আজ সবচেয়ে আফসোসের বিষয় হলো, নারী আপন ঘরে পরম আপনজন কর্তৃক নিপীড়িত হচ্ছে৷ নারী যখন উপেক্ষিত হয় এমন কারো কাছে, যাকে নিয়ে সে তার স্বপ্নের সৌধ নির্মাণ করে, তখন সে পরকীয়ার মতো ভয়াবহ অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ে। তবে ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলো, কোনো কোনো দেশ তো নারীর পরকীয়া সম্পর্ককে আর অপরাধ গণ্য করছে না। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায়ে পরকীয়া আর অপরাধ থাকল না- এমন একটি রায়ের প্রতিক্রিয়ায় অনেক নারী বলেছে, ওই রায়ে নাকি নারীর অধিকার পূর্ণতা পেয়েছে। তবে বাস্তবতা হলো, কোনো নারী যখন তার স্বামীর কাছেই অবজ্ঞার শিকার হয়, তার ন্যায্য অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত হয় তখন সে জেদি হয়, মারমুখী বা আক্রমণাত্মক হয়। নারী স্বামীকে চায়ের সাথে ঘুমের ট্যাবলেট প্রয়োগ করে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা খুব একটা কম নয়।(সর্বপ্রথম আপনার জন্য পরামর্শ হলো!কখনো এই ভয়াবহ অপরাধের সাথে জড়িত হবেন না,মৃত্যু আসলেও৷
একজন নারী তার স্বামীর কাছে শুধু ভাত-কাপড়ের জন্যই আসে না। তাহলে তো ধনাঢ্য পরিবারের মেয়েদের বিয়েরই প্রয়োজন হতো না। বরং স্ত্রীর অর্থনৈতিক (ভরণ-পোষণের) অধিকারের পাশাপাশি তার আরো কিছু অধিকার রয়েছে, যেগুলো অপূর্ণ থেকে গেলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হতে পারে। বৈবাহিক ব্যবস্থার স্থায়িত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে। স্ত্রীর মানসিক বিনোদন তার অন্যতম। একজন স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে শুধু ভরণ-পোষণে তুষ্ট থাকতে পারে না। বরং স্বামীর কাছে তার আরো কিছু চাওয়া-পাওয়ার আছে। সেগুলো সে পূর্ণভাবে পেতে চায়। কোনো স্ত্রী যদি সত্যিকার অর্থে স্বামীভক্ত হয়, তাহলে সে তার স্বামীকে মনে-প্রাণে ভালোবাসে, স্বামীকে নিয়ে সে তার স্বপ্নের সৌধ নির্মাণ করে। সে ক্ষেত্রে স্ত্রীও চায় স্বামী তাকে ভালোবাসুক, তার প্রতি আলাদাভাবে খেয়াল করুক, তাকে গুরুত্ব দিক, তার সাথে হাসিমুখে কথা বলুক এবং আবেগপূর্ণ আচরণ করুক।স্বামীভক্ত কোনো স্ত্রী যদি তার স্বামীর কাছ থেকে এসব অধিকার না পায় অথবা কোনো কারণে সে তা থেকে বঞ্চিত হয়, তখন সে মারাত্মক অপমান বোধ করে এবং মানসিকভাবে আহত হয়। স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসাপূর্ণ সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার কিংবা হালকা হওয়ার এটাও একটি কারণ।স্ত্রী হিসেবে ইসলাম নারী জাতিকে অধিকার ও মর্যাদা দিয়েছে। স্বামীকে নির্দেশ দিয়েছে স্ত্রীর সাথে ভালো আচরণ করার। আল কুরআনে বলা হয়েছে, ‘আর তোমরা স্ত্রীদের সাথে বসবাস করো সদাচারের সাথে।
আর যদি তোমরা কোনো কারণে তাদের অপছন্দ করো, তাহলে হয়তো তোমরা এমন একটি বস্তুকে অপছন্দ করলে, যাতে আল্লাহ তায়ালা প্রভুত কল্যাণ রেখেছেন। (সূরা নিসা : ১৯)
প্রত্যেকের ভেতরেই কিছু না কিছু মন্দ স্বভাব থাকবেই। ভালো ও মন্দ মিলেই মানুষ। কাজেই স্ত্রীর কোনো স্বভাব স্বামীর কাছে অপছন্দ হলে, বা স্বামীর কোন স্বভাব স্ত্রীর কাছে অপছন্দ হলে সে যেন ধৈর্যধারণ করে এবং ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে। স্বামীর ভালো গুণগুলোর দিকে লক্ষ্য করে আল্লাহর শোকর আদায় করে এবং তার প্রশংসা করে।
এ ক্ষেত্রে প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রীর জন্য রাসূল সা:-এর জীবনই উত্তম আদর্শ৷
এখন আপনার জন্য পরামর্শ হলো-আপনি প্রথমে ধৈর্য্য ধারণ করুন,নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে স্বামীকে খুশি করার চেষ্টা করুন,বিশ্বাস স্থাপন করুন,আর দোয়া করুন৷ ★দ্বিতীয়ত-এতে কাজ না হলে আপনি তার পরিবারের বড়দের এবং আপনার পরিবারের বড়দের কাছে কথাগুলো বুঝিয়ে বলুন৷ এটা বড়দের দায়িত্বও বটে,তারা যদি এর কোন সমাধান দেয়,তা ভালো৷ প্রয়োজনে কিছুদিন পৃথক থাকুন৷আর শেষ চেষ্টার পর, কাজ না হলে-সম্পর্ক ছিন্ন করুন৷ কারণ -সংসার মূল্য অনেক,কিন্তু জীবনের ছেয়ে কম৷ কাজেই কেউ বা আপনি যেন কোন অপরাধে জড়িত না হন৷
আর হ্যা!!আজ থেকে শেষ অবধি,প্রচুর ভালোবাসুন স্বামীকে,অতীত ভুলে৷ আপনি নিজ ইচ্ছায় বিয়ে করুন বা মা-বাবার ইচ্ছায় করুন,এখন এটা আপনার সংসার৷ আল্লাহ আপনাকে হেফাজত করুক৷