ধূমপান ছাড়ার ক্ষেত্রে নিজের ইচ্ছা সবচেয়ে বেশী ভুমিকা রাখে। কিন্তু সিগারেট না খেলে তো মাথা প্রচণ্ড ভারি ভারি লাগে ও গরম হয়ে যায়। এই সমস্যাটি সারানোর জন্য আপনি কাচা আমলকী খেতে পারেন। জখনই সিগারেটের নেসায় মাথা ভারি হবে তখনি একটি আমলকী একবারে চিবিয়ে খাবেন। আমলকীর তিক্ত স্বাদ সাময়িকভাবে আপনার সিগারেটের নেশা দূর করবে। এজন্য পকেটে কয়েকটি আমলকী রাখুন। যখনি মাথা ধরবে তখনি একটি করে খাবেন। ইনশাআল্লাহ্ আপনি সিগারেটের নেশা সারতে পারবেন।
যারা সিগারেট ছেড়ে দিতে চান কিন্তু পারছেন না, তাদের জন্য এবার সুখবর বয়ে এনেছে একটি পিল। ওই পিল গ্রহণ করলে ধীরে ধীরে আপনার সিগারেটের নেশা কেটে যাবে। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ও জিনিস এক সময় আর ঠোঁটে নিতে আপনার ইচ্ছে করবে না। পুরো কোর্সের পিলের দাম মাত্র ৭০০ টাকা (৬ পাউন্ড)। জাদুকরি ওই পিলের নাম ট্যাবেক্স। বিগত ৪০ বছর ধরে এই ট্যাবেলট রাশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে ব্যবহার হচ্ছে। এখন ব্রিটিশ চিকিৎসকরা এটা তাদের দেশে গ্রহণযোগ্য করতে চাচ্ছেন। কারণ ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) দেখেছে, এই ট্যাবলেট সিগারেটের নেশা থেকে মুক্ত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার পুরো কোর্সটি মাত্র চার সপ্তাহের। প্রথম তিন দিন ছয়টি করে ট্যাবলেট খেতে হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে ট্যবলেট খাওয়ার হার কমিয়ে দিনে মাত্র দুটি করে খেতে হবে এবং চার সপ্তাহ চলবে এই কোর্স। সম্প্রতি এনএইচএস নিকোটিন চাহিদা প্রতিরোধে প্যাচ এবং চ্যামপিক্সের ওপর নজর দেন। কিন্তু দেখা যায়, চ্যামপেক্স আত্মহত্যা প্রবণতা বাড়ায় এবং এটা খুব দামী। এছাড়া এটা মোট ১২ সপ্তাহ খেতে হয় এবং এর দাম ১৬০ পাউন্ড। ট্যাবেক্স তৈরি হয় সাইটোসিন থেকে। সাইটোসিন নিকোটিনের সম্পূরক রাসায়নিক উপাদান। ল্যবরনাম (হলুদ ফুল বিশিষ্ট এক প্রকার গাছ) বীজে এই সাইটোসিন পাওয়া যায়। এর আগে মাদক ওয়াচডগ এই ওষুধটিকে ভালো বলেছিল। বর্তমানে মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল এবং ক্যান্সার রিসার্চ যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা বলছে, ট্যাবেক্স ধীরে ধীরে সিগারেটের প্রতি বিতৃষ্ণা তৈরি করে। ৭৪০ জন রোগীর ওপর গবেষণা চালিয়ে তারা এ তথ্য জানান। গবেষণা দলের প্রধান ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক রবার্ট ওয়েস্ট বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী কয়েক বিলিয়ন ধুমপায়ী আছে এবং ফুসফুস ক্যান্সার এখনও এক নম্বর হন্তারক।
১. বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ প্রচুর পরিমাণ ঠাণ্ডা পানি খাওয়ার জন্য৷ তবে খুব ঠাণ্ডা পানি বা ফ্রিজে রাখা পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে৷ আর এই পানি যদি তামার পাত্রে রাখা যায় তাহলে শরীর থেকে ধূমপানের ফলে যা জমেছে সেগুলো পরিষ্কার হয়ে যাবে৷ ২. অশ্বগন্ধা, ত্রিফলা এবং সুদর্শণচূর্ণ আমাদের শরীরে জমে থাকা দূষিত উপাদানগুলোকে বিষক্ষয় করতে সাহায্য করে৷ তবে এইগুলো সেবন করার আগে ডাক্তারের পারমর্শ নিয়ে ব্যবহার করা ভালো৷ ব্যবহার করা যাতে পারে হার্বাল সিগারেট প্রথম প্রথম ধূমপান ছেড়ে দিতে ভীষণ কষ্ট হতে পারে৷ তাই চিকিৎসকদের পরামর্শ, এই সময় সব থেকে ভাল উপায় হল সাধারণ সিগারেটের বদলে হার্বাল সিগারেট ব্যবহার করা৷ এই হার্বাল সিগারেটে সাধারণত হলুদ, তুলসি, লবঙ্গ, দারুচিনি এবং এলাচ দিয়েই তৈরি হয়ে থাকে৷ ধূমপান থেকে নিজেকে একটু দূরে রাখতে চাইলে, নিকোটিন যুক্ত সিগারেটের বদলে এই হার্বাল সিগারেট ব্যবহার করাকেই সবথেকে ভালো উপায় বলে পরামর্শ দেন আয়ুর্বেদিক ডাক্তাররা৷ মাঝে মাঝে আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞরা আরও একটি পরামর্শ দিয়ে থাকেন৷ তারা বলছেন আদা, হলুদ, আমলা গুঁড়া করে মিশ্রণ বানিয়ে একটি বলের আকারে গড়ে মুখের মধ্যে কিছুক্ষণ রেখে রেখে খাওয়া যেতে পারে৷ এই মিশ্রণ রোজ বা সপ্তাহে কয়েকদিন খেলে সিগারেটের প্রতি আকর্ষণ একেবারেই চলে যাবে বলে দাবি৷ খাবার তালিকার পরিবর্তন ধূমপান হঠাৎ করে ছেড়ে দেয়ার পর পরই খাবার খেতে গেলেই অনেকের মুখে একরকমের তেঁতো স্বাদ লাগে৷ তাই এই সময় কিছুদিন নিরামিষ খাওযার কথা বলছেন চিকিৎসকরা৷ অ্যালকালিন জাতীয় খাবার যেমন শাক-সবজি, ফল, শুকনো বাদাম, ইত্যাদি খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে৷ পাঁউরুটি, দুধ থেকে তৈরি খাবার, চা, কফিকে একটু এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে বলেছেন চিকিৎসকরা৷ সপ্তাহ খানেক এইরকম খাবার খেলেই মুখে আবার স্বাভাবিক স্বাদ ফিরে পাবেন৷
ধুমপান ছাড়ার জন্য সবচেয়ে বেশী দরকার নিজের সদিচ্ছা! আপনাকে নিজের সাথে নিজেকে কমিটমেন্ট করতে হবে যে আপনি আর ধুমপান করবেন না। আস্তে আস্তে পরিমান কমিয়ে ধুমপান ছাড়তে পারবেন না বা আমার জানামতে কোন ঔষধ/ইলেক্ট্রিক সিগারেট/প্যাচ খুব একটা কার্যকর হয়না। ধুম করে ছেড়ে দিতে হবে। জাস্ট এই মুহুর্ত থেকে ঠিক করুন আপনি আর ধুমপান করবেন না। প্রথম দিকে কষ্টটা বেশী হবে কিন্তু প্রথম দিকে মনের জোরটাও বেশী থাকে তাই ওই কষ্ট কাটিয়ে ওঠা কোন ব্যপারই না। আপনাকে যে কাজ গুলো করতে হবে তা হলো প্রথম কিছুদিন রেগুলার আড্ডা বা যেখানে/যাদের সাথে বেশী ধুমপান করেন সেই আড্ডা আর মানুষদের এড়িয়ে চলতে হবে, বন্ধু বান্ধবসহ পরিচিত সবাইকে বলে দিন আপনি ধুমপান ছেড়ে দিয়েছেন এবং তারা যেন এই ব্যাপারে আপনাকে সহায়তা করে। যে সময়গুলো আপনার ধুমপানের ট্রিগার হিসেবে কাজ করে (যেমন ভাত খাওয়ার পর, চা/কফি, আড্ডা ইত্যাদি) সে সময়গুলো নিজেকে অন্য কাজে ব্যাস্ত রাখুন। বাসায়, আত্মীয়, অধুমপায়ি বন্ধুদের সাথে বেশী সময় কাটান। প্রথম কিছুদিন খুব কষ্ট হবে, এই সময়টা পার করে দিলেই দেখবেন আপনার ভাল লাগতে শুরু করবে। আপনার মনের একটা অংশ (আসক্তি) প্রতিনিয়ত আপনাকে আবার ধুমপান করাতে চেস্টা করবে, এই সময়ে একটা সিগারেট খেলে বা কয়েক টান দিলে কিছু হবেনা এই ধরনের ভুল সিদ্ধান্ত নিবেন না তাহলে আর পারবেন না, মন শক্ত রাখুন। এই প্রাথমিক সময়টা যতটা সম্ভব নিজেকে আনন্দে রাখুন, প্রীয় মানুষের সাথে সময় কাটান দেখবেন একটা সময় সিগারেটের গন্ধও আপনার অসহ্য লাগছে। বেস্ট অফ লাক...
এখনই সময় সঠিক সিদ্ধান্তটি বাস্তবে রূপ দেওয়ার। কারণ, ধূমপান সর্ব অর্থেই আপনার জন্য অকল্যাণকর। আপনার কাজটি একটু সহজ করতে রইল ১০টি জরুরি টিপস : * আপনার ধূমপানের পক্ষের এবং বিপক্ষের যুক্তিগুলোর তালিকা তৈরি করুন। তালিকাটি পরিবার এবং বন্ধুদের দেখান। অন্যদের যুক্তিগুলোও তালিকাতে যোগ করুন। নিশ্চিতভাবেই আপনার বিপক্ষের যুক্তির তালিকা লম্বা হয়ে যাবে। * ধূমপানের ক্ষতিকর দিকগুলির লম্বা একটি তালিকা চোখের সামনেই রাখার ব্যবস্থা করুন। * ধূমপানের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করুন এবং না করার ব্যাপারে নিজেকে উৎসাহিত করুন। * ঠিক কোন কোন সময় আপনি ধূমপান করেন এবং তখন আপনি কী করেন সেটি নোট করুন। পরবর্তী সময়ে ওই কাজ করার সময় আর ধূমপান করবেন না। সিগারেটের বদলে বরং বাদাম, লজেন্স, চুইংগাম এগুলো খেতে পারেন। * এক মাস পরের একটি দিন ঠিক করে ফেলুন এবং নিজেকে কথা দিন ওই দিনের পর আপনি আর কখনও ধূমপান করবেন না। * একসঙ্গে দু’টি সিগারেটের বেশি কিনবেন না। * সিগারেট না কেনার কারণে প্রতিদিন যে টাকা জমবে তা একটি কাচের পাত্রে রাখুন যাতে টাকাগুলো বাহির থেকে দেখা যায়। এক মাস পর ওই টাকায় প্রিয়জনকে সুন্দর কিছু দেওয়ার পরিকল্পনা করুন। * সিগারেট খাবার সময় হলেই অন্যকিছুতে নিজেকে ব্যস্ত করে ফেলুন। গান শুনুন, কম্পিউটারে গেম খেলুন অথবা বাগানে নতুন কোনও গাছ লাগান। * অতিথি কিংবা সবার বেলাতেই বাড়িতে ধূমপান নিষিদ্ধ করুন। * নিজের অগ্রগতির প্রশংসা করুন এবং নিজের লক্ষ্য সম্পর্কে আরও স্থির হোন। পরিবারের সদস্যদের উৎসাহিত করতে বলুন। সবচেয়ে বড় কথা হলো নিজের ইচ্ছাশক্তি। ধূমপানের বিরুদ্ধে নিজের ইচ্ছাশক্তিকে জাগিয়ে তুলুন। অবশ্যই সফল হবেন। আপনার জন্য অপেক্ষা করছে একটি সুস্থ এবং স্বাস্থ্যকর জীবন।
অধিকাংশ ধূমপায়ীদের তামাকের নেশা প্রবল থাকে। তামাকের নেশা ছেড়ে দেয়া অনেকের পক্ষেই তাই কষ্টকর মনে হয়। তবে মনে রাখতে হবে, মানুষের ইচ্ছাশক্তির চেয়ে প্রবল আর কিছু নেই। এই ইচ্ছাশক্তির যত প্রয়োগ করা হবে, প্রতিবার তামাক সেবনের প্রতি ততটাই অনিহা আসবে আর এই ইচ্ছাশক্তিকে আরও জোরদার করতে ধূমপানসহ তামাক বর্জনের কয়েকটি কৌশল দেয়া হল। ১। প্রাত্যহিক শরীরচর্চাঃ নিয়মিত শরীরচর্চার ফলে তামাকের নেশা অনেকটা কেটে যায়। মাত্র ৩০ মিনিটের ব্যায়ামে তামাকের প্রতি আগ্রহ একদিনের জন্য হলেও কমিয়ে দেয় বলে গবেষণায় দেখা গিয়েছে। হাঁটতে বেড়িয়ে যান। সকালে বা বিকেলে কিছুপথ হেঁটে আসলে শরীরটাও চাঙ্গা লাগবে। বাসায় হালকা ব্যায়াম করা যেতে পারে। পুশ-আপস, বেলি –প্রভৃতি ফ্রিহ্যান্ড ব্যায়াম করা যেতে পারে যদি ব্যায়ামাগারে যাওয়ার সুযোগ বা সময় না থাকে। ২। নিয়মিত প্রার্থনাঃ ধর্মীয় শিক্ষা মানুষকে প্রকৃত মনুষত্বের স্বাদ দেয়। নৈতিক শিক্ষার ক্ষেত্রে ধর্মের কোন বিকল্প নেই। স্রষ্টার আরাধ্য সাধন কল্পে মানুষ তার বদভ্যাস ত্যাগ করে আর তাই সৃষ্টিকর্তার জন্য নিয়মিত প্রার্থনা করুন। ধূমপান ব্যতিত আরও যে সকল বদভ্যাস আছে সেসব নিমিষেই দূর হয়ে যাবে। ৩। নিজের ভ্রান্তির ফাঁদে পা দেয়া যাবে নাঃ ঠিক করে ফেলেছেন আর ধূমপান করবেন না। দু’দিন যাবার পর চায়ের কাপে চুমুক দেয়ার সময় হয়তো ভাবলেন “একটা খেলে কিছু হবে না”। নিজের এমন ফাঁদে পড়ে নিজেই কুপোকাত হয়েছেন অনেকেই। ফলশ্রুতিতে আর ছাড়া হয়ে উঠেনি ধূমপান। কারণ সে একটি সিগারেট পরবর্তীতে আরেকটি গ্রহণের তাড়না দেয়। তাই কখনো সেই ‘একটি সিগারেট’ সেবন করতে যাবেন না। তামাকের নেশা ছাড়তে হলে তা একেবারেই ছাড়তে হবে আপনার। ৪। আপনজনদের সাথে বেশি সময় কাটানঃ নিজের পরিবারকে সময় দিন। যে সময়টা তামাকের নেশার কারণে নষ্ট হয়, তা কাটানো যেতে পারে পরিবারের সাথে টেলিভিশনের কোন প্রোগ্রাম দেখে। বিকেলে হালকা নাস্তা ও চায়ের আড্ডা দিয়ে খুব ভালো সময় কাটাতে পারেন পরিবারের সদস্যদের সাথে। বন্ধুদের মধ্যে যারা তামাক সেবন করেন না, তাদের সাথে বেশি করে সময় কাটান। ধূমপান ছাড়ায় আপনার সাময়িক মানসিক চাপ থাকতে পারে। সে সকল কিছুই ভুলে থেকে সাফল্যের সাথে তামাকমুক্ত জীবন গড়তে পারবেন বন্ধুদের সহায়তায়।