আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, ইংরেজি শিখার ৩ টি ধাপ রয়েছে। ১। গ্রামার শেখা, ২। শব্দার্থ শেখা, ৩। চর্চা ও প্রয়োগ। একজন ভালো শিক্ষকের সহায়তায় সব নাহোক, অন্তত অতি প্রয়োজনীয় গ্রামাটিক্যাল বিষয়গুলো যথা: Sentence-এর গঠন ও শ্রেণীবিভাগ, Tense, Voice, Narration শিখে নিন। প্রচুর ইংরেজি শব্দার্থ আয়ত্ত করুন, গতানুগতিক ভাবে মনে রাখা কষ্টের কিন্ত একটা ধারাবাহিকতা রক্ষা করে পুরো বাক্যসহ শব্দার্থ শিখলে তা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। কোনো বাংলা শব্দ/বাক্য দেখলেই মনে মনে এর সম্ভাব্য ইংরেজিটা ভাবুন, একজন অভিজ্ঞকে জিজ্ঞেস করুন, তার সাথে আপনার মনেরটা মিলে গেলে নিজেকে বাহবা দিন আর না মিললে তুলনা করে দেখুন আপনার ভুলটা কোথায়। অনুরুপ ভাবে ইংরেজি বাক্য থেকে বাংলা করার চেষ্টা করুন। সাবটাইটেলসহ ইংলিশ মুভি বা ল্যারিক্স সহ ইংলিশ গান শুনুন ও তা বোঝার চেষ্টা করুন। দৈনন্দিন জীবনে ছোট ছোট ইংরেজি নিয়ে আসুন, মনে মনে লোকেদের সাথে ইংরেজি বলুন, ফেইসবুক বা অন্যান্য মাধ্যমে কারো সাহচর্য নিতে পারেন। ভুল করলে অপমানিত বোধ না করে তা শুধরানোর চেষ্টা করবেন আর আত্মবিশ্বাস কখনো হারাবেন না।
যেহেতু ইংরেজি আমাদের মাতৃভাষা নয় তাই ইংরেজি পড়ে অর্থ বোঝা কঠিন হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে ইংরেজি পড়ে অর্থ না বোঝার প্রধান কারণ ইংরেজি শব্দের অর্থ না জানা। তাই ইংরেজির অর্থ বুঝতে হলে প্রথমে ভোকাবুলারি বা শব্দ ভান্ডার বৃদ্ধি করতে হবে। ভোকাবুলারি বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ওয়ার্ডবুক পড়তে পারেন। কেউই একদিনে ইংরেজিতে ভাল করতে পারে না। এর জন্য প্রয়োজন প্রচুর অনুশীলন। হাতের কাছে বা ফোনে একটি ডিকশনারি রাখুন। কোনো শব্দের অর্থ না জানলে সাথে সাথে শব্দটির অর্থ দেখে নিন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বড় ভাই, শিক্ষক বা ভাল ইংরেজি জানে এমন পরিচিত কারো সাহায্য নিন। কোনো বাক্যের অর্থ জানার জন্য google translate ব্যবহার করতে পারেন। ইংরেজি বাক্যকে বাংলায় রূপান্তরের পাশপাশি বাংলা বাক্যকে ইংরেজি বাক্যে রূপান্তরের চেষ্টা করুন। স্পোকেন ইংলিশের বিভিন্ন বই পড়তে পারেন। সেখানে অনেক translation থাকে। ইন্টারনেটের বিভিন্ন সাইট বা ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপের সহায়তা নিতে পারেন।
সর্বোপরি, একটা বিষয় মনে রাখবেন, একটা ইংরেজি বাক্য পড়ে কখনোই একবারে সম্পূর্ণ বাক্যের অর্থ নির্ণয় করতে যাবেন না। প্রথমে বাক্যের প্রতিটি শব্দের আলাদা আলাদা অর্থ নির্ণয় করুন। তারপর অর্থগুলো সাজিয়ে নিন। প্রচুর অনুশীলন করতে থাকুন। আশা করি ইংরেজি বাক্যের অর্থ বুঝতে পারবেন।
আমরা অনেকেই ইংরেজি বই পড়ি না বা ইংরেজি বই পড়তে মোটামোটিভাবে ভয় পাই। কিন্তু আপনারা এটাও জানেন বিশ্বকে জানতে হলে ইংরেজিও জানতেই হবে। আর ইংরেজি আপনাকে কতখানি এগিয়ে দিতে পারে তা অবশ্যই আমাকে বলে দিতে হবে না।
কিন্তু ইংরেজি শেখার সহজ উপায়টা কি ?? আসলে ইংরেজি শেখার সহজ কোন উপায়ই নেই। একটি ছোট শিশু পিতামাতার কাছ থেকে সর্বপ্রথম যে শব্দগুলো বেশি শোনে তাই উচ্চারন করতে শেখে।পরে সে সেগুলো ধীরে ধীরে ব্যবহার করতে শুরু করে। আস্তে আস্তে এ পদ্ধতিতেই সে দেড় থেকে দুই বছর পর একটু একটু করে কথা বলেতে শেখে।পরে আমাদের মত তুখোড় বক্তা হয়ে যায়।
প্রকৃত পক্ষে এর চেয়ে ভাষা শেখার আর কোনো ভালো পদ্ধতি পৃথিবীতে নেই। তাহলে এই পদ্ধতিতে অর্থাৎ সবচেয়ে ভালো পদ্ধতিতেই কি আমাদের ইংরেজি শেখা উচিত নয়? কিন্তু এ পদ্ধতিতে ইংরেজি শিখতে সবার প্রথমে কি করতে হবে ? আসলে এর সবচেয়ে ভালো উপায় হল যেকোন শিশুর বেড়ে ওঠা লক্ষ করুন। শিশু প্রতিনিয়ত নতুন নতুন শব্দ শুনতে থাকে এবং এর কিছু কিছু ব্যবহার করা শুরু করে। এভাবেই প্রতিনিয়ত তার জানা শব্দভান্ডার বাড়তে থাকে এবং সেই সাথে বাড়তে থাকে তার নিজের ব্যবহার করা শব্দের ভান্ডার। আর এভাবেই সে কয়েক বছরে একটি ভাষার প্রায় শতভাগই ধরতে গেলে আয়ত্ব করে পেলে।
আমাদের ইংরেজি শেখার পথে প্রধান সমস্যা হচ্ছে আমাদের ইংরেজি শব্দ ভান্ডার। আমাদের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় ইংরেজি পাঠ্য বইতে খুবই অল্প সংখ্যাক শব্দ রয়েছে যেগুলো বারবারই ঘুরে ফিরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আর এ অল্পসংখ্যক শব্দ ভান্ডারের মধ্যে আমরা সঠিকভাবে ব্যবহার করতি পারি কয়টি ? তাও একটি ভালো প্রশ্ন।
কোন শিক্ষকের পক্ষে জীবনেও আরেক জন্যকে ভাষা শিক্ষা দেয়া সম্ভব না। কোন নির্দিষ্ট বই পড়েও ভাষা শেখা যায় না। মাতৃভাষা ছাড়া অন্য সকল ভাষা শেখার ক্ষেত্রে মানুষ নিজেই নিজের সবচেয়ে বড় শিক্ষক। এক্ষেত্রে সেই অতি পরিচিত পদ্ধতি যেভাবে মাতৃভাষা শিখেছেন, সেভাবেই ইংরেজিও শিখতে হবে। না হলে এতদিন যেভাবে ব্যর্থ হয়ে এসেছেন সেভাই ইংরেজিতে ব্যর্থ হতে হবে।
ইংরেজি ভাষা শেখার ক্ষেত্রে দুটি জিনিস খুবই জরুরি। আর তা হলো যত বেশি সম্ভব ইংরেজি শুনতে হবে, শুনে যত বেশি সম্ভব ব্যবহার করতে হবে। কারন এ দুটির মাধ্যমেই শিশু মাতৃভাষা শেখে।
কিন্তু আমরা এ দুটিই করি সবচেয়ে কম। এবার কি বুঝতে পারছেন ? কেন আপনি ইংরেজি শিখতে পারছেন না।
আমরা শুধু ইংরেজি পড়ি এবং লিখি এর কোনটিই কিন্তু শিশু করে না। এগুলো করার আগেই সে ভাষা ব্যবহার করা শিখে পেলে। পরবর্তিতে বর্ণদিয়ে সেগুলো বুঝা এবং উপস্থাপন করা অর্থাৎ পড়তে ও লিখতে শিখে।
আমার ধারনা আমাদের শিশুদের মত শূণ্য থেকে ভাষা শিখা শুরু করতে হবে না। আমরা অলরেডি কিছুটা জানি এবং ইংরেজি শেখার জন্য আমাদের বেশি সময় ব্যয়ও করতে হবে না।
তবে আমি আগেও বলেছি একটা বিষয় আমাদের অবশ্যই অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে তা হল ইংরেজি শোনা এবং তা ব্যবহার করা।
তবে চোখের সামনে যত ইংরেজি শব্দ আসে তার সবগুলোরই অর্থ জানার চেষ্টা করতে পারেন।
আমি এই পদ্ধতিগুলো কাজে লাগিয়ে খুব ভালো ফলাফল পেয়েছি, এখন আমি যেকোন ইংরেজি পত্রিকাতো বটেই বেশির ইংরেজি বইও ডিকশনারি ছাড়া পড়তে এবং বুঝতে পারি। Saint Zones এ IELTS এ আমার ইংরেজি পরীক্ষা করার জন্য ভর্তি হয়েছিলাম। সেখানে শুধু পরীক্ষা নেয়া হয় এবং পরীক্ষা শেষে তার সমাধান বুঝিয়ে দেয়া হয়। আমি Writing এ গড়ে ৭(কেন যে আর বেশি দেয় না কে জানে), Listening এ গড়ে ৮ থেকে ৮.৫ এবং Reading এ ৮ এর মত করে পেয়েছি। সেখানে Speaking ক্লাস সাধারণ বেইসগুলোর জণ্য খুবই কম হয় এবং সে ক্লাসগুলোতে মাকিংও করা হয় না। আমার সাথে একজন ছিল যে একটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে English Language Teaching এ মাস্টার্স শেষ করেছিল। কিন্তু একদিনও আমার চেয়ে বেশি পায়নি। তাই বলে এই নয় আমি ইংরেজি ১০০% বুঝি, তবে ৭০ - ৮০% বুঝি এ ব্যাপারে আমি নিঃসন্দেহ। আরো অনেক শিখতে হবে।
আসুন আমরা ভাষা শেখার সবচেয় প্রাকৃতিক এবং বৈজ্ঞানীক উপায়ে ইংরেজি শিখি।কারন আমাদের দেশটাকে সামনে এগিয়ে নিতে আমাদের অবশ্যই ইংরেজি জানতে হবে। ইংরেজিটা এখন শুধু একটা ভাষাই নয় এটা আলো বায়ুর মত মহামূল্যবান একটি মহামূল্যবান ফ্রি প্রযুক্তি।
আমার মনে হয় ইংরেজির গুরুত্ব সম্পর্কে আপনারা আমার চেয়ে ভালো বলতে পারবেন। তবে কিছু কথা না বললেই নয়...
আপনি কি জানেন প্রতি বছর কত কপি বই প্রকাশিত হয় নিচের লিংকে গেলে একটা পরিষ্কার ধারনা পাবেন...
http://en.wikipedia.org/wiki/Books_published_per_country_per_year
ইংলিশ স্পীকিং দেশগুলো ছাড়াও আপনি কি জানেন ইউরোপীয়ান বা উন্নত সকল দেশের বেশিরভাগ গবেষনা বই-ই ইংরেজিতে লিখা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভাল কোন বই ইংরেজি ছাড়া অন্যভাষায় রচিত হলেও তার একটি ইংরেজি কপি বের হয়।
অর্থাৎ বিশ্বের প্রায় সকল দেশের অর্জিত জ্ঞান অর্জনের একটাই উপায় ইংলিশ জানা।
প্রতি বছর এত সংখ্যক ইংরেজি বই বের হয় যে, তাই বাংলায় অনুবাদ করাই সম্ভব নয়, শতশত বছর ধরে প্রকাশিত ইংরেজি বইগুলো বাংলায় অনুবাদের কথা দূরে থাক। অর্থাৎ ইংরেজির ইংরেজি ছাড়া সেই জ্ঞান সমুদ্র সবার জন্য নিষিদ্ধ।
ভাই আসুন আমরা সবাই সঠিক পদ্ধতিতে একটু কষ্ট হলেও ইংরেজি শিখি যাতে সারা বিশ্বের অর্জিত জ্ঞান আমাদের দেশের উন্নতিতে কাজে লাগাতে পারি। নিজের জন্য না হোক অন্তত নিজের দেশের ভালো করার জন্য হলেও ইংরেজি শিখুন। সময় যত যাচ্ছে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় আমরা প্রতিনিয়ত পিছিয়ে পড়ছি।