আমার রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে গেছে যার কারণে আমার রক্তশুন্যতা দেখা দিয়েছে।আমি নিজেকে অনেক দুর্বল অনুভব করি ।এখন হিমোগ্লোবিনের সংখ্যা বাড়াতে আমি কি করবো?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

রক্তে যখন হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায়, তখন সে অবস্থাকে আমরা রক্তস্বল্পতা বলে থাকি।

আমাদের দেশে রক্তস্বল্পতা   প্রধানত আয়রনের অভাবের কারণেই হয়ে থাকে। সাধারনত গর্ভবতী মহিলা এবং বাড়ন্ত বয়সের শিশুদের আয়রনের ঘাটতি বেশি হয়। কারণ এ সকল অবস্থায় শরীরে আয়রনের চাহিদা বেড়ে যায়। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে আক্রান্ত থাকার ফলে আয়রনের ঘাটতি হয়ে থাকে এবং আয়রন স্বল্পতার কারণেই তাদের শরীরে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।

মূলত হিমোগ্লোবিন লেভেল দেখেই অ্যানিমিয়া শনাক্তকরণ করা হয়ে থাকে। মহিলাদের ক্ষেত্রে নরমাল হিমোগ্লোবিন লেভেল ১১ থেকে ১৫ এর মধ্যে থাকে। যদি হিমোগ্লোবিন লেভেল ১১ এর চেয়ে কম থাকলে আমরা ধরে নিই যে রোগী অ্যানিমিয়াতে আক্রান্ত। পুরুষের ক্ষেত্রে নরমাল হিমোগ্লোবিন লেভেল ১২ থেকে ১৫ পর্যন্ত ধরা হয়ে থাকে। যদি হিমোগ্লোবিন লেভেল ১২ এর চেয়ে কম থাকলে আমরা ধরে নিই যে রোগী অ্যানিমিয়াতে আক্রান্ত।


আমাদের দেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় অপুষ্টির অভাবে। আমাদের দেশে রক্তস্বল্পতায় আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগী হলো মহিলা এবং বাড়ন্ত বয়সের ছেলেমেয়েরা। তাই তাদের অপুষ্টি প্রতিরোধ করতে নিউট্রিশনাল সাপ্লিমেন্ট ও আয়রন দেয়া যেতে পারে।

সাধারণত রক্তস্বল্পতার কারণ শনাক্ত করে সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়। যাদের শরীরে আয়রন এর অভাব আছে, তাদের আয়রন সাপ্লিমেন্ট দেয়া হয়। আর যাদের ভিটামিন বি-১২ কম তাদের বি-১২ সাপ্লিমেন্ট দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। কিন্তু বেশি রক্তস্বল্পতা দেখা দিলে তাদের ক্ষেত্রে ব্লাড ট্রান্সফিউশনের ব্যবস্থা করা হয়। অ্যানিমিয়া আমাদের দেশে কিডনি রোগীদের জন্য এক নম্বর বেসিক সমস্যা। রক্ত তৈরি করার একটা উপাদান হলো ইরাইথ্রোপয়েটিন। ইরাইথ্রোপয়েটিনের অভাব জনিত কারণে কিডনি রোগীর রক্তস্বল্পতা হয়। এছাড়া তাদের ডায়ালাইসিস করার কারণে ব্লাড লসও বেশি হয়। এসব কারণে কিডনি রোগীদের রক্তস্বল্পতা বেশি হয়। যদিও অনেক কারণে রক্তস্বল্পতা হয়, তার মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হলো আয়রনের অভাব। শরীরে আয়রনের শোষণ কমে গেলে সাধারণত এ সমস্যা হয়ে থাকে। আর যাদের খাওয়ার রুচি কম থাকে তাদের নিউট্রিশনাল ঘাটতি থাকে। এ থেকেও রক্তস্বল্পতা হয়ে থাকে। এদের ক্ষেত্রে আমরা তাদের আয়রন লেভেল ঠিক আছে কিনা তা দেখে থাকি। যাদের আয়রন কম আছে তাদের প্যারেনটেরাল বা ইনজেকশনের মাধ্যমে আয়রণ সাপ্লিমেন্ট দিয়ে আয়রনের অভাব পূরণ করে থাকি। তারপরও যদি আয়রনের অভাব পূরণ না হয় তাহলে আমরা ইরাইথ্রোপয়েটিন দিয়ে থাকি।

সুত্র:-সপ্তাহের বাংলাদেশ (সাপ্তাহিক)
ডা. রতন দাশগুপ্ত
এমবিবিএস, এফসিপিএস (মেডিসিন)
এমডি (নেফ্রোলজি)
মেডিসিন ও কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ
সহকারী অধ্যাপক, নেফ্রোলজি বিভাগ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
মোবাইল ফোন : ০১৭১১-১০১৮৯২
চেম্বার

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ