MrEmon

Call
পশ্চিম দিকে পা দিয়ে ঘুমানো বা বসা জায়েজ কিনা-এ বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। চলমান এ বিতর্ক অবসানের উদ্দেশ্যে কিছু আলোচনা সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো। পশ্চিম দিকে পা দিয়ে ঘুমানো জায়েজ কিনা-এ বিষয়টি বিতর্কপূর্ণ বা মতবিরোধপূর্ণ কোনো বিষয় নয়।

কোরআন, হাদিস ও সালফে-সালিহীনের বক্তব্যে এ বিষয়ে কোনো বিতর্ক পাওয়া যায় না। তবে বর্তমান বিশ্বে এটি কিছুটা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে আমাদের দেশে পশ্চিম দিকে পা দিয়ে বসা, শোয়া বা ঘুমানোর বিষয়ে বিতর্ক দেখা দেয় কিংবা শোনা যায়। অনেকে এটিকে গুরুতর অপরাধ বলে গণ্য করেন আবার অনেকে এর মধ্যে অন্যায় কিছু দেখেন না।

কেউ কেউ আবার এ বিষয়ে বিভিন্ন কুসংস্কারেও বিশ্বাস করেন। যেমন সমাজে প্রচলিত আছে যে, পশ্চিম দিকে পা দিয়ে ঘুমালে হায়াত কমে যায় ইত্যাদি।

ইসলামে কোনো বিষয়কে হালাল বা হারাম সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য তার পক্ষে বা বিপক্ষে গ্রহণযোগ্য দলিল থাকা জরুরি। দলিল ছাড়া ইসলামে কোনো কিছু হালালও হয় না এবং হারামও হয়না। তাই পশ্চিম দিকে পা দিয়ে ঘুমানো জায়েজ কিনা- প্রথমেই এ প্রশ্নের দলিল খুঁজে দেখতে হবে।

ইসলামী আইনের মূলনীতি হচ্ছে- সাধারণভাবে সবকিছু জায়েজ, যতক্ষণ না সেটি হারাম হওয়ার পক্ষে কোনো দলিল পাওয়া যায়। এই মূলনীতি অনুয়ায়ী আমরা যদি উল্লিখিত মাসআলাটি বিশ্লেষণ করি, তাহলে দেখতে পাই যে, পশ্চিম দিকে পা দিয়ে ঘুমানোর ব্যাপারে কোনো আদেশ বা নিষেধ কোনটিই নেই।

এমতাবস্থায় পশ্চিম দিকে পা দেওয়া হারাম ঘোষণা করতে হলে-এর বিপক্ষে গ্রহণযোগ্য দলিল পেশ করতে হবে। অথচ আমাদের অনুসন্ধান অনুযায়ী আমরা সাধারণভাবে ‘পশ্চিম দিকে পা দিয়ে ঘুমানো নিষেধ’ মর্মে কোনো বক্তব্য কোরআন, হাদিস বা ইমামদের বক্তব্য থেকে জানতে পারি না। তাই এটি নিষেধ করার কোনো যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য কোনো কারণ নেই বলে দাবি করা যায়

অনেকে পশ্চিম দিকে (কিবলার দিকে) মুখ ফিরিয়ে বা পিঠ ফিরিয়ে পায়খানা-প্রশ্রাব করার নিষেধাজ্ঞায় বর্ণিত হাদিসের ওপর কিয়াস করে পশ্চিম দিকে পা দিয়ে ঘুমানো বা বসাকে নাজায়েজ বলে থাকেন। অথচ এমন কিছু ধারণা করার কোনো সুযোগ ইসলামে নেই।

খোলা স্থানে কিবলার দিকে মুখ ফিরিয়ে বা পিঠ ফিরিয়ে পায়খানা-প্রশ্রাব করা নিষেধ; এ মর্মে স্পষ্ট হাদিস রয়েছে (সুনান আন-নাসাঈ, হাদীস নং-২১, জামি আত-তিরমিযী, হাদীস নং-০৮) কিন্তু কিবলার দিকে পা দিয়ে ঘুমানো বা বসা নিষেধ মর্মে কোনো হাদিস বর্ণিত হয়নি। তাই কিবলার দিকে তথা পশ্চিম দিকে পা দিয়ে ঘুমানো বা বসা নাজায়েজ- এ কথাটি অপ্রমাণিত ও ভুল।

সৌদি আরবের সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি শাইখ আব্দুল্লাহ বিন বাজকে (রহ.) এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এতে কোনো সমস্যা নেই। কোনো ব্যক্তি যদি তার দুই পা কিবলার দিকে ফিরিয়ে রাখে তাতে কোনো সমস্যা নেই। এমনকি কেউ যদি মসজিদে হারামে বসেও কাবার দিকে পা ফিরিয়ে রাখে তাতেও কোনো সমস্যা নেই।

শাইখ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-উছাইমীনও (রহ.) বলেন, কিবলার দিকে পা দিয়ে ঘুমাতে বা বসতে কোনো দোষ নেই।

কিবলা ও কাবা অত্যন্ত মর্যাদাবান দু’টি বিষয়। এগুলো ইসলামের শিআর বা নিদর্শনের অন্তর্ভুক্ত। এগুলোকে কোনোভাবে অসম্মান করা, অবজ্ঞা করা বা এগুলোর প্রতি কোনো অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করা মহা অন্যায়। তাই কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে এ ধরনের  কাজ হলে তা মহা অন্যায় ও কবিরা গুনাহ হিসেবে বিবেচিত হবে। পশ্চিম দিকে পা রাখার কারণে গুনাহ হবে কি হবে না-তা নির্ভর করে যে পা রাখছে তার ইনটেনশন বা নিয়তের উপর।

পশ্চিম দিকে পা রাখা যদি হারাম হয় তাহলে বিছানায় বা সমান কোনো স্থানে বসা কোনো মাজুর ব্যক্তি (অসুস্থতা বা কোনো সমস্যার কারণে পা সামনে রেখে নামাজ আদায়কারী ব্যক্তি) কিভাবে বা কোন দিকে পা রেখে সালাত আদায় করবে? অবশ্যই পশ্চিম দিকে অর্থাৎ কিবলার দিকে পা রেখেই সলাত আদায় করতে হবে।

ফিকহ বিশারদরা বলেন, যদি কোনো অসুস্থ ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বা বসে নামাজ পড়তে না পারেন, তাহলে কিবলা মুখ করে এক পাশে শুয়ে নামাজ আদায় করবেন। যদি সেটাও না পারেন তাহলে চিত হয়ে শুয়ে কিবলার দিকে পা দিয়ে নামাজ পড়তে হবে। যদি পশ্চিম দিকে পা রাখা হারাম বা নাজায়েজ হতো তাহলে সলাত আদায় কালেও তা হারাম হতো। আর যদি এটি ব্যতিক্রম হিসাবে নাজায়েজ হতো তাহলে তাও ফিকহের কিতাবে ও ফতোয়ায় উল্লেখ থাকতো।

তাই ‘কিবলার দিকে বা পশ্চিম দিকে পা রেখে ঘুমালে হায়াত কমে যায়’ এ ধরনের অপ্রমাণিত ও অগ্রহণযোগ্য কথা বিশ্বাস, প্রচার ও প্রসার থেকে নিজে বিরত থেকে অন্যকেও বিরত রাখতে চেষ্টা করা প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য। সুতরাং বলা যায় কথাটি ভিত্তিহীন।
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

ইসলামী আইনের মূলনীতি হচ্ছে- সাধারণভাবে সবকিছু জায়েজ, যতক্ষণ না সেটি হারাম হওয়ার পক্ষে কোনো দলিল পাওয়া যায়। এই মূলনীতি অনুয়ায়ী আমরা যদি উল্লিখিত মাসআলাটি বিশ্লেষণ করি, তাহলে দেখতে পাই যে, পশ্চিম দিকে পা দিয়ে ঘুমানোর ব্যাপারে কোনো আদেশ বা নিষেধ কোনটিই নেই। এমতাবস্থায় পশ্চিম দিকে পা দেওয়া হারাম ঘোষণা করতে হলে-এর বিপক্ষে গ্রহণযোগ্য দলিল পেশ করতে হবে। অথচ আমাদের অনুসন্ধান অনুযায়ী আমরা সাধারণভাবে ‘পশ্চিম দিকে পা দিয়ে ঘুমানো নিষেধ’ মর্মে কোনো বক্তব্য কোরআন, হাদিস বা ইমামদের বক্তব্য থেকে জানতে পারি না। তাই এটি নিষেধ করার কোনো যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য কোনো কারণ নেই বলে দাবি করা যায় অনেকে পশ্চিম দিকে (কিবলার দিকে) মুখ ফিরিয়ে বা পিঠ ফিরিয়ে পায়খানা-প্রশ্রাব করার নিষেধাজ্ঞায় বর্ণিত হাদিসের ওপর কিয়াস করে পশ্চিম দিকে পা দিয়ে ঘুমানো বা বসাকে নাজায়েজ বলে থাকেন। অথচ এমন কিছু ধারণা করার কোনো সুযোগ ইসলামে নেই। খোলা স্থানে কিবলার দিকে মুখ ফিরিয়ে বা পিঠ ফিরিয়ে পায়খানা-প্রশ্রাব করা নিষেধ; এ মর্মে স্পষ্ট হাদিস রয়েছে (সুনান আন-নাসাঈ, হাদীস নং-২১, জামি আত-তিরমিযী, হাদীস নং-০৮) কিন্তু কিবলার দিকে পা দিয়ে ঘুমানো বা বসা নিষেধ মর্মে কোনো হাদিস বর্ণিত হয়নি। তাই কিবলার দিকে তথা পশ্চিম দিকে পা দিয়ে ঘুমানো বা বসা নাজায়েজ- এ কথাটি অপ্রমাণিত ও ভুল। সৌদি আরবের সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি শাইখ আব্দুল্লাহ বিন বাজকে (রহ.) এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এতে কোনো সমস্যা নেই। কোনো ব্যক্তি যদি তার দুই পা কিবলার দিকে ফিরিয়ে রাখে তাতে কোনো সমস্যা নেই। এমনকি কেউ যদি মসজিদে হারামে বসেও কাবার দিকে পা ফিরিয়ে রাখে তাতেও কোনো সমস্যা নেই। শাইখ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-উছাইমীনও (রহ.) বলেন, কিবলার দিকে পা দিয়ে ঘুমাতে বা বসতে কোনো দোষ নেই। কিবলা ও কাবা অত্যন্ত মর্যাদাবান দু’টি বিষয়। এগুলো ইসলামের শিআর বা নিদর্শনের অন্তর্ভুক্ত। এগুলোকে কোনোভাবে অসম্মান করা, অবজ্ঞা করা বা এগুলোর প্রতি কোনো অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করা মহা অন্যায়। তাই কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে এ ধরনের কাজ হলে তা মহা অন্যায় ও কবিরা গুনাহ হিসেবে বিবেচিত হবে। পশ্চিম দিকে পা রাখার কারণে গুনাহ হবে কি হবে না-তা নির্ভর করে যে পা রাখছে তার ইনটেনশন বা নিয়তের উপর। পশ্চিম দিকে পা রাখা যদি হারাম হয় তাহলে বিছানায় বা সমান কোনো স্থানে বসা কোনো মাজুর ব্যক্তি (অসুস্থতা বা কোনো সমস্যার কারণে পা সামনে রেখে নামাজ আদায়কারী ব্যক্তি) কিভাবে বা কোন দিকে পা রেখে সালাত আদায় করবে? অবশ্যই পশ্চিম দিকে অর্থাৎ কিবলার দিকে পা রেখেই সলাত আদায় করতে হবে। ফিকহ বিশারদরা বলেন, যদি কোনো অসুস্থ ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বা বসে নামাজ পড়তে না পারেন, তাহলে কিবলা মুখ করে এক পাশে শুয়ে নামাজ আদায় করবেন। যদি সেটাও না পারেন তাহলে চিত হয়ে শুয়ে কিবলার দিকে পা দিয়ে নামাজ পড়তে হবে। যদি পশ্চিম দিকে পা রাখা হারাম বা নাজায়েজ হতো তাহলে সলাত আদায় কালেও তা হারাম হতো। আর যদি এটি ব্যতিক্রম হিসাবে নাজায়েজ হতো তাহলে তাও ফিকহের কিতাবে ও ফতোয়ায় উল্লেখ থাকতো। তাই ‘কিবলার দিকে বা পশ্চিম দিকে পা রেখে ঘুমালে হায়াত কমে যায়’ এ ধরনের অপ্রমাণিত ও অগ্রহণযোগ্য কথা বিশ্বাস, প্রচার ও প্রসার থেকে নিজে বিরত থেকে অন্যকেও বিরত রাখতে চেষ্টা করা প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য। সুতরাং বলা যায় কথাটি ভিত্তিহীন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

কিবলার দিকে থুথু ফেলা, পা প্রসারিত করা বা প্রস্রাব পায়খানা করা সবই গুনাহের কাজ। 

দেখুন এই পিডিএফ বইটি ডাউনলোড করে মসজিদ সমূহ সুবাসিত রাখুন (“ঞ“ অনুচ্ছেদের ১ নং  বইটি), 

আরো দেখুন গোসলের পদ্ধতি অনুচ্ছেদটি

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call
সত্যি বলতে পশ্চিম দিকে পাও দিলে পাপ হবে বা এটি হারাম ।এমন কোন দলিল নেই। 
তবে এটা আদপের বিষয় ।
কারন, পশ্চিম হল আমাদের কেবলা ।
কেউ যদি পশ্চিম দিকে পা দেয় আমি ব্যক্তিগত ভাবে এটা সমস্যা মনে করি না। 
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ