আপন মোরশেদ বা পীরকে “বাবা” বলা সম্মন্ধে ‘বাবা’ শব্দটির আভধানিক অর্থ হচ্ছে দরজা । এ জগতে নবী,রাসুলদের পরে আল্লাহর অলিদের স’ান সবার উর্দ্ধে। বর্তমান বিশ্বে হক্কানী মুর্শি দ ও পরীরানে ত্বরিকত সবচেছে সম্মানিত ব্যক্তি। সুতরাং জন্ম দাতা পিতা- মাতা ছাড়াও পরী বুজর্গ,শিক্ষক,ব যস্ক মুরুব্বীদেরকে শ্রদ্ধ ভরে বাবা বা বাবাজান বলে সম্বোধন করা শরীয়ত মতে জায়েজ। তদ্রুপ ছোটদেরকে স্নেহ ভরে বাবা বলে ডাকা হয় । এতে কোন দোষ বা ত্রুটি নেই। আবরসহ যে কোন দেশেই এর প্রথা বা প্রচলন রয়েছে এবং বাবা শব্দট ি কেবল পিতার জন্যেই ‘খাছ’ বা নির্দিষ্ট নয়। আমরা প্রত্যেকটি জন্ মদাতা জনককে পিতা, আব্বা,বাবা,বাবা জান ইত্যাদি বলে ডাকি। কিন’কিছু সংখ্যক অজ্ঞ,অল্প বিদ্যার অধিকারী ব্যক্তি নি জেরা জ্ঞানী নাম ধারণ করে জন্ম দাতা পিতা ব্যতীত কাউকে বাবা বলে রাজী নয়। অথচ সচরাচর তারা নিজেরা অনেকেই বাবা বলে ডাকেন। ঐ সকল স্ব-ষোষিত পন্ডিলবর্গসহ আমরা সকলেই নিজ সন-ান আপন শ্বশুর,ছোট বাচচা,পিতৃতুল্য মুরব্বী স্নেহাসম্পদ ছাত্র আপন মোরশেদ ও মুরিদদেরকে বাবা বলে ডাকি। অথচ তাদের কেউ আমাদেরকে জন্ম দেয়নি বা আমরা তাদের সন-ান নই। জন্মদাতা পিতা ছাড়া ও অনেককেই বাবা বলা যায়। তার বহু প্রমাণ কুরআন ও হাদিস শরীফে বিদ্যমান রয়েছে। পৃথিবীর সর্ব প্রথম মাবন হচ্ছেন হযরত আদম আলাইহিস সালাম। আল্লাহ তায়ালা কুরআন মজিদে এভাবে ইরশাদ করেছেন- অর্থাৎ হে মানবগণ! নিজ প্রতিপালককে ভয় কর,যিনি তোমাদেরকে একই প্রাণী (হযরত আদম আঃ) থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং এ দু’জন থেকে বহু নর-নারীর বিস্তার লাভ করেছেন। উল্লেখ্য হযরত আদম (আঃ) কে আদি পিতা বলে আ খ্যায়িত করি,যদিও তিনি মা হওয়া (আঃ)’র ওরশজাত সন-ান ব্যতীত আর কারও জন্ম দাতা জনক নহেন। আথচর আল্লাহ;রাব্বুল আলামীন সর্ব প্রথম তাঁর প্রিয় হাবীব (দঃ) এর নুর মোবারক সৃষ্টি করেন। আবার নূরে মুহাম্মদী (দঃ) থেকে মানব জাতিসহ সকল মাখলুক সৃষ্টি করেছেন। তাই জাহের বা প্রকাশ্য রাসূলে পাক (দঃ) হযরত আদম (আঃ) এর স্থান কিন্তু হাকিকতে রাসুল (দঃ) তিনি হযরত আদম (আঃ) এর পিতা হন। তাই রাসূলে পাক (দঃ) সম্পর্কে আল্লাহ তা’য়ালা কুরআন শরীফে ইরশাদ করেছেন- অর্থাৎ- নবী পাক (দঃ) মু’মিনদের প্রাণের চেয়েও অধিকতর নিকটবতী এবং তাঁর স্ত্রীগণ তাদের (মুমিনদের) মাতা। (পারা-২১,সূরা আহযাব- আয়াত-৬) উল্লেখিত আয়াতে এখন প্রশ্ন জাগে নবী করীম (দঃ) ’র পবিত্র স্ত্রীগণ যদি মুমিন মুসলমানের মাতা হন,তাহলে নবী ক রীম (দঃ) কি? নিঃসন্দেহে এ প্রশ্নের উত্তরে বলতে হয়,নবী পাক (দঃ) তা হলে বাবা। এই পিতৃত্বের সাথে রয়েছে আধ্যাত্ম িক ও রুহানী সম্পর্ক। সুতরাং হযরত মুহাম্মদ (দঃ) হলেন সমগ্র মুমিন মুসলমান জাতির আধ্যাত্মিক পিতা। পৃথিবীর কোন মুমিন মুসলমান তথা মানবের রাসূলে পাক (দঃ) এর পবিত্র স্ত্রীগণকে বিয়ে করা শরীয়তের বিধান মতে সম্পূর্ণ হারাম। যদিও তাঁরা গর্ভধারিনী মাতা নহেন,তবুও পৃথিবীর প্রত্যেক মুমিন মুসলমান তাদেরকে ‘মা’ বলে সম্বোধন করতে বাধ্য। এবং তাদনুযায়ী শ্রদ্ধা বোধ প্রদর্শন করা বাঞ্চনীয়। সর্বপ্রথম আল্লাহ তা’য়ালা হযরত ইব্রাহিম (আঃ) কে মুসলমানদের ‘জনক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। অর্থাৎ হযরত ইব্রাহিম (আঃ) তোমাদের (মুসলমানদের) ‘জাতির পিতা’। (পারা ১৭,সূরা আল- হজ্ব-আয়াত-৭৮) তাই কুরআন শরীফে ঘোষণা অনুযায়ী হযরত ইব্রাহিম (আঃ) কেও বাবা বলা যাবে। সুতরাং যারা বলে জন্মদ াতা পিতা ব্যতীত অন্য কাউকে বাবা বলা যাবে না,তারা ভ্রান- ধারণার বশীভূত হয়ে বলে থাকেন। আল্লাহর প্রিয় বন্ধু অলি আল্লাহ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ঘোষণা করেছেন- অর্থাৎ সাবধান! নিশ্চয়ই আল্লাহর অলিদের কোন ভয় নেই,আর তাঁরা চিনি- তও হবেন না। যারা ঈমান এনেছেন এবং মুক্তাকীন হয়েছেন,তাদের জন্য ইহকালীন ও পরকালীন জীবনে সু- সংবাদ রয়েছে। আল্লাহর বানী সমূহ পরিবর্তন হতে পাওে না,আর সেটাই মহান সফলতা। (পারা-১১,সূরা ইউনুস-৬ ২) হযরত রাসূলে মকবুল (দঃ) পবিত্র হাদিস শরীফে আউলিয়া এ- কোরামের সম্পর্কে এরশাদ করেছেন- অর্থাৎ ঃ হযরত ওমর বিন খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত,রাসুলে পা ক (দঃ) এরশাদ করেন- আল্লাহর বান্দাগণের মধ্যে এমন কিছু সংখ্যক সাধক রয়েছেন যারা নবী ও শহীদ নয়। কিন’কিয়ামত দিবসে দরবারে এলাহী তে তাঁদের উঁচু মর্যাদা দেখে নবী ও শহীদগণ ঈর্ষা করবেন। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন,ইয়া রাসূলাল্লা হ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম তারা কারা? রাসূলে পাক (দঃ) তার জবাবে বলেন- তাঁরা এমন এক সমপ্রদায় যারা আত্মীয়তার বন্ধন এবং সম্পদের প্রাচুর্য ছাড়াই আল্লাহর অনুগ্রহে মানুষের প্রিয়জন হয়েছেন। আল্লাহর শপথ! তাঁদের চেহারাগুলো হবে নূরানী আর তাঁরা হবেন নূরের উপর প্রতিষ্ঠিত। আর তাঁরা হবেন শংকামুক্ত,যখন সাধারণ মানুষ থাকবে ভীত সন্ত্রস- এবং তারা হবেন দূর্ভাবনা মুক্ত,যখন হাশরবাসী থাকবে চিন ি-ত ও বিচলিত। অত:পর নিম্নোক্ত আয়াত তেলাওয়াত করেন- অর্থাৎ ঃ নিশ্চয়ই আল্লাহর অলিদের কোন ভয় নাই,আর তাঁরা চিন্তিতও হবে না। (মেশকাত শরীফ-৪২৬) সুতরাং উল্লেখিত কুরআন ও হাদিস শরীফ এবং শরীয়তের বিধান মতে অলি আল্লাহরদে র শান-মান আল্লাহ এত বুলন্দ করেছেন যাদের সম্মান এত উর্দ্বে তাঁদেরকে সম্মা ন সূচক শ্বদ বাবা বলে সম্বোধন করা উচিত। এতএব,আপন পরী মুর্শিদকে বাবা বা বাবাজান বলে ডাকা দোষ বা পাপ নয় বরং যারা একাকে অস্ব ীকার করে তারা আবশ্যই আউলিয়া এ কেরামের প্রকাশ্য শত্রু বা দুশমন। আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রিয় হাবী (দঃ) ও আউলিয়া- এ-এ কেরামের উছিলায় আমাদেরকে যথাযথ জ্ঞান আর আমল করার তৈৗফিক দান করুন। আমিন। “কিছু সংখ্যক অজ্ঞ,অল্প বিদ্যার অধিকারী ব্যক্তি নি জেরা জ্ঞানী নাম ধারণ করে জন্মদাতা পিতা ব্ যতীত কাউকে বাবা বলতে রা জী নয়। অথচ সচরাচর তারা নিজেরা অনেককে ই বাবা বলে ডাকেন। ঐ সকল স্ব-ঘোষিত পন্ডিতবর্গসহ আমরা সকলেই নিজ সন-ান আপন শ্বশুর,ছোট বাচ্ছা,পিতৃতুল্ য মুরব্বী স্নেহাস্পদ ছাত্র আপন মোরশেদ ও মুরিদদেরকে বাবা বলে ডাকি। অথচ তাদের কেই আমাদেরকে জন্ম দেয়নি বা আমরা তাদের সন-ান নই। জন্মদাতা পিতা ছাড়া ও অনেককেই বা
আরবী ভাষায় খ্রিস্টান পোপকে বাবা বলা হয়। বাংলায় বাবা পিতা একই অর্থবোধক। সম্মান ও ভালোবাসা প্রকাশারার্থে জন্মদাতা পিতা ছাড়া অন্যকেও স্বাভাবিবভাবে পিতা বা বাবা বলার অবকাশ আছে। তবে মাজারের পীরকে বাবা বলাটা স্বাভাবিকত্বের পর্যায়ে পড়ে না। প্রচলিত মাজার জিনিসটাই ইসলামী শরীয়তে নিষিদ্ধ। মাজার মানে দর্শনের জায়গা, জিয়ারত করার জায়গা। একজন ব্যক্তি তিরোধান হয়ে কবরস্থ হলে তার কবর যিয়ারত করার বিধান ইসলামী শরীয়তে আছে। কিন্তু প্রচলিত মাজার সংস্কৃতির কোনো স্থান ইসলামী শরীয়তে নেই। আপনি যাকে বাবা বলতে চান তিনি কি সত্যিই একজন হক্কানী পীর ? বর্তমানে কোনো পীরের সাথে বাবা সংযুক্ত হওয়াটাই তার অপাঙক্তেয়তার অশুভ লক্ষণ। হক্কানী পীরগণ সাধারণত বাবা বলার অনুমোদন দেন না। বর্তমানে কোনো পীরকে বাবা বলা মানে তাকে শরীয়ত পরিপন্থী সম্মান ও ভালোবাসার আসনে অধিষ্ঠিত করা। সুতরাং বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় কোনো পীরকে বাবা বলা শরীয়তসিদ্ধ নয়।