আমার ঘন ঘন প্রসাব হয় আর প্রসাবের পর মাঝে মাঝে জ্বালা পোড়া করে।প্রসাব করতে বসলে প্রসাব শেষ করার পর যখন ওঠি তখন আবার মনে হয় আমার লিঙ্গের মাথায় প্রসাব এসে টগবগ টগবগ করছে। আবার প্রসাব করতে মনে চায়। আবার রাতের বেলা মাঝে মাঝে ঘুমানো অবস্থায় জ্বলা শুরু করে তখনি প্রসাব করলে আরো বেশি জ্বলে। সব সময় আমার লিঙ্গের মাথায় প্রসাব এসে টগবগ টগবগ করে।এই অবস্থায় আমি কি করতে পারি ডাক্তার দেখাইয়া  Antibiotic tabler খাইছিলাম কিন্তু কমে নাই। আমি আবার হস্ত মৈথন করতাম। আমার সমস্যা প্রায় ২-৩ মাস যাবত। আগে হস্ত মৈথন করার পর জ্বালা পোড়া করতে না কিন্তু প্রসাব ঘন ঘন আসতো আর টগবগ টগবগ করতো। এখন হস্ত মৈথন করা বাদ দিসি কিন্তু ঘন ঘন প্রসাব  আর প্রসাবের পর জ্বালা পোড়া করতেই আছে। এই অবস্থায় আমি কি করতে পারি,  আমাকে কেউ পরার্মস দেন। আমি  আপনাদের সবার প্রতি কৃতঞ থাকবো। ধন্যবাদ
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Sakib Ahmed

Call

ঘন ঘন প্রস্রাবের কারণ - শরীরে মূত্র তৈরি এবং দেহ থেকে তা নিঃসরণের জন্য যে অঙ্গসমূহ কাজ করে সেগুলোতে কোনো কারণে ইনফেকশন দেখা দিলে তাকে ইউনারি ট্রেক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই বা UTI) বলে। আজকাল মেয়েদের মধ্যে এ অসুখটির প্রকোপ দেখা যাচ্ছে খুব বেশি। তবে একটু সতর্ক হলে এ রোগ থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি।

মূত্র নালীর সংক্রামন বা ইউটিআই রোগের কারণ:

** বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়া (৯৫% ) এবং কিছু ক্ষেত্রে ফাঙ্গাস,প্রোটিয়াস,কেবসিয়েলা,সিউডোমনাস অন্যতম।

** এ ছাড়া অনেকের এলার্জি জনিত কারনেও হতে পারে (সাময়িক হতে দেখা যায়)

** দীর্ঘসময় মূত্রতন্ত্রে জীবাণু অবস্থান করলেই UTI এর লক্ষণ গুলো দেখা যায়।

** মূত্রনালীর সক্রমন খুব বেশী হয় মেয়েদের। কারণ মেয়েদের মূত্রনালীর দৈর্ঘ্য ছোট,মেয়েদের মূত্রনালীর দৈর্ঘ্য মাত্র ১.৫ ইঞ্চি, অথচ ছেলেদের ৮ ইঞ্চি।

** মেয়েদের মূত্রদ্বার ও যোনিপথ খুব কাছাকাছি, মাসিক ঋতুস্রাবের সময় অনেক মেয়েরা ময়লা, ছেরা ও নোংরা জাতীয় কাপড় ব্যবহার করেন, এতে জীবানু প্রথমে যোনিপথে ও পরে সংলগ্ন মূত্রনালীকে সংক্রমিত করে

** মেয়েদের প্রস্রাব না করে আটকে রাখার প্রবণতা বেশি, তাই প্রস্রাবে সংক্রমন হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।

** যারা জল কম পান করেন

**ডায়াবেটিস আছে যাদের

** প্রস্টেট গ্রন্থি বড় হলে

** ষাটের বেশি বয়স হলে, যাদের রোগ অথবা প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের বেলায়।

লক্ষণসমূহ:

১) ঘন ঘন প্রস্রাব

২) প্রস্রাবের প্রচণ্ড চাপ অনুভব

৩) প্রস্রাবের সময় ব্যাথা, জ্বালাপোড়া ও অসহ্য অনুভূতি

৪) তল পেটে স্বাভাবিকভাবে অথবা চাপ দিলে ব্যাথা অনুভব

৫) ঘন ফেনার মত অথবা দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব

৬) জ্বর-কাঁপুনিসহ অথবা কাঁপুনি ছাড়া

৭) বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া

৮) কোমরের পাশের দিকে অথবা পিছনে মাঝামাঝি অংশে ব্যাথা

৯) প্রস্রাবের চাপে রাতে বার বার ঘুম ভেঙ্গে যাওয়া।

চিকিত্‍সা/ঘন ঘন প্রসাব থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়

* ড্রাগ থেরাপি হিসাবে চিকিত্‍সকরা নিম্ন লিখিত গ্রুপের ঔষধ সমুহ ব্যাবহার করে থাকেন, সেফালোস্পরিন, লিভোফক্সাসিন, গ্যাটিফক্সাসিন ইত্যাদি - খুবই ভাল যা ৯৬% কার্যকর ব্যাক্টেরিয়া জনিত কারনে হলে।

*অন্যদিকে ফাংগাসের কারনে হলে এন্টি ফাংগাল ড্রাগস দিয়ে থাকেন সেই সাথে চুলকানি থাকলে তা রোধ করার জন্য এন্টি ফাংগাল বা করটিকস্টারয়েড জাতীয় ক্রিম ও দেওয়া হয় বাহিরের চুলকানি দূর করার জন্য এবং বেশি বেথা থাকলে নিউরোস্পাস্মটিক ঔষধ বেশ আরাম দায়ক। পুনরাবৃত্তি সংক্রমণ না হওয়ার জন্য একি সাথে সহবাস সঙ্গীকে প্রতিষেধক এন্টিবায়োটিক দেওয়া উচিত্‍।

হারবাল: যেহেতু ইহা ব্যাক্টেরিয়ার আক্রমণে হয়ে থাকে তাই ব্যাক্টেরিয়া ধ্বংস কারি এন্টবায়োটিক ছাড়া এখন ও অন্য কিছু নাই, তবে সাপ্লিমেন্টারী হিসাবে WHO কৃতক অনুমদিত এবং সর্বশেষ রিসার্চ অনুসারে নিম্নের দুটি ঔষধ ভাল ফল দায়ক

- ( Cranberry 750mg Extract Super Strength ট্যাবলেট , যা দিনে তিনটি পর্যন্ত খেতে হবে - কেনবারি জুস খুভি ফল দায়ক যা দিনে ৩/৪ কাপ খেলে উপকৃত হবেন , তবে যাদের এলার্জি আছে তাদের জন্য নিষেধ।

অথবা ট্যাবলেট Bromelain 80 mg দিনে দুবার খেতে পারেন, তবে ইহা শিশুদের জন্য নিষেধ - (বারমুলিন মুলত আনারস কে বলা হয়েছে - অর্থাত্‍ আনারসের সিরাপ দিনে ২/৩ বার খেলে ভাল উপকার পাওায়া যাবে)

সঠিক চিকিত্‍সা হলে সাধারণত UTI ২-৩ দিনেই ভাল হয়ে যায়। তবে যাদের UTI কমপ্লিকেটেড (যাদের বার বার UTI হয়, যাদের Sexual অভ্যাস স্বাভাবিক নয়, সাথে ডায়াবেটিস বা অন্যান্য অসুখের উপস্থিতি যেগুলোতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় ইত্যাদি কমপ্লিকেটেড UTI) সেটা ভাল হতে ১-২ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। দরকার হলে শিরা পথেও এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে অনেক সময় হাসপাতালে ভর্তিও থাকতে হয়। মনে রাখবেন রোগের লক্ষণ উপশম হওয়া মানেই রোগমুক্তি নয়, চিকিত্‍সক যতদিন চিকিত্‍সা চালাতে বলবেন ততদিন চিকিত্‍সা চালিয়ে যেতে হবে। কমপ্লিকেটেড UTI তে সাধারনত ৩-৪ সপ্তাহ অসুধ খেতে হয়।

সতর্কতা: কোন ওষুধই রেজিস্টার্ড চিকিত্‍সকের পরামর্শ ব্যাতিত সেবন করা নিষেধ।

প্রতিরোধ

যে কোন অসুখে প্রতিরোধই সর্বোত্‍কৃষ্ট চিকিত্‍সা। জেনে নিন এই অসুখ প্রতিরোধের কিছু টিপস-

১) দিনে বার বার জল ও অন্যান্য তরল যেমন ফ্রুট জুস, ডাবের জল ইত্যাদি খাওয়া। জল ও অন্যান্য তরল জীবাণুর সংক্রামণ ও বৃদ্ধি প্রতিহত করে মূত্রতন্ত্রকে পরিষ্কার রাখে।

২) বাথরুম ব্যবহারের পরে টয়লেট টিস্যু পিছন থেকে সামনের দিকে না এনে সামনে থেকে পিছনের দিকে ব্যবহার করা- যাতে মলদ্বারের জীবাণু মূত্র পথে এসে সংক্রমণ করতে না পারে।

৩) যৌন সহবাসের আগে ও পরে অবশ্যই প্রস্রাব করা-যাতে মূত্র নালীতে আগত সকল জীবাণু পরিষ্কার হয়। অনেকের সহবাসের পরই UTI শুরু হয়। সেক্ষেত্রে চিকিত্‍সকের পরামর্শ অনুযায়ী UTI প্রতিরোধক এন্টিবায়োটিক সহবাসের পর নেয়া যেতে পারে।

তাই উল্লেখিত লক্ষণগুলো দেখলেই চিকিত্‍সকের শরণাপন্ন হোন। এক্ষেত্রে একজন ইউরোলজিস্ট আপনার জন্য সর্বোত্‍কৃষ্ট পরামর্শদাতা হতে পারে।

মনে রাখবেন, চিকিত্‍সায় যার প্রথমবার UTI ভাল হয়েছে, তার ২০% সম্ভাবনা রয়েছে দ্বিতীয়বার ইনফেকশন হওয়ার, যার দ্বিতীয়বার ভাল হয়েছে, তার ৩০% সম্ভাবনা রয়েছে তৃতীয় বার ইনফেকশন হওয়ার- এভাবে সম্ভাবনা বাড়তে থাকে। তাই প্রতিরোধের উপায়গুলো অভ্যাস করুন, সঠিক সময়ে চিকিত্‍সকের পরামর্শ নিন এবং সুস্থ থাকুন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

এটি বৃক্কে পাথরের লক্ষন আপনার প্রয়োজন অপারেশন করা

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ