সতীদাহ প্রথা হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বী বিধবা নারীদের স্বামীর চিতায় সহমরণে বা আত্মহুতি দেবার ঐতিহাসিক প্রথা, যা রাজা রামমোহন রায়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বন্ধ হয়।
সতীদাহ প্রথার ইতিহাসঃ
ঐতিহাসিক প্রমাণঃ গুপ্ত সাম্রাজ্যের (খ্রিষ্টাব্দ ৪০০) পূর্ব হতেই এ প্রথার প্রচলন সম্পর্কে ঐতিহাসিক ভিত্তি পাওয়া যায়। গ্রিক দিগ্বিজয়ী সম্রাট আলেকজান্ডারের সাথে ভারতে এসেছিলেন ক্যাসান্ড্রিয়ার ঐতিহাসিক এরিস্টোবুলুস। তিনি টাক্সিলা (তক্ষশীলা) শহরে সতীদাহ প্রথার ঘটনা তার লেখনিতে সংরক্ষণ করেছিলেন। গ্রিক জেনারেল ইউমেনেস এর এক ভারতীয় সৈন্যের মৃত্যুতে তার দুই স্ত্রীই স্বত:প্রণোদিত হয়ে সহমরণে যায়; এ ঘটনা ঘটে খৃষ্ট পূর্বাব্দ ৩১৬ সালে। যদিও ঘটনার সত্বতা নিশ্চিত নয়।
পৌরানিক ও মধ্যযুগীয় আদর্শঃ মূলত স্বত:প্রণোদিত হয়েই পতির মৃত্যুতে স্ত্রী অগ্নিতে আত্মাহুতি দিত। পৌরাণিক কাহিনীতে এ আত্মাহুতি অতিমাত্রায় শোকের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই দেখা হত। মহাভারত অনুসারে পাণ্ডুর দ্বিতীয় স্ত্রী মাদ্রী সহমরণে যান, কারণ মাদ্রী মনে করেছিলেন পান্ডুর মৃত্যুর জন্য তিনি দায়ী যেহেতু পান্ডুকে যৌনসহবাসে মৃত্যুদন্ডের অভিশাপ দেওয়া হয়েছিল। যদিও মহাভারত এর কোনও অনুবাদক এর মত অনুযায়ি মাদ্রী স্বামীর মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার পড়েই দুঃখে প্রান ত্যাগ করেন এবং দুজনের দেহই একসাথে দাহ করা হয় । অর্থাৎ মাদ্রীকে দাহ করার আগেই তিনি মারা গিয়েছিলেন। রাজপুতানায় "জহর ব্রত" প্রচলিত যাতে কোন শহর দখল হবার পূর্বেই পুরনারীরা আত্মসম্মান রক্ষার্থে আগুনে ঝাঁপ (বা জহর বা বিষ) দিয়ে স্বেছায় মৃত্যুবরণ করতেন, যা সতীদাহের অনুরূপ। কিন্তু কালক্রমে ৯০০ বছরের এই পুরানো কাজটি ভয়ঙ্কর প্রথার রুপ নেয়, যা ইংরেজ আমলেও চালু ছিল। বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে হিন্দু স্ত্রীকে সহমরণে বাধ্য করা হত। বিশেষ করে কোন ধনী লোকের মৃত্যুর সম্পত্তি অধিকার করার লোভে তার আত্মীয়রা তার সদ্যবিধবা স্ত্রীকে ধরে বেঁধে, ঢাক-ঢোলের শব্দ দ্বারা তার কান্নার আওয়াজকে চাপা দিয়ে তার স্বামীর সাথে চিতায় শুইয়ে পুড়িয়ে মারতো।
সতীদাহ প্রথা রদঃ ১৮২৯ সালের ডিসেম্বর ৪-এ বৃটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সীতে সতিদাহ প্রথাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল ঘোষণা করা হয়। এ সময় বেঙ্গলের গভর্নর ছিলেন লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংক। অবশ্য এ আইনী কার্যক্রম গৃহীত হয় মূলত রাজা রামমোহন রায়ের সামাজিক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতেই। এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে লন্ডনের প্রিভি কাউন্সিলে মামলা করা হয়। প্রিভি কাউন্সিল ১৮৩২ সালে বেঙ্গলের গভর্নর লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংকের ১৮২৯ এর আদেশ বহাল রাখেন। খুব অল্পসময়ের মধ্যে ভারতের অন্যান্য কোম্পানী অঞ্চলেও সতীদাহ প্রথাকে বাতিল ঘোষণা করা হয়। রাজা রামমোহন রায় আদালতে প্রমাণ করে দেন যে, সনাতন ধর্মে সতীদাহ বলে কিছু নেই।
বেদ, সতীদাহ ও বিধবা বিবাহঃ পাশ্চাত্যের গবেষকদের অনেকের মাঝে দ্বন্দ্ব থাকলেও ভারতীয় বেদ ভাষ্যকারগণদের মতে বেদে সতীদাহের উল্লেখ নেই। বরং স্বামীর মৃত্যুর পর পুনর্বিবাহের ব্যাপারেই তারা মত দিয়েছেন। এ বিষয়ে অথর্ববেদের দুটি মন্ত্র প্রণিধানযোগ্য:-
অথর্ববেদ ১৮.৩.১:- ইয়ং নারী পতি লোকং বৃণানা নিপদ্যত উপত্ব্য মর্ন্ত্য প্রেতম্। ধর্মং পুরাণমনু পালয়ন্তী তস্ম্যৈ প্রজাং দ্রবিণং চেহ ধেহি। (অর্থঃ হে মনুষ্য! এই স্ত্রী পুনর্বিবাহের আকাঙ্খা করিয়া মৃত পতির পরে তোমার নিকট আসিয়াছে। সে সনাতন ধর্মকে পালন করিয়া যাতে সন্তানাদি এবং সুখভোগ করতে পারে)।
অথর্ববেদ ১৮.৩.২ (এটি ঋগবেদ ১০.১৮.৮ এ ও আছে):- উদীষর্ব নার্ষ্যভি জীবলোকং গতাসুমেতমুপশেষ এহি। হস্তাগ্রাভস্য দিধিষোস্তবেদং পত্যুর্জনিত্বমভি সংবভূব। (অর্থঃ হে নারী! মৃত পতির শোকে অচল হয়ে লাভ কি?বাস্তব জীবনে ফিরে এস। পুনরায় তোমার পাণিগ্রহণকারী পতির সাথে তোমার আবার পত্নীত্ব তৈরী হবে। বেদের অন্যতম ভাষ্যকার সায়নাচার্যও তার তৈত্তিরীয় আরণ্যক ভাষ্যে এই মতই প্রদান করেন)।
মুসলিম শাসকদের মনোভাবঃ দিল্লি সুলতানি রাজত্বকালে সতীদাহ প্রথার জন্য যাতে বিধবাকে বাধ্য না করা হয় তাই সতীর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে সতীদাহ প্রথা সম্পাদন করার রীতি ছিল। যদিও পরে এটি একটি প্রথানুগামিতার রূপ নেয়। মুঘল সম্রাটরা স্থানীয় চলিত প্রথায় সাধারণত অন্তর্ভুক্ত হতেন না, কিন্তু তারা এই প্রথা বন্ধের ব্যাপারে সচেষ্ট ছিলেন। মুঘল সম্রাট হুমায়ুন (১৫০৮-১৫৫৬) সর্বপ্রথম সতীদাহের বিরুদ্ধে রাজকীয় হুকুম দেন। এরপর সম্রাট আকবর (১৫৪২-১৬০৫) সতীদাহ আটকানোর জন্য সরকারীভাবে আদেশ জারি করেন যে, কোন নারী প্রধান পুলিশ কর্মকর্তার সুনির্দিষ্ট অনুমতি ছাড়া সতীদাহ প্রথা পালন করতে পারবেন না। এছাড়াও এই প্রথা রদের জন্য তিনি পুলিশ কর্মকর্তাদের অধিকার দেন, যা তারা যতদিন সম্ভব ততদিন সতীর দাহের সিদ্ধান্তে বিলম্ব করতে পারেন। বিধবাদেরকে উত্তরবেতন, উপহার, পুনর্বাসন ইতাদি সাহায্য দিয়েও এই প্রথা না পালনে উৎসাহিত করা হত। ফরাসি বণিক এবং ভ্রমণকারী তাভেনিয়ের লেখা থেকে জানা যায় যে, সম্রাট শাহজাহানের রাজত্বে সঙ্গে শিশু আছে এমন বিধবাদেরকে কোনমতেই পুড়িয়ে মারতে দেওয়া হত না এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে, গভর্নররা তড়িঘড়ি সতীদাহের অনুমতি দিতেন না, কিন্তু ঘুষ দিয়ে করান যেত।
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া।
ধন্যবাদ।
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
রাশিয়ান বিজ্ঞানী দিমিত্রে মেন্ডেলিফকে পর্যায় সারণীর জনক বলা হয়। যিনি ভরের পরিবর্তন আণবিক সংখ্যা দিয়ে সারণিটি তৈরি করেন। ১৮৩৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন দিমিত্রি ইভানোভিচ মেন্ডেলিফ।...
Symphony I95
Software
OS
Android O OS 8.1
Hardware
Design
screen
5.45" Full Vision HD+ 2.5D IPS 720 x 1440 pixels (~268 ppi density)
dimension
146.2mm X 71.2mm X 9.3mm
weight
150 gm
Memory
expandable
32 GB
RAM
2 GB
ROM
16 GB
Processor
number of cores
4 core
CPU
1.4GHz
GPU
Mali 820
Camera
primary
13 MP
secondary
8...
Symphony I120
Software
OS
Android O OS 8.1
Hardware
Design
screen
5.45" Full Vision HD+ 2.5D IPS 720 x 1440 pixels (~295 ppi density)
dimension
148 X 70.9 X 8.6 mm
weight
140.9 gm
Memory
expandable
128 GB
RAM
2 GB
ROM
16 GB
Processor
number of cores
4 core
CPU
1.5 GHz
GPU
IMG...
উগান্ডা প্রজাতন্ত্র পূর্বাঞ্চলীয় আফ্রিকায় বিষুবরেখার উপর অবস্থিত একটি স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র। কাম্পালা উগান্ডার রাজধানী ও বৃহত্তম নগরী। দেশটি পূর্বে কেনিয়া, উত্তরে সুদান, পশ্চিমে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ-পশ্চিমে রুয়ান্ডা এবং দক্ষিণে তানজানিয়া...
পল অ্যাড্রিয়েন মরিস ডিরাক (৮ই আগস্ট ১৯০২ - ২০শে অক্টবর ১৯৮৪) ছিলেন (নোবেল ১৯) বিজয়ী একজন ব্রিটিশ তত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানী যিনি কোয়ান্টাম তডিৎগতিবিজ্ঞানের এবং কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানে প্রতিষ্ঠাতার একজন।আরো জানতে http://bn.m.wikipedia.org/wiki/পল_ডিরাক
(আরবি: ﻖﺸﻣﺩ )দামেস্ক সিরিয়ার আরব প্রজাতন্ত্রের রাজধানী; যুদ্ধের কারণে আলেপ্পোর জনসংখ্যা হ্রাসের পরে এটিও দেশের বৃহত্তম শহর। সভ্যতার প্রাচীন ও মধ্যযুগের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা হবে কিন্তু সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের নাম...
ক্লোরো ফ্লোরো কার্বন এর সংক্ষিপ্ত নাম CFC. এই CFC গ্যাস ক্লোরিন, ফ্লোরিন ও কার্বনের সমন্বয়ে গঠিত হয়। এটি আমাদের জন্য ক্ষতিকর। পৃথিবীর ছাঁদ হিসেবে কল্পিত ওজোন স্তরের জন্য এই গ্যাস...