ফিরদাউস দারুস সালাম জান্নাতুল মাওয়া দারুল খুলদ জান্নাতুল আদন জান্নাতুল আখিরাহ জান্নাতুন নাঈম দারুল মুকামাহ https://bn.m.wikipedia.org/wiki/জান্নাত

Talk Doctor Online in Bissoy App
Call

জান্নাত হলো চিরস্হায়ী । তার নায-নেয়ামত, ভোগ-বিলাস ও সকল মন্জিল মুমিনের জন্যে প্রতিদান স্বরূপ । বর্ণিত আছে, হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, জান্নাতের দেওয়াল স্বর্ণ ও চান্দি দ্বারা নির্মিত , মাটি জাফরান ও মিশকের । এক হাদীসে আছে, একজন সাধারণ বেহেশ্তী যে স্হান লাভ করবে , তা সমগ্র দুনিয়া ও দুনিয়ার দশগুন স্হানের সমান হবে । -মুসলিম, মেশকাত । উল্লেখ আছে, জান্নাতে সর্বপ্রথম প্রবেশকারী দলের সুরত হবে চৈাদ্দ তারিখের চাদের উজ্জ্বলতার মত, তাদের প্রত্যেককে একশত মানুষের শক্তি প্রদান করা হবে । খানা-পিনা, নাক-মুখের ময়লা, ঘুম ও থু থু এবং পেশাব পায়খানাসহ মানবিক কোন প্রয়োজন সৃষ্টি হবে না । জান্নাতি লোকদের শরীর থেকে মিশকের মত সুঘ্রাণ নির্গত হবে । উল্লেখ আছে, জান্নাতি হুররা দেখতে ইয়াকুত ও মারজানের মত হবে ।তাদের চেহারার উজ্জ্বলতা দৃষ্টি শক্তিকে দমিয়ে রাখতে পারবেনা । তারা পোশাকে আয়না অপেক্ষা অধিক স্বচ্ছ ও পরিস্কার হবে । মামুলী একজনের গায়ের উজ্জ্বলতা মাশরিক ও মাগরেবকে আলোকিত করে তুলবে । প্রত্যেক হুরই সত্তর তা কাপড়ের পোশাকে সজ্জিত থাকবে , যার সূক্ষতার দরুণ তাদের রৈাপ্য সদৃশ পায়ের গোছা পর্যন্ত দৃষ্টি গোচর হবে । জান্নাতে প্রত্যেক মুমিন-ই হযরত আদম (আ.) এর মত লম্বা-চওড়া হবে ,ইউসুফ (আ.) এর মত সুন্দর যুবক হবে । কখনও বৃদ্ধ হবে না । কন্ঠ হযরত দাউদ (আ.) এর মত সুন্দর হবে । জান্নাতী মহিলারা সকল প্রকার হিংসা-বিদ্বেষ, পরনিন্দা, ঈর্ষা ও দুঃচরিত্রয়তা থেকে মুক্ত থাকবে, কখনো অসুস্হ হবে না ।

Talk Doctor Online in Bissoy App

Call

জান্নাতের হুর লু'বা : হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, হযরত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেছেন : জান্নাতে এক হুর আছে, যার নাম লু’বা। তাঁকে চারটি জিনিস দিয়ে বানানো হয়েছে মেশক, আস্বর, কাফুর ও জাফরান। আবার এমন জিনিসকে “মায়ে হায়ওয়ান” (এক প্রকার বিশেষ পানি) দ্বারা মিশানো হয়েছে। জান্নাতের সমস্ত হুর তার উপর আশেক। যদি সে সমূদ্রে থুথু ফেলে, তাহলে সমস্ত পানি মিষ্টি হয়ে যাবে। তার কপালে লেখা আছেঃ “যে আমাকে চ সে যেন তার পরওয়ার দেগারের অনুগত্য করে”। জান্নাতের একটি বৃক্ষ : হযরত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেছেনঃ বেহেশতে একটি বৃক্ষ আছে, যার ছায়ায় জান্নাতীরা শত বছর চললেও শেষ হবে না। জান্নাতে এমন নেয়ামত আছে, যা কোন চুক্ষ কোন দিন দেখেনি, কোন কান কোন দিন শূনে নি, কোন হ্রদয় কোনদিন কল্পনাও করত পারেনি। যেমন এরশাদ হয়েছে - ﻓَﻼَ ﺗَﻌْﻠَﻢُ ﻧَﻔْﺲٌ ﻣَّﺎ ﺍُﺧْﻔِﻰَ ﻟَﻬُﻢْ ﻣِّﻦْ ﻗُﺮَّ ﺓِ ﺍَﻋْﻴُﻦِ “কেউ জানেনা যে, সেখানে চোখের শীতলতা কি পরিমানে লুকায়িত আছে” জান্নাতে এক চাবুক পরিমান স্থান দুনিয়া ও দুনিয়াস্থিত সমস্ত জিনিস অপেক্ষা শ্রেয়।'' হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন যে, জান্নাতীগণের শোভা- সৌন্দর্য্য যথারীতি বৃদ্ধিই হতে থাকবে, দুনিয়ায় তো ধীরে ধীরে বার্ধক্য আসতে থাকে; কিন্তু আখেরাতে রূপ-যৌবন বাড়তেই থাকবে।

Talk Doctor Online in Bissoy App
Call

জান্নাতের বর্ণনা জান্নাতের প্রশস্ততা জান্নাতের প্রশস্ততা সম্পর্কে কুরআনুল কারীমে আল্লাহ্ তা'আলা বলেন, “ তোমরা দ্রুত অগ্রসর হও তোমাদের প্রতিপালকের ক্ষমার দিকে ও সেই জান্নাতের দিকে যার বিস্তৃতি হচ্ছে আসমানসমূহ ও যমীনের সমান, যা মুত্তাকীদের জন্য তৈরী করা হয়েছে। (সূরাহ আল-ইমরানঃ ১৩৩) ” জান্নাত দেখার পরই সঠিকভাবে বোঝা যাবে যে জান্নাত কত বিশাল এবং তার নেয়ামত কত অসংখ্য। আল্লাহ্ তা'আলা বলেন, “ তুমি যখন দেখবে তখন দেখতে পাবে ভোগ বিলাসের নানান সামগ্রী আর এক বিশাল রাজ্য। (সূরাহ আদ্-দাহ্রঃ ২০) ” জান্নাতে শত স্তর আছে আর প্রত্যেক স্তরের মাঝে এত দূরত্ব আছে যতটা দূরত্ব আছে আকাশ ও যমিনের মাঝে। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘জান্নাতে শত স্তর আছে। প্রত্যেক স্তরের মাঝে দূরত্ব হল আকাশ ও যমীনের দূরত্বের সমান। আর ফেরদাউস তার মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে আছে। আর সেখান থেকেই জান্নাতের চারটি ঝর্ণা প্রবাহমান। এর উপরে রয়েছে আরশ। তোমরা আল্লাহ্র নিকট জান্নাতের জন্য দু'আ করলে জান্নাতুল ফেরদাউসের জন্য দু'আ করবে'। (তিরমিজী- কিতাবুল জান্নাহ) জান্নাতে একটি বৃক্ষের ছায়া এত লম্বা হবে যে কোন অশ্বারোহী ঐ ছায়ায় শত বছর পর্যন্ত চলতে পারবে। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘জান্নাতে এমন একটি বৃক্ষ আছে যার ছায়ায় কোন আরোহী শত বছর পর্যন্ত চলতে পারবে। আর তোমরা ইচ্ছা করলে তিলাওয়াত করতে পার ‘এবং দীর্ঘ ছায়া"। আর জান্নাতে তোমাদের কারও একটি ধনুকের পরিমাণ জায়গাও ঐ জায়গা অপেক্ষা উত্তম যেখানে সূর্য উদিত হয় আর সূর্য অস্তমিত হয় (অর্থাৎ পৃথিবীর চেয়ে)"। (সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা- ৩২৫২, ৩২৫৩) সর্বশেষ জান্নাতে প্রবেশকারীকে এ দুনিয়ার চেয়ে দশগুণ বড় জান্নাত দান করা হবে। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন , 'জাহান্নামে থেকে সবশেষে বের হয়ে আসা ব্যক্তিকে আমি চিনি। সে হামাগুড়ি দিয়ে জাহান্নাম থেকে বের হয়ে আসবে। তাকে বলা হবে, "যাও জান্নাতে প্রবেশ কর"। নবী সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, "সে গিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে। সে দেখবে, লোকেরা স্ব স্ব স্থান অধিকার করে আছে। অতঃপর তাকে বলা হবে, "আচ্ছা সে যুগের (জাহান্নামের শাস্তি) কথা তোমার স্মরণ আছে কি?" সে বলবে, "হ্যাঁ, মনে আছে"। তাকে বলা হবে, "তুমি কি পরিমাণ জায়গা চাও তা ইচ্ছা কর"। সে ইচ্ছা করবে। তখন তাকে বলা হবে, "তুমি যে পরিমাণ ইচ্ছা করেছো তা এবং দুনিয়ার দশগুণ জায়গা তোমাকে দেয়া হল"। একথা শুনে সে বলবে, "আপনি আমার সাথে ঠাট্টা করছেন? অথচ আপনি হলেন সর্ব শক্তিমান"। বর্ণনাকারী ইবনে মাসঊদ রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন, "এ সময় আমি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এমনভাবে হাসতে দেখেছি যে, তাঁর মাড়ির দাঁত পর্যন্ত প্রকাশ হয়ে পড়েছে'। (সহীহ মুসলিম- কিতাবুল ঈমান) জান্নাতে সর্বশেষ ব্যক্তি প্রবেশ করার পরও অনেক জায়গা বাকী থাকবে যা পূর্ণ করার জন্য আল্লাহ্ তা'আলা নতুন জীব সৃষ্টি করবেন। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন , 'জান্নাতে যতটুকু স্থান আল্লাহ্ চাইবেন ততটুকু স্থান খালি থেকে যাবে। অতঃপর আল্লাহ্ তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী অন্য এক জীব সৃষ্টি করবেন'। (সহীহ মুসলিম- কিতাবুল জান্নাহ) জান্নাতের অট্টালিকাসমূহ কুরআন মাজীদে আল্লাহ্ তা'আলা বলেন, “ মু'মিন পুরুষ আর মু'মিন নারীর জন্য আল্লাহ্ অঙ্গীকার করেছেন জান্নাতের যার নিম্নদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত, তাতে তারা চিরদিন থাকবে, আর জান্নাতে চিরস্থায়ী উত্তম বাসগৃহের; আর সবচেয়ে বড় (যা তারা লাভ করবে তা) হল আল্লাহ্র সন্তুষ্টি। এটাই হল বিরাট সাফল্য। (সূরাহ আত্- তাওবাহঃ ৭২) ” জান্নাতের অট্টালিকাসমূহ সোনা-রূপার ইট দিয়ে নির্মিত হবে। সহীহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আবু হুরাইরাহ রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, "আমি জিজ্ঞেস করলাম, "ইয়া রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সৃষ্টিকে কী দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে?" রাসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, "পানি দিয়ে"। আমি জিজ্ঞেস করলাম, "জান্নাত কী দিয়ে নির্মিত?" তিনি বললেন, "একটি ইট রৌপ্যের এবং আরেকটি ইট স্বর্ণের। তার গাঁথুনি হল সুগন্ধিযুক্ত মেশক আম্বর। তার কংকর মোতি ও ইয়াকুতের। তার মাটি জাফরানের। যে ব্যক্তি সেখানে প্রবেশ করবে সে জীবন উপভোগ করবে, তার কোন কষ্ট হবে না। চিরকাল জীবিত থাকবে, মৃত্যু হবে না। জান্নাতীদের কাপড় কখনো পুরানো হবে না। আর তাদের যৌবন কখনো বিনষ্ট হবে না"। (তিরমিজী- কিতাবুল জান্নাহ) জান্নাতের কোন কোন অট্টালিকায় স্বর্ণের বাগান থাকবে। আবার কোন কোনটিতে রূপার বাগান থাকবে। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, 'দুইটি জান্নাত এমন রয়েছে যে, এর যাবতীয় পাত্রসমূহ ও তার মধ্যে যা কিছু আছে সবই রৌপ্য নির্মিত। আবার দুইটি জান্নাত এমন আছে যে এর সমস্ত আসবাবপত্র এবং এর মধ্যে যা কিছু আছে সবই স্বর্ণ নির্মিত। জান্নাতে আদনের অধিবাসীদের মধ্যে এবং তাদের প্রতিপালককে দর্শনের মধ্যে কেবল তাঁর বড়ত্ব ও মহানত্বের চাদরখানা ব্যতীত আর কোন আড়াল থাকবে না'। (সহীহ মুসলিম- কিতাবুল ঈমান) জান্নাতের অট্টালিকাসমূহে সাদা মোতির নির্মিত বড় বড় সুন্দর গম্বুজ নির্মাণ করা হয়েছে। আনাস বিন মালেক রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে মেরাজের হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন , 'অতঃপর আমাকে জান্নাতে নিয়ে যাওয়া হল, যাতে সাদা মোতির নির্মিত গম্বুজ আছে। আর তার মাটি হল মেশক আম্বরের'। (সহীহ মুসলিম- কিতাবুল ঈমান) জান্নাতের তাঁবুসমূহ জান্নাতীদের প্রত্যেকের অট্টালিকায় তাঁবু থাকবে যেখানে হুরেরা অবস্থান করবে। আল্লাহ্ তা'আলা বলেন, “ তাঁবুতে সুরক্ষিত থাকবে সুলোচনা সুন্দরীরা। (সূরাহ আর-রাহমানঃ ৭২) ” জান্নাতের তাঁবু ষাট মাইল প্রশস্ত

Talk Doctor Online in Bissoy App