ইসলাম জন্মনিয়ন্ত্রণ এ বলছে যদি কেও অসুস্থ হয় তবে করতে পারবে,, আবার এমনি তেই করা যাবে না। কিন্তু যখন অনেক সন্তান হবে,তখন যদি তারা মা বাবা কে দোষারোপ করে,যে তাদের চাহিদা মিটাতে পারছে না, তাদের ভালো ভাবে মানুষ করতে পারছে না,এতে কি হবে? মানে জন্ম নিয়ন্ত্রন তো নিষেধ নায়, কিন্তু কেও যদি তাদের সন্তান দের ভালো মানুষ করতে চায়, তাদের ভালো পথে রাখতে চায়,আবার তার সন্তান যদি তাদের দোষ না দেয়,এই জন্য যদি অস্থায়ী ব্যাবস্থা নেয়,তাহলে ইসলাম কি বলে?          
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

ভাই আপনার প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি যথাসাধ্য আপনাকে প্রশ্নটির উত্তর দেয়ার জন্য চেষ্টা করব। 

 মূলত ইসলাম জন্ম নিয়ন্ত্রণ না করার প্রতি অর্থাৎ সন্তান-সন্ততি বাড়ানোর প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছে। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মতের মাঝে যার সন্তান-সন্ততি বেশি হবে কেয়ামতের ময়দানে তিনি তার সুফারিশ করবেন। 

 যদি পারিবারিকভাবে কোন সমস্যা থাকে এবং সন্তান-সন্ততি লালন-পালনের সামর্থ্য না থাকে । তাহলে নেওয়া জায়েজ নেই। কারণ সন্তান সন্ততির জন্য তাদের নির্ধারিত অধিকার দেয়ার সামর্থ্য থাকতে হবে। সামর্থ্য থাকার পরই কেবল জায়েজ হবে অন্যথায় নয়। 

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call
  • লিখা বড় হলেও সম্পূর্ণ পড়ার আহবান জানাচ্ছি। 
  • মৌলিকভাবে এর তিনটি পদ্ধতি রয়েছে—

  • এক. স্থায়ী পদ্ধতি–যার দ্বারা নারী বা পুরুষ প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।এই পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ অবৈধ। আল্লামা বদরুদ্দিন আইনী (র.) বুখারী শরীফের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেন: و هو محرم بالاتفاق অথাৎ স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন সর্বসম্মতক্রমে হারাম।(উমদাতুল ক্বারীঃ ১৪/১৪ পৃঃ)

  • দুই.অস্থায়ী পদ্ধতি– যার ফলে স্বামী-স্ত্রীর কেউ প্রজনন ক্ষমতাহীন হয়ে যায় না। যেমন : আযল করা (সহবাসের চরম পুলকের মুহুর্তে স্ত্রীর যোনীর বাহিরে বীর্যপাত ঘটানো), Condom Jelly, Cream, Foam, Douche ইত্যাদি ব্যবহার করা, পিল (Pill) খাওয়া,জরায়ুর মুখ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া, ইঞ্জেকশন নেয়া ইত্যাদি। এ পদ্ধতি কেবল নিম্মোক্ত ক্ষেত্রে বৈধ হবে।

  • —দুই বাচ্চার জন্মের মাঝে কিছু সময় বিরতি দেওয়া যাতে প্রথম সন্তানের লালন-পালন, পরিচর্যা ঠিকমত হয়।

  • — কোন কারণে মহিলার বাচ্চা লালন-পালনের সামর্থ না থাকলে।

  • —মহিলা অসুস্থ ও দূর্বল হওয়ার কারণে গর্ভধারণ বিপদজনক হলে।

  • عن جابر قال كنا نعزل على عهد النبي صلى الله عليه و سلم ـ صحيح البخاري – (2 / 784)، باب العزل

  • হযরত জাবের রা. থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে আযল(যা জন্ম নিয়ন্ত্রণের একটা পুরনো ও অস্থায়ী পদ্ধতি) করতাম। (বুখারী ২/৭৮৪)

  • তিন. গর্ভপাত ঘটানো(Abortion)।এটি জন্মনিয়ন্ত্রণের বহু পুরাতন একটি পদ্ধতি। জন্মনিয়ন্ত্রণের (Contraceptives) উপায়-উপাদানের অনেক উন্নতি সত্ত্বেও আজ অবধি দুনিয়ার বিভিন্ন স্থানে এপদ্ধতিও চালু আছে। এ পদ্ধতিও নাজায়েয। তবে যদি মহিলা অত্যাধিক দুর্বল হয়, যার কারণে গর্ভধারণ তার জন্য আশঙ্কাজনক হয় এবং গর্ভধারণের মেয়াদ চার মাসের কম হয়। তাহলে গর্ভপাত বৈধ হবে। মেয়াদ চার মাসের অধিক হলে কোনোভাবেই বৈধ হবেনা। আল্লামা ইবনে তাইমিয়া বলেন,উম্মতে মুসলিমার সকল ফুকাহা এ ব্যাপারে একমত, (রূহ আসার পর) গর্ভপাত করা সম্পূর্ণ নাজায়েজ ও হারাম। কারণ এটা الوأد (সূক্ষ সমাহিত) এর অন্তরভুক্ত; যে ব্যপারে আল্লাহ তাআলা বলেন, وَإِذَا الْمَوْءُودَةُ سُئِلَتْ – بِأَيِّ ذَنْبٍ قُتِلَتْ যখন(কেয়ামতের দিন) জীবন্ত প্রোথিত কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে,কোন অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে…….’ (তাকবীর ৮-৯)।ফিকহী মাসায়েল সূত্রে ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া ৪/২১৭ফাতাওয়া দারুল ইফতা; মিশর। তাং-১১ই ফেব্রুয়ারী ১৯৭৯ ইং)

  • উক্ত আলোচনা থেকে আশা করি এটা পরিস্কার হয়েছে যে, ইসলাম জন্মনিয়ন্ত্রণের সকল পদ্ধতি নয়;বরং বিশষ পদ্ধতির এবং সাধারণ অবস্থাতে নয়; বরং বিশেষ অবস্থাতে এর অনুমোদন দেয়। 
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ