ছহীহ হাদীস থেকে দেখা যায় তারাবীহর ছালাত বিতর সহ১১ বা ১৩ রাক‘আত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) রামাযান মাসে বিতর সহ ১১ রাক‘আতের বেশী রাতের ছালাত (তারাবীহ) আদায় করেননি (বুখারী, মুসলিম) , রাসুল (সাঃ) আট রাকাত নামাজ ( তারাবীহ) পরে তিন রাকাআত বিতর পরতেন। অথবা ১২ রাকাতের পর ১রাকাত বিতর পড়তেন। , তাই তারাবীহ আট রাকাত অথবা ১২ রাকাত পড়া যায়।।
আহলে হাদীস সম্প্রদায় তারাবী ৮ রাকাতের পক্ষে বুখারী শরীফের হয়রত আয়েশা(রাঃ) যে সহী হাদীস প্রেস করেন তা বুখারী শরীফের "তারাবী নামাজ" অধ্যায়ে নেই তা "তাহাজুত নামাজ" অধ্যয়ে বর্ণিত | তাছাড় আয়েশা (রা) হাদিস দ্বারা কোথাও ১১,৮ রাকাত বলা হয়েছে সুতরাং এটা দ্বারা নির্দিষ্ট করে সংখ্যা বুঝানো হয় নি | এটা দ্বারা তাহাজুত নামাজ বুঝানো হয়েছে | সুতরাং ২০ রাকাত পড়তে হবে | কারণ রাসুল(সাঃ) এর সাহাবীরা ২০ রাকাত পড়েছে| আর আপনার যারা ৮ রাকাত পড়েন তাদের থেকে কি সাহাবীরা রাসুল(সাঃ) কে কম অনুসরণ করেছে বা তারা রাসুল(সাঃ) এর আদেশ না পেয়েই ২০ রাকাত পড়েছে ?
তারাবি নামায ২০ রাকাত : তারাবি নামায ২০ রাকাতের পক্ষে যুক্তি হচ্ছে, প্রখ্যাত সাহাবায়ে কেরামগণ (রা:) তারাবি নামায ২০ রাকাতের পক্ষে বর্ণনা করেছেন। আর তাঁরা হলেন, খলিফা হযরত উমর ফারুক (রা:) । তাফসিরে ইবনে কাসির প্রণেতা উল্লেখ করেছেন – রাসূল (সা:) এর চাচা √ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:), √ হযরত আবু যর গিফারী, √ হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা:), √ হযরত হাসান (রা:), √ হযরত ইয়াজিদ ইবনে রুমান (রা:), √ হযরত ইবনে আবিল হাসনা (রা:), √ হযরত আবদুল আজিজ ইবনে রুফাহ (রা:) প্রমূখ সাহাবায়ে কেরামগণ (রা:)-ও তারাবি নামায ২০ রাকাতের পক্ষে বর্ণনা করেছেন । মোল্লা আলী ক্বারী (রা:) তাঁর পূর্বের ইমামগণ হতে সংগৃহীত একটি হাদিস মিরকাত শরহে মিশকাতের ২য় খণ্ডের ১৩৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন। হাদিসটি হচ্ছে “রাসূল (সা:)-এর এরশাদ হচ্ছে, সাহাবায়ে কেরামের (রা:) ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত শরয়ী বিধান নিঃশর্তভাবে অনুসরণ করা উম্মতের জন্য আবশ্যক”। সুতরাং এরূপ ক্ষেত্রে দ্বিমত পোষণ করা ইমান নষ্ট হওয়ার জন্য যথেষ্ট। রাসূল (সা:) ২০ রাকাত তারাবি নামাজ আদায় করতেন, এ সম্পর্কিত হাদিসসমূহ হচ্ছে √ আল সুনানুল কুবরা বায়হাকীর ২য় খণ্ডের ৬৯৮ পৃষ্ঠার ৪২৮৬ নং হাদিস, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) বলেন, রাসূল (সা:) রমজান মাসে ২০ রাকাত তারাবি ও বিতির নামাজ আদায় করতেন। √ মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ-এর ২য় খণ্ডের ১৬৩ পৃষ্ঠায় ৭৬৮০ নং হাদিসে হযরত শুতাইর ইবনে শাকাল (রা:) এবং হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা:), তারীখু জুয়জান হামযাহ সাহমী (রা:) গ্রন্থের ১৩১৭ পৃষ্ঠায় ৫৫৭ নং হাদিসটিতেও একই রকম বর্ণনা রয়েছে। এ ছাড়া হযরত আবু যার গিফারী (রা:) হতে বর্ণিত সুনান তিরমিজির ৩য় খণ্ডের ১৬১ ও ১৬৯ পৃষ্ঠায় উল্লিখিত ৮০৬ নং হাদিসটিতে তিনি উল্লেখ করেন। তারাবির নামাজে রাসূল (সা:) কিয়ামুল লাইলও করতেন বলে উল্লেখ করেছেন। খোলাফায়ে রাশেদা হযরত উমর ফারুক (রা:), হযরত উসমান (রা:), হযরত আলী (রা:), ২০ রাকাত তারাবি নামাজ আদায় করতেন। আর এ সম্পর্কিত হাদিসসমূহ হলো: √ ছিয়া-ছিত্তাহ হাদিস গ্রন্থসমূহের অন্যতম আবু দাউদ শরীফ-এর ২য় খণ্ডের ১৪২৯নং পৃষ্ঠায় হযরত হাসান (রা:) বলেন, হযরত উমর খাত্তাব (রা:) সকলকে হযরত উবাই ইবনে কাআব (রা:) এর পেছনে একত্র করলেন, তখন ইবনে কাআব (রা:) তাদের ইমামতি করে ২০ রাকাত নামাজ আদায় করলেন। √ সুনানু বাইহাকীর ২য় খণ্ডের ৬৯৯ পৃষ্ঠায় উল্লিখিত ৪২৮৯ নং হাদিসে হযরত সায়ীব ইবনে ইয়াজিদ (রা.) বলেন, হযরত উসমান ইবনে আফকান (রা:) এর খিলাফতের সময়ে নামাজিরা দাঁড়ানোর কষ্টে লাঠিতে ভর দিতেন তবুও ২০ রাকাত তারাবির নামাজ কম পড়তেন না। √ মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাইর ২য় খণ্ডের ১৬৩ পৃষ্ঠায় উল্লিখিত ৭৬৮১ নং হাদিসে হযরত ইবনে আবিল হাসনা (রা:) বলেন, হযরত আলী (রা:) এক ব্যক্তিকে নির্দেশ দিলেন রমজানে ২০ রাকাত তারাবির নামাজ পড়তে। এ প্রসঙ্গে আরো হাদীস: ২- জামে তিরমিযী, হাদীস নং ৮০৬। ৩- মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৭৬৮০, ৭৬৮১, ৭৬৮২, ৭৬৮৩, ৭৬৮৪, ৭৬৮৫। ৪- সুনানে কুবরা লিল বায়হাকী, হাদীস নং ৪২৯০, ৪২৯১, ৪২৯২। ৫- মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীস নং ৭৭৩৩। ৬- আল-মু’জামুল কাবীর লিত- তাবারানী, হাদীস নং ১২১০২। ৭- আল-মু’জামুল আওসাত লিত-তাবারানী, হাদীস নং ৭৯৮। ৮- কিতাবুল উম্ম ১/১৬৭। এ ছাড়াও আরো অসংখ্য দলীল রয়েছে। সংক্ষেপে অল্প কিছু সংখ্যক দলীল উল্লেখ করা হলো। [বি: দ্র: হাদীস নাম্বার ও রেফারেন্সের ক্ষেত্রে “মাকতাবায়ে শামিলা” অনুসরণ করা হয়েছে।]