অামার ৭ দিন একাধারে ছিল সর্ব্বোচ্চ ব্যাথা অার অার এর থেকে ব্যথার মাত্রা একটু কমে তা ২ মাস একাদারে দিন-রাত স্থায়ী ছিল! তাহলে অামিই কি পৃথিবীর সবথেকে বেশি মাত্রায় ভোগা পেনিক ডিসঅর্ডারের রোগী?  নাকি অামার থেকেও বেশি সময় ধরে কেউ ভোগেছে? সঠিক তথ্য চাই। 
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Sakib Ahmed

Call
  • মিলান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে দুজন অভিন্ন জমজ (যারা দেখতে একইরকম এবং সমলিঙ্গের) এবং ভাতৃত্বমূলক যুগল (যারা একইরকম দেখতে নাও হতে পারে এবং ভিন্ন লিঙ্গের হতে পারে) এর মধ্যে একজনের প্যানিক অ্যাটাক হলে, তুলনামূলকভাবে ৫৭% এবং ৪৩% পর্যন্ত অন্যজনের ক্ষেত্রেও এই অ্যাটাকের ঘটনা দেখা যায়। আরো একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ৪০% এর মতো প্যানিক অ্যাটাক বংশপরম্পরাভিত্তিক।
  • উচ্চ বুদ্ধিমত্তা। অবাক হলেও সত্য যে, যারা বেশি চিন্তা করেন এবং যারা সবকিছু নিয়ে অনেক গভীরভাবে ভাবেন, তাদের ক্ষেত্রে প্যানিক অ্যাটাকের সম্ভাবনা বেশি। কারণ তারা বাইরের জগতের চেয়ে নিজের ভেতরের জগতে বেশি বাস করেন এবং বাইরের যেকোনো ছোটখাট ব্যাপারেও তারা চমকে যেতে পারেন এবং এ থেকেও সৃষ্টি হতে পারে এই অ্যাটাকের।
  • অতি সংবেদনশীলতা। শারীরিক কিংবা মানসিকভাবে অতি সংবেদনশীল ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্যানিক অ্যাটাকের হার বেশি।
  • লেখার শুরুতেই বলা হয়েছে, মানসিক চাপ। এটি প্যানিক অ্যাটাকের অন্যতম প্রধান কারণ। প্রথম অ্যাটাকটি মানসিক চাপের কারণে না-ও যদি হয়, এর পরেরগুলো প্রথম অ্যাটাক থেকে উদ্ভূত মানসিক চাপের মাধ্যমে অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে উঠবে।
  • কিছু কিছু ওষুধ গ্রহণে তা শারীরিক কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এ থেকেও প্যানিক অ্যাটাক হবার সম্ভাবনা রয়েছে।রাতের প্যানিক অ্যাটাকগুলো দিনের চাইতে ভয়াবহ হয়। এর কারণে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায় এবং ব্যক্তি পুরোপুরি ঘেমে যায়। হঠাৎ করেই যেন এক অজানা অদেখা ভয় এসে জেঁকে ধরে সর্বত্র। দিনের সাথে রাতের অ্যাটাকের তেমন কোনো পার্থক্য নেই, তবে রাতের বেলা অনেক অবচেতনভাবে হবার কারণে যেন প্রভাবটাও বেশি মনে হয়। তবে নৈশ প্যানিক অ্যাটাকের কিছু নির্দিষ্ট কারণ থাকতে পারে।

    যেমন-

    • বাধাদানকারী স্লিপ অ্যাপনিয়া। এর ফলে ৩০ সেকেণ্ড বা এর চেয়েও বেশি সময় ধরে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় এবং হাইপো-ভেন্টিলেশনের উদ্ভব হয়। অধিকাংশ মানুষ এটি হবার পর কিছু বুঝতে পারে না এবং আবার ঘুমিয়ে পড়ে। কিন্তু কিছু মানুষ পুরোপুরি এটি অনুভব করে এবং এজন্যই প্যানিক অ্যাটাকের সৃষ্টি হয়। মাথা ও ঘাড়ের কাছে অতিরিক্ত চর্বি যাদের আছে, তাদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ঘটবার সম্ভাবনা বেশি।
    • বারবার দুঃস্বপ্ন দেখা। দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে যেতেও পারে, তবে কখনো কখনো ঘুম ভাঙে না।
    • মাঝেমাঝে এটি একটি চক্রের মতো হয়ে যায়। একরাতে প্যানিক অ্যাটাক হবার পরের রাতেও আপনার মনে হবে, “আবার যদি হয়?”। আর সেই ভাবনা থেকে অবচেতন মস্তিষ্কে থেকে যাবে এর রেশ। এবং হয়তো এ কারণেই পরের রাতেও আপনি আক্রান্ত হবেন একই ধরনের অ্যাটাকে।
    • হাইপারভেন্টিলেশন (অতিরিক্ত দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস চলা) ডিসঅর্ডার। এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা, যা প্যানিক অ্যাটাকের কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়। কারো কারো ক্ষেত্রে উত্তেজনা ও মানসিক চাপজনিত কারণে ঘুমন্ত অবস্থায় হাইপারভেন্টিলেশনের উদ্ভব ঘটে এবং এজন্যও অ্যাটাক হয়ে থাকে।
    • গ্যাস্ট্রিকজনিত কারণেও রাতের বেলা প্যানিক অ্যাটাক হতে পারে।
    • চিকিৎসকের কাছে গেলে বিভিন্ন সাইকোলজিক্যাল থেরাপি এবং ওষুধের মাধ্যমে প্যানিক অ্যাটাকের চিকিৎসা করা হয়।
    • কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করা যায়।
    • নিয়মিত মেডিটেশনের মাধ্যমে মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখলে এবং বিশেষত ঘুমানোর আগে মেডিটেশন করলে রাতে প্যানিক অ্যাটাকের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যাবে।
    • প্যানিক অ্যাটাক থেকে তৎক্ষণাৎ বাঁচবার একটিই উপায় এবং সেটি  হলো ভয় না পাওয়া ও নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করা যে এটি তেমন কিছুই নয় এবং খুব সহজেই এ অবস্থা থেকে আপনি বেরিয়ে আসবেন। এতে করে আপনার আচমকা প্যানিক অ্যাটাকের প্রভাব কমে আসতে শুরু করবে এবং পরেরবারের জন্যও আপনি প্রস্তুত থাকবেন এবং এক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসেরও ঘাটতি হবে না।
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ