আলোচিত ব্যবসায়ী ড্যাটকো গ্রুপের চেয়ারম্যান ও স্বঘোষিত ধনকুবের ‘প্রিন্স মুসা’ খ্যাত মুসা বিন শমসের সম্পদের বিষয়ে দুদককে যতটা বলেছেন, তার ততটা নেই বলে জানিয়েছেন দুদকের চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে গনমাধ্যমকে তিনি এ সব তথ্য জানান।
চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান বলেন, ‘মুসা যত গর্জে, তত না। দুদকের কাছে তিনি বিশাল জমি-জমার হিসাব দিয়েছেন। তবে কোনো জায়গা তার দখলে নেই। আবার বিদেশে আটক ১২ বিলিয়ন ডলারের যে তথ্য দিয়েছেন, সেখান থেকে সেই তথ্যও পাচ্ছি না। আবার তিনিও কিছু দিতে পারছেন না। আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে দেখেছি, তেমন কিছু নেই। যতটা না করেছেন, তার চেয়ে বেশি বলেছেন তিনি।’
দুদকের একটি সূত্র জানান, চলতি বছরের ৭ জুন দুদকে সম্পদ বিবরণী জমা দেন মুসা বিন শমসের। সম্পদ বিবরণীতে তিনি সুইচ ব্যাংকে তার ১২ বিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি প্রায় ৯৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, প্রতি ডলার ৭৮ টাকা হিসাবে) ফ্রিজ অবস্থায় থাকার কথা উল্লেখ করেন। সুইচ ব্যাংকে ৯০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের (বাংলাদেশি প্রায় ৭০০ কোটি টাকা) অলংকার জমার তথ্য দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া দেশে তার সম্পদের মধ্যে গুলশান ও বনানীতে দুটি বাড়ি, সাভার ও গাজীপুরে ১ হাজার ২০০ বিঘা জমির কথাও সম্পদ বিবরণী উল্লেখ রয়েছে। চলতি বছরের ১৯ মে তার বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিস জারি করে কমিশন।
জিজ্ঞাসাবাদে কিংবা সম্পদ বিবরণীতে দুদকের কাছে সুইচ ব্যাংকের হিসাব নম্বর জানাননি। সুইচ ব্যাংকের ওই হিসাব নম্বর না পাওয়ায় সুনিদিষ্ট তথ্য চেয়ে এমএলএআর পাঠাতে পারছে না দুদক। তাই শিগগিরই সুইচ ব্যাংকের ওই হিসাব নম্বরটি জানতে তাকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
প্রিন্স মুসার বিরুদ্ধে ২০১১ সালে অবৈধ সম্পদের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ওই সময় বিজনেস ম্যাগাজিন ফোর্বসের প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে এ অনুসন্ধান শুরু করা হয়। তবে অজ্ঞাত কারণে দুদকের ওই অনুসন্ধান আলোর মুখ দেখেনি।
তিন বছর পর ২০১৪ সালের শেষের দিকে ‘বিজনেস এশিয়া’ ম্যাগাজিনের প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে নতুন করে মুসার সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক। ২০১৪ সালের ৩ নভেম্বর দুদকের পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীকে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর মুসাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস পাঠায় দুদক। ১৮ ডিসেম্বর ৮০ জন দেহরক্ষী বহরসহ দুদকে আসেন প্রিন্স মুসা। দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সুইচ ব্যাংকে জব্দ করা অর্থ ফেরত পেলে পদ্মা সেতু নির্মাণসহ বিভিন্ন খাতে তা বিনিয়োগ করবেন বলে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান মুসা।