আমি আমার 1.5 বিঘা জমিতে পেয়ারা বাগান করতে চাচ্ছি।কিন্তুু কিছু প্রশ্ন আমার মাথায় আসছে যেটার উত্তর আমি পাচ্ছিনা।আপনাদের ভিতর কেও জানলে বলবেন দয়াকরে।

• (1) কোন মাসে চারা রোপন করতে হয়?

• (2)যে কোনো পেয়ারা চারা কে যদি আমার পছন্দ অনুযায়ি জাতের ডাল দিয়ে কলম করি তাহলে কি যে গাছের ডাল দিয়ে কলম করলাম সেই জাতের পেয়ারা পাবো?

•(3) চারা রোপনের কত দিন আগে কলম করতে হয়?

• (4) রোপনের আগে কিভাবে জমি প্রস্তুত করতে হবে?

• (5) চারা রোপনের গর্তে কি সার প্রয়োগ করতে হবে?


যদি কেও এই গুলার উত্তর জানেন তবে বলবেন plz... উত্তরের জন্য এবং আমার প্রশ্ন গুলো কষ্ট করে পড়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।



Share with your friends
almasali

Call

আপনার প্রশ্নের উত্তরে বলছি - ১। গাছ লাগানোর উত্তম সময় জুলাই- সেপ্টেম্বর। তারপরেও সারা বছর গাছ লাগানো যায়। ২। হ্যা কলম করলে আপনার যত্ন,পরিচর্যা ঠিক থাকলে সেই একই রকম জাতের পেয়ারা পাবেন। ৩। চারা রোপনের ২ মাস আগে পেয়ারায়ার কলম করলে ভাল হয়। ৪। হ্যা রোপনের ২০-২৫ দিন আগে গর্ত করে তাতে পচা গোবর, মুরগীর লিটার দিতে পারেন।এরপরে চারা লাগানোর ১ দিন আগে গর্তের মাটি কুপিয়ে আলগা করেন যাতে গ্যাস বের হয়।পরেরদিন চারা লাগালেই হবে। ৫।না তখন রাসায়নিক সার না দিলেও হবে।৪ নং উত্তর দেখুন।

Talk Doctor Online in Bissoy App
Call

পেয়ারা চাষ করার জন্য সর্ব প্রথমে সঠিকভাবে মাটি তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে বেলে দো- আঁশ মাটি সর্বোত্তম। প্রথমে ২ ভাগ বেলে দোআঁশ মাটির সাথে ১ ভাগ গোবর এবং ৪০-৫০ গ্রাম টি,এস,পি সার এবং ৪০-৫০ গ্রাম পটাশ সার দিয়ে ড্রাম বা টব ভরে পানিতে ভিজিয়ে রেখে দিতে হবে ১০-১২ দিন । অতঃপর মাটি কিছুটা খুচিয়ে দিয়ে আবার ৪-৫ দিন এভাবেই রেখে দিতে হবে । যখন মাটি ঝুরঝুরে হবে তখন একটি সবল সুস্থ চারা উক্ত টবে রোপন করতে হবে পেয়ারা চাষে কি ধরণের টব/ পাত্রের আকৃতি বাছাই করবেন ছাদে বা আঙ্গিনায় পেয়ারা গাছের জন্য একটি অর্ধেক ড্রাম সংগ্রহ করতে হবে। ড্রামের তলায় ৩-৫ টি ছিদ্র করে নিতে হবে । যাতে গাছের গোড়ায় পানি জমে না থাকে । টব বা ড্রামের তলার ছিদ্রগুলো ইটের ছোট ছোট টুকরা দিয়ে বন্ধ করে দিতে হবে । পেয়ারার জাত বাছাই করা বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরণের পেয়ারার চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে বেশকিছু ভাল জাতের পেয়ারা আছে। এর মধ্যে এফটিআইপি বাউ পেয়ারা-১ (মিষ্টি), এফটিআইপি বাউ পেয়ারা-৪ (আপেল),এফটিআইপি বাউ পেয়ারা-৬ (জেলি), এফটিআইপি বাউ পেয়ারা-৫ (ওভাল),এবং থাই পেয়ারা উল্লেখযোগ্য । এছাড়াও ইপসা -১ এবং ইপসা -২ পেয়ারাও ভাল জাতের পেয়ারা । পেয়ারা চাষ/রোপনের সঠিক সময় বছরের যেকোন সময়ে পেয়ারার গাছ লাগানো যায়। পেয়ারা একটি বারমাসী ফল। তাই বছরের যে সময়ই লাগান হোক না কেন নির্দিষ্ট সময় পর ফলন পাওয়া যাবে। চারা রোপনের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে বংশ বিস্তার বীজ দ্বারা বংশ বিস্তার করা সবচেয়ে সহজ। কিন্তু বীজের গাছে মাতৃগাছের গুণ বজায় থাকে না যার ফলে চারা অনেক সময় নিকৃষ্ট মানের হয়। গুটি কলম দ্বারা বংশ বিস্তার খুব সহজ। বর্ষাকাল আরম্ভ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গুটি কলম করতে হয়। গুটি কলমের জন্য উন্নত জাতের সুস্থ সবল পেয়ারার গাছ বেছে নিতে হবে। কিভাবে পেয়ারার বীজ বপন ও সঠিক নিয়মে পানি সেচ দিবেন পাত্রের মাটি তৈরি হওয়ার পর বীজ বপন অথবা চারা রোপন করতে হবে। চারা রোপনের সময় খেয়াল রাখতে হবে গাছের গোড়া যেন মাটি থেকে আলাদা না হয়ে যায়। চারা গাছের গোড়ায় মাটি কিছুটা উচু করে দিতে হবে এবং মাটি হাত দিয়ে চেপে চেপে দিতে হবে । পেয়ারা গাছের চারা লাগানোর পর গাছে নিয়মিত পানি দিতে হবে। তবে কখনই বেশী পরিমানে পানি দিয়ে স্যাঁত স্যাঁতে অবস্থায় রাখা যাবে না । অতিরিক্ত গরমের সময় গাছে প্রয়োজনে দিনে দুইবার পানি দিতে হবে। সঠিক নিয়মে পেয়ারার চাষাবাদ পদ্ধতি/কৌশল পেয়ারার চারা লাগানোর পর লক্ষ্য রাখতে হবে কখনই যেন গাছের গোড়ায় পানি জমে না থাকে। তবে যদি দেখা যায় যে গাছের গোড়া শুকিয়ে গেছে তাহলে পানি দিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে গাছের গোড়া দিয়ে বেশী পানি না ঢুকতে পারে । গাছটিকে সোজা করা লাগাতে হবে । এবং একটি সোজা কাঠি দিয়ে গাছটিকে বেধে দিতে হবে । পেয়ারা গাছে সারের পরিমাণ ও সার প্রয়োগ পেয়ার গাছে নিয়ম করে সার প্রয়োগ করতে হবে। পেয়ারা গাছ লাগানোর ৪/৫ মাস পর থেকে নিয়মিত ১৫-২০ দিন অন্তর অন্তর সরিষার খৈল পচা পানি প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়া পচা সরিষার খৈলের পানি পাতলা করে গাছের গোড়ায় দিতে পারেন। এর ফলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। ১০-১৫ দিন অন্তর অন্তর টব বা ড্রামের মাটি কিছুটা খুঁচিয়ে দিতে হবে । পেয়ারা গাছের পোকামাকড় দমন ও বালাইনাশক/কীটনাশক কিভাবে প্রয়োগ করবেন ছাদে বা আঙ্গিনায় পেয়ারা বাগান করার ক্ষেত্রে পেয়ারা গাছে মাঝে মধ্যে কীটনাশক স্প্রে করে দিতে হবে। তাহলে আর পেয়ারা গাছে পোকামাকড় আক্রমণ করতে পারবে না। এবং ফলনও অনেক ভালো হয়। কিভাবে পেয়ারা বাগানের যত্ন ও পরিচর্যা করবেন পেয়ারা গাছ লাগানোর পর গাছের গোড়া থেকে মাঝে মাঝে আগাছা পরিস্কার করা এবং গোড়ার মাটি ভেঙ্গে দেয়া দরকার। এবং পেয়ারা গাছের সর্বদা ছাটাই করে দিতে হয়। গাছ লাগানোর ২ বছর পর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে গাছের ডাল ছাটাই করে দিতে হবে। পেয়ারা গাছ ছাটাই করা হলে গাছে প্রচুর পরিমাণ ফলন পাওয়া যায় এবং ফলের আকারও অনেক বড় হয়। পেয়ারা গাছের খাড়া ও উল্লম্ব শাখা বা ডাল একটু ঠাসা দিয়ে / নুইয়ে দিলে ফল ধরা বৃদ্ধি পায়। কারণ উল্লম্ব শাখায় নতুন প্রশাখা এবং কুশি কম হয়। এছাড়া অতিরিক্ত গরমে খড় বা কচুরিপানা দিয়ে গাছের গোড়ার মাটি ঢেকে দেয়া উচিত, যেন মাটিতে রস বেশী দিন পর্যন্ত বিদ্যমান থাকে এবং আগাছা জন্মাতে না পারে। এবং বেশী করে পানি দিতে হবে। পেয়ারার খাদ্য গুণাগুণ পেয়ারা খাদ্যগুণে ভরপুর একটি ফল। ভিটামিন সি ছাড়াও এ ফলে বিভিন্ন খনিজ পদার্থ, স্নেহ, শর্করা ও প্রোটিন রয়েছে। পেয়ারা আমাদের শরীরে নানা ধরণের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। পেয়ারা খাওয়ার ফলে দাঁত শক্ত ও মজবুত হয়। কখন পেয়ারা সংগ্রহ করবেন পেয়ারা পাকার সময় হলে সবুজ রং বদলে গিয়ে আস্তে আস্তে হলদে রঙ ধারন করে। তবে খেয়াল রাখতে হবে পেয়ারা বেশী পাকতে দেয়া উচিত নয়। কারণ বেশী পাকা পেয়ারা খেতে মোটেই সুস্বাদু নয়। কি পরিমাণ পেয়ারা পাওয়া যাবে একটি পেয়ারা গাছ থেকে বছরে আপনি কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ কেজি পেয়ারা পাবেন। এইভাবে প্রতিটা গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করে আপনার পারিবারিক চাহিদা মিটিয়েও বিক্রি করে বাড়তি উপার্জনও করতে পারেন। পেয়ারার অন্যান্য ব্যবহার পেয়ারা দিয়ে অনেক ধরণের সুস্বাদু খাবার তৈরি করা যায়। শুধুমাত্র কাচা পেয়ারা ফল হিসেবে খাওয়া হয় তা না পেয়ারা দিয়ে আচারও তৈরি করা হয়। এছাড়া পাকা পেয়ারা দিয়ে জেলী তৈরি করা হয়।

Talk Doctor Online in Bissoy App