কী কী কারণে চুল পড়েঃ
অ্যান্ড্রোজেনের কারণে চুল পড়া:
অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন যেমন
টেস্টোস্টেরন, অ্যান্ড্রোস্ট্রেনডিয়ন,
ডিএইচটি হরমোনগুলো সাধারণত
পুরুষের বেশি ও মহিলাদের কম
পরিমাণে থাকে। এ হরমোনগুলো
হেয়ার ফলিকলের ওপর কাজ করে ও চুল
পড়া ত্বরান্বিত করে। সে কারণে
পুরুষের চুল বেশি পড়ে। তবে সবারই যে
পড়বে তা নয়, যাদের এসব হরমোনের
প্রভাব বেশি তাদের বেশি করে চুল
পড়ে। পুরুষের চুল পড়া বা টাক পড়া
সাধারণত ২০ বছর থেকেই শুরু হতে
পারে। এটিকে বলে মেল প্যাটার্ন অব
হেয়ার লস বা পুরুষালি টাক। অর্থাৎ
কপাল থেকে শুরু করে পেছন দিকে চুল
উঠতে থাকে। মহিলাদের
মেনোপজের সময় ও পরে
অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোনগুলো
আনুপাতিক হারে বেড়ে যায়, তখন চুল
বেশি করে পড়তে শুরু করে। তবে এ
ক্ষেত্রে ফিমেল প্যাটার্ন অব হেয়ার
লস হয়ে থাকে। শুধু কপালের দিক
থেকে নয়, চুল পড়া শুরু হয় পুরো মাথা
থেকেই। ধীরে ধীরে চুলের ঘনত্ব কমে
যায়। অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোনই
মেয়েদের চুল পড়া ও ছেলেদের
টাকের সবচেয়ে বড় কারণ। স্ট্রেস বা
মানসিক চাপ: দুশ্চিন্তায় ভুগলে বা
মানসিক সমস্যা থাকলে
স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি করে চুল
পড়তে পারে। তবে এ চুল পড়া সাময়িক
এবং পুনরায় চুল গজায়। তবে দীর্ঘদিন
মানসিক দুশ্চিন্তায় থাকলে বা
দুশ্চিন্তা কাটিয়ে উঠতে না পারলে
অনেক বেশি চুল পড়ে যেতে পারে।
দৈনিক ১০০টা পর্যন্ত চুল পড়া
স্বাভাবিক। কিন্তু এর চেয়ে বেশি
পড়লে তা অবশ্যই উদ্বেগের কারণ।
দুটি পদ্ধতির কথা বলবো আমি যা
উপকারী---- চুলের গোঁড়ায় হেয়ার
ফলিকল থাকে। ভাইব্রেশনের মাধ্যমে
যদি ফলিকল উদ্দীপিত করা যায় তবে
নতুন চুল গজানো সম্ভব। বাজারে
ভাইব্রেটিং ম্যাসেজার কিনতে
পাওয়া যায়। এর সাহায্যে আপনি
স্ক্যাল্পে চক্রাকারে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে
মাথায় ভাইব্রেটিং ম্যাসাজ নিতে
পারেন। যে জায়গায় বেশি চুল পড়ে
যাচ্ছে, তাতে বেশি মনোযোগ দিন।
এভাবে ৫ থেকে ১০ মিনিট আপনার
স্ক্যাল্প ভাইব্রেট করুন। ভালো ফল
পেতে এটাও আপনাকে দিনে ৩ বার
করতে হবে। আরেকটি পদ্ধতি হল
মেডিকেশন । চুলের জন্য ওষুধ। অনেক
গবেষণার পর ফেনাস্টেরাইড আর
মিনোক্সিডিল নামের দুটো ওষুধ চুল
গজানোর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। দুটি
ওষুধের-ই সাইড ইফেক্ট আছে।
মিনোক্সিডিল এর দুইটা কনসেনট্রেশন
পাওয়া যায়। ২% আর ৫%। ২%
মিনোক্সিডিল মেয়েদের জন্য আর ৫%
মিনোক্সিডিল ছেলেদের জন্য। এটা
বাজারে জেনোগ্রো নামে পাওয়া
যায়। স্প্রে করে মাথার স্ক্যাল্পে
দিতে হয়।খাদ্যাভ্যাসঃ ০১.
প্রোটিনঃ পর্যাপ্ত পরিমাণে
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন –
আমাদের চুল মূলত কেরাটিন দিয়ে
গঠিত। এটি অ্যামিনো এসিড দিয়ে
তৈরি এক ধরণের প্রোটিন। তাই নতুন চুল
গজানোর জন্যে অবশ্যই আপনার
শরীরকে পর্যাপ্ত অ্যামিনো এসিড
সরবরাহ করতে হবে। মাছ, মাংস, পনির,
দুধ, ডিম – আপনার খাদ্য তালিকায়
প্রতিদিনই এগুলোর অন্তত একটি রাখার
চেষ্টা করুন। সয়াবিন, মটরশুঁটি, কলা,
বাদাম ইত্যাদি থেকেও পেতে
পারেন। তবে নন-ভেজিটেরিয়ান
খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ
তুলনামূলক বেশি। ০২. আয়রন আর জিঙ্কঃ
আয়রন আর জিঙ্ক আপনার মাথার কোষে
অক্সিজেন পরিবহন করে নিতে
সহায়তা করবে আর নতুন টিস্যু তৈরিতে
এবং ক্ষয়রোধে সহায়তা করবে।
পরিমিত পরিমাণে আয়রন আর জিঙ্ক
নতুন এবং দ্রুত চুল গজানোর জন্যে সহায়ক
ভূমিকা পালন করে। মটরশুঁটি, বাদাম,
কলিজা, মাংস, দুধে আপনার
প্রয়োজনীয় জিংক আর আয়রন বিদ্যমান।
০৩. ভিটামিন সিঃ পেয়ারা, লেবু,
কমলা, আনারস, কামরাঙা, কাঁচা
মরিচে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন
সি রয়েছে। আপনার চুলের বৃদ্ধি এবং
গজানোর জন্য সহায়ক। ০৪.
কালোজিরাঃ কালোজিরা নতুন চুল
গজানোর জন্যে সহায়ক। মাথায়
কালোজিরার তেল ব্যবহার করা আর
খাবারে কালোজিরা ব্যবহার খুব
ভালো ফল দেয়।এই পদ্ধতি ছাড়াও
আপনাকে খাদ্যাভ্যাস আর কিছু
সাধারণ যত্ন নিতে হবে।