শুনে অবাক হবেন যে, ঘাম গন্ধবিহীন। কিন্তু নিঃসৃত ঘামের উপর ত্বকে থাকা কতিপয় ব্যাকটেরিয়া যখন ঘামে থাকা বিভিন্ন উপাদানকে ভেঙ্গে দন্ধযুক্ত এসিড তৈরী করে তখনই ঘাম দূর্গন্ধযুক্ত হয়। কিন্তু বিভিন্ন মানুষের গায়ে বিভিন্ন ধরণের দুর্গন্ধ হয় কেন সেটা ঠিক বলতে পারছি না

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

ডাক্তারি মতে ঘাম প্রধানত দুই ধরনের। (১) এক্রিন ঘাম (eccrine) এবং (২) অ্যাপোক্রিন ঘাম (apocrine)। এক্রিন ঘাম কায়িক পরিশ্রমে অথবা বাইরের তাপমাত্রার প্রভাবে শরীরের তাপ কিছুটা বেড়ে যায়। তখন আমাদের শরীরের সিস্টেম চায় তাপমাত্রাকে স্বাভাবিক রাখতে। ঠিক তখনই এক্রিন গ্রন্থি সক্রিয় হয়ে ঘাম নিঃসরণ করে। সাধারণ এই ঘামই ডাক্তারি মতে এক্রিন ঘাম। যা বাষ্প হয়ে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। অ্যাপোক্রিন ঘাম অ্যাপোক্রিন ঘামের গ্রন্থি থাকে বগলে এবং যৌনাঙ্গের চারপাশে। এক একজন মানুষের গায়ে একেক রকম গন্ধ সৃষ্টি করে এই অ্যাপোক্রিন ঘাম। তবে অ্যাপোক্রিন ঘামের গ্রন্থিগুলো শৈশবে নিষ্ক্রিয় থাকে। বয়ঃসন্ধির পর থেকে এ ধরনের ঘাম নিঃসরণ শুরু হয়। প্রসঙ্গত, অ্যাপোক্রিন গ্লান্ডের পাশাপাশি এক্রিন ঘামের গ্রন্থিও থাকে। যদিও মানুষে মানুষে আলাদা গন্ধ সৃষ্টির জন্য অ্যাপোক্রিন ঘাম দায়ী, কিন' এই ঘাম যখন প্রথম ত্বকের ওপর বেরোয় তখন তার কোনো দুর্গন্ধ থাকে না। কিন' ত্বকের ওপর থাকা জীবাণুরা যুদ্ধ শুরু করে দেয় ঘামের সঙ্গে। আর এর ফলেই যত গন্ধের উৎপত্তি। বোল্ডস্কাই জানিয়েছে ঘামে দুর্গন্ধ হওয়ার সাত কারণের কথা কারণগুলো হল:- ১. অপুষ্টি ভর পেট খেলেই শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয় না। শরীরে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে সব ধরনের খাদ্যই সঠিক পরিমাণে খাওয়া দরকার। অপুষ্টি ঘামে দুর্গন্ধ তৈরি করার একটি বড় কারণ। এ ছাড়া শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি হলে ঘামে বাজে গন্ধ হয়। ২. পারফিউম গায়ে গন্ধ সুন্দর করতে আমরা সুগন্ধি বা পারফিউম ব্যবহার করি। তবে এই পারফিউম থেকেও ঘামে গন্ধ হতে পারে। বিশ্বাস হচ্ছে না তো! কিছু পারফিউম রয়েছে যেগুলোতে ব্যাকটেরিয়া দূরকারী উপাদান থাকে না। এগুলো ব্যবহারের ফলে শরীরে ব্যাকটেরিয়া বেশি বৃদ্ধি পায় এবং দুর্গন্ধ তৈরি করে। ৩. ওষুধ নিয়মিত কোনো ওষুধ সেবনের কারণেও ঘামে দুর্গন্ধ হতে পারে। বিভিন্ন ওষুধের মধ্যে থাকা রাসায়নিক উপাদান ঘামের দুর্গন্ধ সৃষ্টির জন্য দায়ী। ৪. সিনথেটিক কাপড় সিনথেটিক কাপড় সুতির কাপড়ের চেয়ে কম ঘাম শোষণ করে। যদি ঘামে প্রচুর গন্ধ হয় তবে রেয়ন ও পলিয়েস্টারের তৈরি কাপড় এড়িয়ে চলাই ভালো। কেননা এগুলো ঘামে গন্ধ তৈরি করে। ৫. খাবারে কম কার্বহাড্রেট কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্যের অভাব হলে ঘামে দুর্গন্ধ হয়। স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার ঘামের বাজে গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। ৬. মিষ্টি ঘামের দুর্গন্ধ হওয়ার পেছনে মিষ্টি খাবারেও কিছু ভূমিকা রয়েছে। বেশি মিষ্টি খাবার দেহে ইস্ট উৎপন্ন করে। সাধারণত অ্যালকোহলের মধ্যে যে চিনি মেশানো হয় সেটা থেকে এই ইস্ট বেশি উৎপন্ন হয়; যা ঘামে দুর্গন্ধ তৈরি করে। এ ছাড়া খাবারে বেশি ঝালের ব্যবহার ঘামে দুর্গন্ধ তৈরি করার আরেকটি কারণ। ৭. প্রস্রাব আটকে রাখলে গবেষণায় বলা হয়, যদি আপনি দীর্ঘ সময় ধরে প্রস্রাব আটকে রাখেন তখন ঘামে উটকো গন্ধ বের হতে থাকে। শরীরের বিষাক্ত পদার্থগুলো তখন প্রস্রাবের সাথে বের হতে না পেরে ঘামের সাথে বের হয়। ফলে ঘামে দুর্গন্ধ তৈরি হয়। এই এক একটি কারনে শরীরের ঘামের গন্ধও হতে পারে ভিন্ন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call
মানুষের ঘর্মগ্রন্থিতে অবস্থানকৃত বিভিন্ন ধরণের ব্যাকটেরিয়ার কারণেই বিভিন্ন মানুষের গায়ে বিভিন্ন গন্ধের সৃষ্টি হয়। জন্মের কিছুদিনের মধ্যেই শিশুর সংস্পর্শে আসা মানুষের শরীর থেকে এধরণের ব্যাকটেরিয়াগুলো শিশুদের দেহে চলে আসে এবং সারাজীবন স্থায়ী ভাবে অবস্থান করে । যার শরীরে যে ধরণের ব্যাকটেরিয়া অবস্থান করে সেই অনুযায়ী বিভিন্ন গন্ধ তৈরি হয়।
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ