মাফ করবেন এতো বড় উত্তর পোস্ট করার জন্য। এটা আমার কথা না আমাদের পবিত্র ইসলামের কথা । তাই দয়াকরে আপনারা উত্তরটিকে বেশি করে ভোট ও মন্তব্য করুন যাতে বেশি করে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায় । ভাই আপনি একটি খুবই গুরুত্ব পূর্ণ প্রশ্ন করেছেন, এর জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ । উত্তরটি অনেকটা বিস্তৃত এবং এতে আপনার উত্তর পেয়ে যাবেন এবং আরো অনেকেটা তথ্য ঈন্সা'আল্লহ্ । বলা হয় যে, এদেশে ৯০% লোক মুসলিম। এগুলো কাগজ-কলমের কথা, কিন্তু বাস্তব চিত্র যে সম্পূর্ণ ভিন্ন সেটা একজন সুস্থবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ ভালভাবেই উপলব্ধি করতে পারেন। ইসলামের প্রকৃত জ্ঞানচর্চার অভাবে মানুষ আজ নামে মুসলিম হলেও শিরক, কুফরি, বিদ'আত ও কবীরা গুনাহে লিপ্ত। অথচ এই ব্যাপারে তারা সম্পূর্ণ উদাসীন। মূর্তি পুজারীরা যেমন চিন্তা-ভাবনা না করে পূর্ববর্তী বংশধরদের অন্ধ অনুসরণ করে আসছে, এরকম মুসলিম উম্মাহের মধ্যেও একটা বড় অংশ আজ ইসলামের সঠিক জ্ঞান অন্বেষণ না করে বংশ পরস্পরায় নানারকম বিদ'আত-কুসংস্কারে লিপ্ত এমনকি অনেক ক্ষেত্রে দেশীয় সংস্কৃতি চর্চার নামে শিরক ও কুফরিতে লিপ্ত। এই যদি হয় আজকের মুসলিম উম্মাহের অবস্থা তাহলে আল্লাহর রহমত কিভাবে আশা করা যায় বরং ভয়াবহ কোন আযাব যে এখনও আসেনি সেজন্য কৃতজ্ঞ থাকা উচিৎ। অনেকেরই নামায সম্পর্কে ধারণা এরকম যে, যেহেতু তারা মুসলিম পরিবারে জন্মেছেন আর দুই ঈদের নামায পড়েন এবং মাঝে মধ্যে শুক্রবারের নামাযে যান কাজেই তারা তো মুসলিম। প্রকৃত বাস্তব সত্য হচ্ছে আল্লাহ তা'আলা প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামায ফরয করেছেন, শুধু শুক্রবারের জন্য নয়। লোকের মৃত্যুর পর কুরআন তেলাওয়াতের আয়োজন করা, মৃত্যুর ৩,৫,৭,১১,,২১, ৪০, ৪১ দিন পর ভোজের অনুষ্ঠান, শবে বরাত পালন, ঈদে মিলাদুন্নবী বা রাসূল (সা) এর জন্মদিন পালন, মহররমের অনুষ্ঠান, মিলাদ অনুষ্ঠান ইত্যাদি সবই ইসলামের মধ্যে নতুন সৃষ্টি বা বিদ'আত। সহীহ হাদিসে এসব আমল ও অনুষ্ঠানের কোন দলিল নেই। বিদ'আতের শাস্তি সম্পর্কে কয়েকটি হাদিস - আহমদ ইবনে সালিহ (র)...সাঈদ ইবনুল মুসাইয়াব (র) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসসাল্লামের সাহাবীদের থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মতের থেকে কতিপয় লোক আমার সামনে হাউযে কাউসারে উপস্থিত হবে। তারপর তাদেরকে সেখান থেকে পৃথক করে নেয়া হবে। তখন আমি বলব, হে রব! এরা আমার উম্মত। তিনি বলবেন, তোমার পড়ে এরা (ধর্মে নতুন সংযোজনের মাধ্যমে) কি কীর্তিকলাপ করেছে সে সম্পর্কে নিশ্চয়ই তোমার জানা নেই। নিঃসন্দেহে এরা দীন থেকে পিছনের দিকে ফিরে গিয়েছিল। [সহীহ বুখারী, দশম খণ্ড, হাদিস নং-৬১৩৫, ইফা] বিদআত নিয়ে রসুলুল্লাহ(সাঃ) উপদেশের সারমর্ম হল - “নিশ্চয়ই সর্বোত্তম বাণী আল্লাহ‌র কিতাব এবং সর্বোত্তম আদর্শ মুহাম্মদের আদর্শ। আমার পর তোমাদের মধ্যে যে জীবিত থাকবে সে বহু মতবিরোধ দেখতে পাবে, এমতাবস্থায় তোমরা অবশ্যই আমার ও হিদায়াতপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদিনের সুন্নাত অবলম্বন করবে। আর তা অত্যন্ত মজবুত ভাবে দাঁত দিয়ে আঁকড়ে ধরবে, দ্বীনের ব্যাপারে নতুন আবিষ্কার থেকে অবশ্যই বেঁচে থাকবে। কারণ, নব উদ্ভাবিত প্রত্যেক বিষয় বিদআত এবং প্রত্যেক বিদআত হল ভ্রষ্টতা এবং প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম।” যে লোক আল্লাহর বিধানকে অস্বীকার করবে সে কাফির হয়ে যাবে তাতে কোন সন্ধেহ নেই। কতিপয় কুফরি মূলক কাজের তালিকাঃ- * আল্লাহর অস্তিত্বকে অস্বীকার করা বা নাস্তিকতা। * আল্লাহর বিধানকে অস্বীকার করা। * মানব রচিত আইন (গনতন্ত্র) দ্বারা দেশ শাসন ও বিচার করা এবং এর সমর্থন করা। * ইচ্ছা করে ফরয নামায ছেড়ে দেয়া। * কোন মুসলিমের সাথে যুদ্ধ ও মারামারি করা। * কোন মুসলিমকে কাফির বলে গালি দেয়া। * কারো বংশ তুলে তিরস্কার করা। * মৃতের জন্য বিলাপ করে কান্নাকাটি করা। * যাদু-টোনা করা। কতিপয় শিরক বা শিরকি কাজের তালিকাঃ- * খ্রিষ্টানদের বড় দিনে 'মেরি খ্রিসমাস' বলে সম্বোধন করা। * হিন্দুদের পূজার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা। * মাজারে গিয়ে মানত করা, সাহায্য চাওয়া, সিজদা করা। * গলায়, হাতে বা কোমরে তাবিজ-কবজ ধারণ করা। * অমুসলিমদের আচার-অনুষ্ঠান যেমনঃ নববর্ষ পালন। হে ঈমানদার গন! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ কর না। নিশ্চিত রূপে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। [সূরা আল-বাকারাঃ ২০৮] হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না। [সূরা আল-ইমরানঃ ১০২] কিন্তু যারা তওবা করে, নিজেদের অতীত কৃতকর্মের সংশোধন করে ও আল্লাহর কাছে আশ্রয় নেয় এবং আল্লাহর জন্য ধর্মে বিশুদ্ধ হয়, তারা বিশ্বাসীদের সঙ্গে থাকবে। আল্লাহও শিগগিরই মুমিনদের মহাপুরস্কার দেবেন। [সুরা আন-নিসাঃ ১৪৬] আল্লাহ্‌ তা'আলা আমাদের সকল প্রকার কুফরি, শিরক ও বিদ'আত থেকে বেঁচে থাকার তওফিক দান করুন। আমীন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

এ রকম অনুষ্ঠান করা জায়েজ নেই।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ