পাইলসের চিকিৎসা নিয়ে বিভ্রান্তির শেষ নেই। সব ধরনের চিকিৎসাই চালু আছে বংলাদেশে। বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি থাকায় প্রতি মুহূর্তেই মানুষ শিকার হয়ে থাকেন অপচিকিৎসায়। বলতে গেলে আমাদের দেশের বেশিরভাগ পাইলস ও পায়ুপথের রোগীই অপচিকিৎসার শিকার হয়ে থাকেন। ফলে রোগ জটিল হয়ে পড়ে। কখনো কখনো জীবন সংশয়ও দেখা দিয়ে থাকে। তবে রোগীদের যখন বলা হয় অপারেশনের প্রয়োজন, তখন তারা ভয় পেয়ে যান। আসলে পাইলস চিকিৎসায় আধুনিক অপারেশনগুলোয় ভয়ের কোনো কারণ নেই। সাধারণত অ্যাডভান্সড স্টেজ অর্থাৎ থার্ড ডিগ্রি ও ফোর্থ ডিগ্রি পাইলসের ক্ষেত্রে অপারেশনের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। পাইলসে জটিলতা দেখা দিলে ও অন্যান্য রোগ, যেমনÑ এনাল ফিসারের সঙ্গে পাইলস থাকলেও অপারেশনের প্রয়োজন হয়। এ ধরনের পাইলসের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বর্তমানে যে আধুনিক চিকিৎসা রয়েছে, অর্থাৎ লঙ্গো অপারেশনÑ তা করা সম্ভব। এ অপারেশনে বাইরে কাটাছেঁড়ার ব্যাপার না থাকায় অপারেশন পরবর্তী সময় ব্যথা একেবারে হয় না বললেই চলে। অপারেশনের সময় রক্তপাত হয় না। রোগী একদিনের মধ্যে বাসায়ও চলে যেতে পারেন। তিন-চার দিনের মধ্যে অফিসের কাজকর্মসহ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। পাইলস রোগীর অপারেশনের ক্ষেত্রে আরেকটি ভয় হচ্ছে মলত্যাগ নিয়ে। পায়ুপথে অপারেশন হয়েছে, মলত্যাগ কীভাবে হবে, এ ভয়ে অনেকে অস্থির থাকেন। এসব রোগীর অস্থিরতা দূরীকরণে এ কথা বলা যায়, লঙ্গো অপারেশনের পর পরই রোগী স্বাভাবিকভাবে মলত্যাগ করতে পারেন। তবে পাইলস বড় হয়ে গেলে কিংবা পাইলসের সঙ্গে এনালফিসার থাকলে রোগীর মলত্যাগে কষ্ট হয়। এ অপারেশনের মাধ্যমে সমস্যাগুলো দূর হওয়ায় রোগী অপারেশনের পরই আরামে মলত্যাগ করতে পারেন। অপারেশনের আগে তীব্র ব্যথা বা বাধা, কোনোটাই থাকে না। এ অপারেশনে বাইরে কাটাছেঁড়া না থাকায় দীর্ঘদিন বেদনাদায়ক ড্রেসিংও করতে হয় না। ফলে রোগী যন্ত্রণাদায়ক ড্রেসিং থেকে মুক্ত থাকেন। পাইলস রোগীরা একটি প্রশ্ন করে থাকেন আর তা হলোÑ অপারেশনের পর রোগ আবার দেখা দেবে কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে এককথায় বলা যায়, না। মূলকথা হচ্ছে, সঠিক নিয়মে অপারেশন করলে এবং অপারেশন পরবর্তী সময় নিয়মকানুন ঠিকমতো মানলে এ রোগ নতুন করে দেখা দেয় না। রোগী সারা জীবন স্বাভাবিকভাবে মলত্যাগ করতে পারবেন।