শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

সামাজিক সমস্যা হলো এমন একটি নেতিবাচক ঘটনা যা সমাজে বসবাসকারী মানুষকে স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাঁধা সৃষ্টি করে । 

যৌতুক বা পণ হল কন্যার বিবাহে পিতামাতার সম্পত্তির হস্তান্তর প্রক্রিয়া। ‘যু’ ধাতু থেকে নিষ্পন্ন ‘যুত’ শব্দের অর্থ যুক্ত; বুৎপত্তিগত অর্থ হলো, পাত্র-পাত্রীর যুক্ত হওয়ার সময়ে অর্থাৎ বিয়ের সময় পাত্রীর জন্য যা কিছু মূল্যবান সামগ্রী দেয়া হয়, তা যৌতুক।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

যৌতুক নিরোধ আইনে যৌতুকের কোন স্পষ্ট সংজ্ঞা প্রদান করা হয়নি। উক্ত আইনের ২ ধারাটি ব্যাখ্যা করলে যৌতুক শব্দটির সাথে সম্পর্ক যুক্ত কতিপয় সক্রিয় উপাদানের উপস্থিতি দেখা যায়। উক্ত ধারা মোতাবেক যৌতুক হতে হলে পক্ষগণ দ্বারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে বিবাহের প্রতিদান স্বরূপ যেকোন সম্পত্তি বা মুল্যবান জামানত প্রদান করা বা প্রদানে সম্মত হওয়াকে যৌতুক বলা হয়েছে। উক্ত আইনে বিবাহের প্রতিদান হিসাবে টাকা দাবী করলে ঐ টাকা যৌতুকের আওতায় পড়বে কিনা সে সম্বন্দে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। যৌতুক নিরোধ আইন ১৯৮০, এর ২ ধারায় যৌতুকের সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে।

ধারা ২) সংজ্ঞা।– বিষয় বস্তু বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী না হলে এই আইনে যৌতুক বলতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে প্রদত্ত যে কোন সম্পত্তি বা মুল্যবান জামানত কে বুঝাবে,যা-
ক) বিবাহের এক পক্ষ অপর পক্ষকে বা
খ) বিবাহের কোন এক পক্ষের পিতা মাতা বা অন্য কোন ব্যাক্তি কর্তৃক বিবাহের যে কোন পক্ষকে বা অন্য কোন ব্যক্তিকে-
বিবাহ মজলিশে বা বিবাহের পুর্বে বা পরে বিবাহের পনরুপে প্রদান করে বা প্রদানে সম্মত হয়।তবে দেনমোহর যৌতুকের অন্তর্ভুক্ত হবে না।

ব্যাখ্যা ১) বিবাহের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত নয় এমন কোন ব্যক্তি বর বা কনে যে কোন পক্ষকে পাঁচশত টাকার কম মুল্যের কোন সামগ্রী উপহার হিসাবে প্রদান করলে তা যৌতুক হবেনা।

(অতএব, বিবাহের দাওয়াত খেতে গেলে ৫০০ টাকার কম মুল্যের উপহার নিতে হবে।)

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০, এর ২(ঞ) ধারায় যৌতুকের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে যে,

(অ) কোন বিবাহের বর বা বরের পিতা বা মাতা বা প্রত্যক্ষভাবে বিবাহের সাথে জড়িত বর পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক উক্ত বিবাহের সময় বা পুর্বে বা বৈবাহিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাকালে, বিবাহ স্থির থাকার শর্তে, বিবাহের পণ হিসাবে কনে পক্ষের নিকট দাবীকৃত অর্থ, সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ; অথবা

(আ) কোন বিবাহের কনে পক্ষ কর্তৃক বিবাহের বর বা বরের পিতা বা মাতা বা প্রত্যক্ষভাবে বিবাহের সাথে জড়িত বর পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তিকে উক্ত বিবাহের সময় বা তত্পূর্বে বা বৈবাহিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাকালে, বিবাহ স্থির থাকার শর্তে, বিবাহের পণ হিসাবে প্রদত্ত বা প্রদানে সম্মত অর্থ, সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ সমূহ কে যৌতুক বলা হবে।
অর্থাৎ বিবাহ স্থির থাকার শর্তে কনে পক্ষের নিকট বর বা বর পক্ষের লোকজন নগদ টাকা বা অন্য কোন সম্পত্তি বা কোন রুপ সুযোগ সুবিধা যদি চায় তাহলে তা যৌতুকের অন্তর্ভুক্ত হবে। এই চাওয়া পাওয়া বিবাহের পুর্বে বা বিবাহের সময় বা বিবাহের পরে যেকোন সময় হতে পারে।
যৌতুক শব্দটি একটি ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ। যৌতুক সম্পর্কে আমরা বলতে পারি যে, বিবাহের সময় বা বিবাহের পুর্বে বা পরে বিবাহ স্থির থাকার শর্তে বরের পক্ষের লোকজন বা বর কর্তৃক, কনে পক্ষের লোকজন, আত্নীয়স্বজন বা কনের নিকট দাবীকৃত যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে প্রদেয় বা প্রদান করতে সম্মত হওয়া সম্পত্তি বা মুল্যবান জামানতকে বুঝায়।

বিবাহ উত্তর যে কোন সময় ও কনে পক্ষের নিকট টাকা বা মুল্যবান জামানত দাবী করা হলে তা বিবাহের প্রতিদান স্বরূপ দাবী করার সামিল হবে। তাছাড়া বিবাহের পর শ্বশুরের খরচে জামাই কে বিদ্যা শিক্ষা দেওয়া কিংবা বিদেশে পাঠানো বা দেশে চাকুরি প্রদান করা ও যৌতুকের অন্তর্ভুক্ত। যৌতুক কেবল নগদ অর্থ, গাড়ি, বাড়ী ইত্যাদির মধ্যে সীমিত নয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ