মদিনা সনদের ধর্মের স্বাধীনতা সম্পর্কে বলুন.
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। এটাই কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদের মূল কথা। এটা মদিনা সনদেরও কথা। মদীনা সনদ একটি ধর্মনিরপেক্ষ সনদ। ইসলাম নিজেই একটি অসাম্প্রদায়িক ধর্ম। কেউ যদি ইসলামকে সাম্প্রদায়িক ধর্ম বানায়, সেটা তার ব্যক্তিগত মতামত। মদিনা সনদঃ ১.সনদপত্রে স্বাক্ষরকারী সম্প্রদায়সমূহ ইসলামী রাষ্ট্রের অধীনে একটি সাধারণ জাতি গঠন করবে। ২.হযরত মুহাম্মদ (স) ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান থাকবেন। ৩) কোন সম্প্রদায় গোপনে কুরাইশদের সাথে কোন প্রকার সন্ধি করতে পারবে না কিংবা মদীনা বা মদীনাবাসীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে কুরাইশদের কোনরুপ সাহায্য-সহযোগীতা করতে পারবে না। ৪) মুসলিম, খ্রীস্টান, ইহুদী, পৌত্তলিক ও অন্যান্য সম্প্রদায় ধর্মীয় ব্যাপারে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে। কেউ কারো ধর্মীয় কাজে কোন রকম হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। ৫) মদিনার উপর যে কোন বহিরাক্রমণ কে রাষ্ট্রের জন্য বিপদ বলে গণ্য করতে হবে। এবং সেই আক্রমণ কে প্রতিরোধ করার জন্য সকল সম্প্রদায়কে এক জোট হয়ে অগ্রসর হতে হবে। ৬) রাষ্ট্রের প্রতি নাগরিকের অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। ৭) অসহায় ও দূর্বলকে সর্বাবস্থায় সাহায্য ও রক্ষা করতে হবে। ৮) সকল প্রকার রক্তক্ষয়, হত্যা ও বলাৎকার নিষিদ্ধ করতে হবে এবং মদীনাকে পবিত্র নগরী বলে ঘোষণা করা হবে। ৯) কোন লোক ব্যক্তিগত অপরাধ করলে তা ব্যক্তিগত অপরাধ হিসেবেই বিচার করা হবে। তজ্জন্য অপরাধীর সম্প্রদায় কে দায়ী করা যাবে না। ১০) মুসলমান, ইহুদী ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকেরা পরষ্পর বন্ধুসুলভ আচরণ করবে। ১১) রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিরোধ নিষ্পত্তির অধিকার থাকবে রাষ্ট্রপ্রধানের এবং তিনি হবেন সর্বোচ্চ বিচারালয়ের সর্বোচ্চ বিচারক। ১২) মুহাম্মদ (সাঃ) এর অনুমতি ব্যতীত মদীনাবাসীগণ কারও বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারবে না। ১৩) মুসলমানদের কেউ যদি অন্যায় কিংবা বিশ্বাসঘাতকতা করে তবে সবাই মিলে তার বিরুদ্ধে যথোচিত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। নিজ সন্তান বা আত্নীয় হলেও এ ব্যাপারে তাকে ক্ষমা করা যাবে না।

Call

"মদিনা সনদ" মুসলমান ও অমুসলিমদের ধর্মে পূর্ণ স্বাধীনতা ও নিশ্চয়তা বিধান করে। এ সনদের একটি ধারা ছিল 'মদিনার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকেরা একে অপরের ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।' হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এ শর্ত দ্বারা যে মহানুভবতা ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দেন, তা বিশ্বের ইতিহাসে সত্যিই বিরল। মদিনা সনদ এর দ্বারা মহানবী (সঃ) তৎকালীন বিশ্বে ধর্ম ও রাজনৈতিক সমন্বয়ে যে ইসলামী উম্মাহ বা প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন, সেটি এক বিশাল ইসলামী সাম্রাজ্য স্থাপনে সহায়তা করে।