ঈদে মিলাদুন নবী পালন করা কি যায়েজ আর ঈদে মিলাদুন নবী কিভাবে পালন করবো আজ কে দিনে  কি করলো ভালো হবে    
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

ঈদে মিলাদুন্নবী(সাঃ) একটি স্পষ্ট বিদআত। এ কাজ রাসুল(সাঃ-), সাহাবায়ে আকরাম (রাঃ), তাবিঈ বা তাবে তাবেঈনগণ কেউই করেননি। 

হিজরী ৪র্থ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে মিলাদুন্নবীর প্রচলন শুরু হয়। রাসূল(সা), আলী(রা), ফাতেমা(রা), হাসান ও হুসাইন(রা) এর জন্মদিন, এসবের মূল প্রর্বতক ছিল খলীফা আল মুয়িজ্জু লি-দীনিল্লাহ। এখানে উল্লেখ্য যে, মিশরের এইসব অনুষ্ঠানাদি তখনো মুসলিম বিশ্বের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়েনি। পরবর্তীতে যিনি ঈদে মিলাদুন্নবীকে মুসলিমবিশ্বের অন্যতম উৎসব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন, তিনি হলেন, ইরাক অঞ্চলের ইরবিল প্রদেশের আবু সাঈদ কুকবুরী । সে হিসেবে জানা যায়, ৭ম হিজরী থেকে আনুষ্ঠানিক মিলাদ উদযাপন শুরু হয়। মিলাদের উপর সর্বপ্রথম গ্রন্থ রচনা করে আবুল খাত্তাব ওমর ইবনে হাসান ইবনে দেহিয়া আল কালবী ।(উইকিপিডিয়া) 

সাওয়াবের নিয়তে এ দিন পালন করা বিদআত। রাসুল (সাঃ) বলেন,

عَنْ أَبِي نَجيحٍ العِرباضِ بنِ سَارِيَةَ قَالَ : وَعَظَنَا رسولُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم مَوعظةً بَليغَةً وَجِلَتْ مِنْهَا القُلُوبُ، وَذَرَفَتْ مِنْهَا العُيُونُ، فَقُلْنَا: يَا رَسُولَ اللهِ، كَأَنَّهَا مَوْعِظَةُ مُوَدِّعٍ فَأوْصِنَا، قَالَ أُوصِيكُمْ بِتَقْوَى اللهِ وَالسَّمْعِ وَالطَّاعَةِ وَإنْ تَأمَّر عَلَيْكُمْ عَبْدٌ حَبَشِيٌّ وَإِنَّهُ مَنْ يَعِشْ مِنْكُمْ فَسَيَرَى اختِلافاً كَثيراً فَعَليْكُمْ بسُنَّتِي وسُنَّةِ الخُلَفاءِ الرَّاشِدِينَ المَهْدِيِيِّنَ عَضُّوا عَلَيْهَا بالنَّواجِذِ وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الأُمُورِ ؛ فإنَّ كلَّ بدعة ضلالةرواه أَبُو داود والترمذي وَقالَحديث حَسَنٌ صَحِيْحٌ


আবূ নাজীহ ইরবায ইবনে সারিয়াহ (রাঃ)


তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে এমন মর্মস্পর্শী বক্তৃতা শুনালেন যে, তাতে অন্তর ভীত হল এবং চোখ দিয়ে অশ্রু বয়ে গেল। সুতরাং আমরা বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! এ যেন বিদায়ী ভাষণ মনে হচ্ছে। তাই আপনি আমাদেরকে অন্তিম উপদেশ দিন।’ তিনি বললেন, “আমি তোমাদেরকে আল্লাহভীতি এবং (রাষ্ট্রনেতার) কথা শোনার ও তার আনুগত্য করার উপদেশ দিচ্ছি; যদিও তোমাদের উপর কোন নিগ্রো (আফ্রিকার কৃষ্ণকায় অধিবাসী) রাষ্ট্রনেতা হয়। (স্মরণ রাখ) তোমাদের মধ্যে যে আমার পর জীবিত থাকবে, সে অনেক মতভেদ বা অনৈক্য দেখবে। সুতরাং তোমরা আমার সুন্নাত ও সুপথপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদ্বীনের রীতিকে আঁকড়ে ধরবে এবং তা দাঁত দিয়ে মজবূত করে ধরে থাকবে। আর তোমরা দ্বীনে নব উদ্ভাবিত কর্মসমূহ (বিদআত) থেকে বেঁচে থাকবে। কারণ, প্রত্যেক বিদআতই ভ্রষ্টতা। আর প্রত্যেক পথভ্রষ্টতা জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়।” (আবু দাঊদ ৪৬০৯, তিরমিযী ২৬৭৬, ইবনে মাজাহ ৪২)


হাদিস সম্ভার, হাদিস নং ১৪৮৬

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

অতএব, একজন মুসলিম হিসেবে এ ঈদ বর্জন করা মুসলিম উম্মাহের জন্য আবশ্যক। 

এখন প্রশ্ন, রাসুল(সাঃ) এর জন্মের দিনে আমরা কি করব? 

বর্তমানে রাসুল(সাঃ) এর জন্মোৎসব এর নামে যেভাবে মিষ্টি বিতরণ, বিরানি খাওয়া আর ভণ্ডামি চলছে, রাসুল(সাঃ) এর যামানায় রাসুল(সাঃ) এর উলটো কাজ করতেন। 

أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُثْمَانَ بْنِ أَبِي صَفْوَانَ الثَّقَفِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ الْحُرِّ بْنِ الصَّيَّاحِ، عَنْ هُنَيْدَةَ بْنِ خَالِدٍ، عَنْ امْرَأَتِهِ، عَنْ بَعْضِ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَتْ: «كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصُومُ الْعَشْرَ، وَثَلَاثَةَ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ الِاثْنَيْنِ وَالْخَمِيسَ»

---

[حكم الألباني] صحيح بلفظ الخميسين


মুহাম্মদ ইব্‌ন উসমান (রহঃ)


নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন স্ত্রী থেকে বর্ণিত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক মাসের তিন দিন সাওম (রোযা) পালন করতেন-সোমবার (দুই-সোমবার) এবং বৃহস্পতিবার।


সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ২৪১৮

হাদিসের মান: সহীহ হাদিস। 


রাসুল(সাঃ-) কে যখন সোমবারের রোজা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো, তিনি বললেন,

عَنْ أَبي قَتَادَةَ   أَنَّ رَسُولَ اللهِ  صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم  سُئِلَ عَنْ صَومِ يَوْمِ الاِثْنَيْنِ فَقَالَ ذَلِكَ يَومٌ وُلِدْتُ فِيهِ وَيَومٌ بُعِثْتُ أَوْ أُنْزِلَ عَلَيَّ فِيهِرواه مسلم


আবূ কাতাদাহ (রাঃ)


রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে সোমবার দিনে সিয়াম রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, “ওটি এমন একটি দিন, যেদিন আমার জন্ম হয়েছে, যেদিন আমি (নবীরূপে) প্রেরিত হয়েছি অথবা ঐ দিনে আমার প্রতি (সর্বপ্রথম) ‘অহী’ অবতীর্ণ করা হয়েছে।” (মুসলিম ২৮০৪)


সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ১০৮৯

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

অতএব, আপনি যদি প্রকৃতই রাসুল(সাঃ) এর আশেক হয়ে থাকেন, তবে বিরানী খাওয়ার বদলে এ দিনে আপনার উচিত ছিল রোযা রাখা। এখন আপনিই বিচার করুন, আপনি হকের সাথে আছেন, না ভণ্ডদের সাথে আছেন।


ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ