আপনি ওয়েবসাইট কিনবেন ঠিকাছে, এজন্য আপনি যোগাযোগ করেন Facebook Messenger
আজকের বিজয় দিবস এল এক অভূতপূর্ব সন্ধিক্ষণে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার রূপকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ চলছে। এরই মধ্যে আগমনী শোনা যাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তীর। নেতার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আর দূরদৃষ্টি এবং জনতার স্বপ্ন আর আত্মনিবেদন একাকার হয়ে মিশে গেলে কী বিস্ময়কর ইতিহাস জন্ম নিতে পারে, তার আশ্চর্য স্বাক্ষর মুক্তিযুদ্ধ আর তার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয়।
মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে বড় অবদান, পূর্ববঙ্গের জনগোষ্ঠীকে এটি দিয়েছে তার নিজের রাষ্ট্র; এমন এক সার্বভৌম রাষ্ট্র, যার কর্তৃত্ব অন্য কারও নয়, কেবলই এর নাগরিকদের হাতে। একে এর নাগরিকেরা নিজেদের স্বপ্নে গড়ে তুলবে, নিজের নেতৃত্বে সামনে এগিয়ে নেবে, এই রাষ্ট্রের মধ্যে স্বাধীনভাবে নিজেদের আকাঙ্ক্ষা ও বিকাশের চর্চা করবে।
কার্যত পাকিস্তানের উপনিবেশ থেকে স্বাধীন বাংলাদেশ পর্যন্ত জাতির যে উত্তাল ও রক্তমাখা অভিযাত্রা, সেখানে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ছিল তুলনাহীন। জাতিকে তিনি ধীরে ধীরে একাত্ম করেছেন, তাদের মধ্যে ক্রমশ স্বাধীনতার স্পৃহা জাগিয়েছেন, বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনতে উন্মুখ করে তুলেছেন। ছয় দফা, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, উনসত্তরে গণ-অভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন এবং সবশেষে ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে তিনি জাতিকে সঙ্গে নিয়ে ধাপে ধাপে চূড়ান্ত অর্জনের দিকে এগিয়েছেন। এর জন্য বহুবার কারাবরণ করেছেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধের পরে আমরা পেয়েছিলাম যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আমাদের অবকাঠামো ধ্বংস করে দিয়ে গিয়েছিল। মুক্ত দেশে আমাদের চাহিদা ছিল বিপুল, সম্পদ সামান্য। বঙ্গবন্ধুকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত দেশটিকে পুনরুদ্ধারের যজ্ঞে নামতে হয়। সেই বাংলাদেশ কোত্থেকে আজ কোথায় এসেছে! মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছরের প্রাক্কালে পেছনে ফিরে তাকালে এর অসামান্য অর্জনগুলো গর্বে আমাদের মাথা উঁচু করে দেয়। স্বাধীন একটি রাষ্ট্র পেয়েছিলাম বলেই তা আমরা সম্ভবপর করতে পেরেছি।