অদৃশ্য জগৎ রয়েছে, সেই জগতকেই আলমে বরযখ বলা হয় এবং আলমে বরযখের নির্দিষ্ট অংশ, যেখানে মানুষের আত্মাকে রাখা হয়- সেটাকেই কবর বলা হয়। মাটির গর্ত কবর নয়- আলমে বরযখে দুটো স্থানে মানুষের আত্মাকে রাখা হবে। একটি স্থানের নাম হলো ইল্লিউন আর আরেকটি স্থানের নাম হলো সিজ্জীন। ইল্লিউন হলো মেহমানখানা, অর্থাৎ পৃথিবীতে যারা মহান আল্লাহর বিধান অনুসারে নিজেদের জীবন পরিচালিত করেছে, তারাই কেবল ঐ মেহমানখানাই স্থান পাবে। আর যারা পৃথিবীতে আল্লাহর বিধান অমান্য করেছে, নিজের খেয়াল-খুশী অনুসারে চলেছে, মানুষের বানানো আইন-কানুন অনুসারে জীবন চালিয়েছে, তারা স্থান পাবে সিজ্জীনে। সিজ্জীন হলো কারাগার। আল্লাহর কাছে যারা আসামী হিসেবে পরিগণিত হবে, তারা কারাগারে অবস্থান করবে। কোরআন-হাদীস স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, কবরে ভোগ-বিলাস অথবা ভয়ঙ্কর আযাবের ব্যবস্থা থাকবে। হাফেয ইবনে কাইয়িম রহ. সকল মতামত উদ্ধৃত করে বলেন, সৎ, অসৎ, নেককার ও বদকার প্রত্যেকের রুহ এক স্থানে থাকবে না। তাদের প্রত্যেকের ঠিকানা যেমন ভিন্ন তেমনি তাদের রুহের বিশ্রামস্থলও ভিন্ন। কারো রুহ আলা ইল্লিয়্যিন তথা শিখরচুম্বী সর্বোচ্চ স্থানে, আবার কারো রুহ আসফালা সাফেলিন তথা নিম্নদেশের অন্তস্থলে রাখা হবে। কারো রুহ হযরত আদম আ.-এর যামানতে, কারো রুহ হযরত ইবরাহিম আ.-এর যামানতে, কারো রুহ হযরত মিকাইল আ.-এর যামানতে থাকবে। কারো রুহ সবুজ পাখি হয়ে উড়ে বেড়াবে। কারো রুহ বেহেশতের বাগানে বিচরণ করতে থাকবে। কারো রুহ বেহেশতের ফটকের কাছে থাকবে। কারো রুহ আগুনের চুল্লিতে, কারো রুহ রক্তের নদীতে সাঁতার কাটতে থাকবে। মোটকথা, রুহের শ্রেণীভেদের তারতম্যের কারণে তাদের অবস্থানস্থলও ভিন্ন ভিন্ন হবে। তবে যে রুহ যেখানেই থাকুক না কেনো সেগুলোর অবশ্যই নিজ নিজ কবরের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক থাকবে। তবে এ সম্পর্কের প্রক্রিয়া ও ব্যবস্থাপনার সঠিক অবস্থা একমাত্র আল্লাহ তাআলাই জানেন। এর একটা উদাহরণ হলো, ঘুমমত্ম ব্যক্তির দেহের সঙ্গে রুহের একটি বিশেষ সম্পর্ক থাকে। এ সম্পর্কের গতি-প্রকৃতি ও রূপরেখা কেমন? এটা কেউই বলতে পারবে না; এমনকি ঘুমন্ত ব্যক্তি নিজেও সেই সম্পর্ক অনুভব করতে পারে না। কবরের সঙ্গে রুহের সম্পর্ক অনেকটা সেরকমই। ইমাম কুরতুবি, হাফেয ইবনে হাজার আসকালানি ও শাইখ জালালুদ্দিন সুয়ুতি রহ. সহ বিদগ্ধ মনীষীগণ উপরোক্ত অভিমত প্রকাশ করেছেন। কাজেই এই অভিমত নির্দ্বিধায় গ্রহণযোগ্য। সুতরাং এই রূহ ইহিজগৎ এর মানুষ কোনদিন এ ভয় দেখাবে না,নিজ কাজে সে ব্যস্ত থাকবে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ