আমি Hsc পরিক্ষা দিচ্ছি আমার পরিক্ষা প্রায় শেষের দিকে। এখন আমি ভাল ইউনিভার্সিটিতে চান্চ পেতে কী কী বই পড়ব এবং কোন ক্রোচিং সেন্টার ভাল হবে ক্রোচিং করার জন্য।
Share with your friends
Call

সবার স্বপ্ন ভালো একটা ইউনিভার্সিটিতে চান্স পাওয়া, পছন্দের বিষয়ে পড়ালেখা করা। আমিও আমার স্বপ্ন নিয়ে এই অসুস্থ যুদ্ধে নেমে গেলাম। ফার্স্ট-সেকেন্ড না হলেও স্কুল-কলেজে মোটামুটি প্রথম সারির ছাত্র ছিলাম, প্রচুর পড়ালেখা করার অভ্যাস ছিল, কিন্তু ভর্তিযুদ্ধের সময়কার কথা মনে পড়লে এখনও গাঁ শিউরে উঠে। স্বপ্ন ছিলো সিএসই(কম্পিউটার সায়েন্স) পড়বো, বুয়েটে বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। জানতাম ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম সারিতে থাকতে না পারলে স্বপ্ন পূরণ হবেনা। বাবা-মা স্বপ্ন দেখছে ছেলে ভালো জায়গায় পড়বে, তারা গর্ব করে ১০জনের কাছে গল্প করবে। ভালো জায়গায় চান্স না পেলে কি করবো ভাবতেই ভয় লাগতো,ঢাকার বাইরে পাঠাতেও চায়না বাবা-মা,নিজেও চাইনা। প্রায় প্রত্যেকেরই বাংলাদেশের ভর্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা আছে,সবাই জানে কি ভয়াবহ এই যুদ্ধ। বিভিন্ন কারণে বুয়েটের পরীক্ষা ভালো হলোনা,একটাই অপশন বাকি থাকলো,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৫দিন মত সময় ছিল বুয়েট পরীক্ষার পর। দু:স্বপ্নের সবথেকে ভয়াবহ সময় ছিল এ সময়টুকু। এখানে না হলে বাবা আর্মি কোটায় হয়তো mist তে ভর্তি করে দিবে, কিন্তু সেটা হবে খুবই লজ্জাজনক। দিন-রাত পুরোনো প্রশ্ন সলভ করতে থাকলাম,চিন্তায় রাতে ঘুম হতো না ঠিকমত। ঢাবির পরীক্ষার হলে ঢুকলাম,প্রায় ৪০ হাজার পরীক্ষার্থী এসেছ ক বিভাগে পরীক্ষা দিতে। অবাক হয়ে ভাবছিলাম,এদের প্রায় সবার চোখে কত স্বপ্ন,কিন্ত মাত্র ১০০০ জনের স্বপ্ন পূরণ হবে,বাকিদের যুদ্ধ চলতেই থাকবে। পরীক্ষা ভালো হলো,আরো ২টি অসহনীয় দিনের পর ফলাফল দিলো,আমার পজিসন ২৩৭তম, প্রোগ্রামার হবার স্বপ্ন পূরণের পথে বড় একটি ধাপ এগিয়ে গেলাম!। রেজাল্টের দিনটি ছিলো আমার জন্য মুক্তির দিন,দুশ্চিন্তা,অপমানের দিন শেষ,স্বপ্ন পূরণ হয়েছে বাবা-মায়েরও, তারা আজ গর্বিত। এই ছিল ভর্তিযুদ্ধের সময়ে আমার কাহিনী। অনেকের জন্য সময়টা এত বেশি ভয়াবহ যে আমার কাহিনী সে তুলনায় হাস্যকর। তুলনামুলক গরীব পরিবারের ছেলেমেয়েদের অনেকে ভালো জায়গায় ভর্তি হতে চায় তাদের পরিবারের ভার নেবার জন্য, আমি হয়তো বাপের টাকা খরচ করে ভালো কোনো প্রাইভেটে পড়তে পারবো, কিন্তু অনেকে এ ভর্তিযুদ্ধ পার হতে না পারলে হয়তো আর পড়ালেখাই করতে পারবেনা। অনেক মেয়েদের বাবা-মা মেয়ে ভালো জায়গায় চান্স না পেলে কোনোমতে একটা ছেলে খুজে বিয়ে দিয়ে দিবে। মুক্তমনার লেখক লীন রহমান আমার ফেসবুক স্ট্যাটাসে কমেন্ট করেছেন “আমি সেই প্রেশার ভালমত জানি, চান্স না পেলে আমার বিয়ে হয়ে যেত…জীবন শেষ হয়ে যেত…তখনকার অনিদ্রা আজো ভাল হয়নি। আমি খালি ভাবি, এই কাহিনির কারণে একজন স্টুডেন্টও যদি ঝরে পড়ার পর লেখাপড়া ছেড়ে দেয়, বা ড্রাগ এডিক্টেড হয়ে যায় বা সুইসাইড করে তার দায় কে নিবে?”। বাংলাদেশে এটাই হলো বাস্তবতা,১-২ ঘন্টার এই পরীক্ষা একটি জীবনকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায় বা সোজা ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দেয়, মাঝামাঝি পথ খুজে নেয়া খুব কঠিন। যে জন্য এসব লেখা,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ বিভাগের পরীক্ষার উত্তরপত্র কিছু সমস্যার জন্য একবার রেজাল্ট বাতিল করা হয়েছে,তারপর আবার রেজাল্ট দিয়েছে,তারপর পুরো পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নেবার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমার পরীক্ষার সময় যদি এ ঘটনা ঘটতো তাহলে কেমন হতো চিন্তা করলেই আতংক লাগছে,আর এজন্যই এ লেখা লিখতে বসা, রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করার যোগ্যতা নেই তাই লিখেই করার চেষ্টা করছি। অনেকে ঢাবিতে চান্স পাবার পর অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েও ফর্ম জমা দেয়নি। নতুন পরীক্ষায় চান্স না পেলে সে কোথায় যাবে? মানুষের জীবনে ১টি বছর এতো সস্তা? ভর্তি পরীক্ষার গুরুত্ব জানার পরেও কিভাবে এসব কাজে ভুল থেকে যায়? মানুষ মাত্রই ভুল করে, কিন্তু এই ভুল ক্ষমার অযোগ্য। যেসব শিক্ষকদের ভুলে এটা হয়েছে তাদের কোনো যোগ্যতা নেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার,শিক্ষকতা পেশার কলংক আপনারা, আপনারা কি জানেন আপনারা কয়টি জীবন এলোমেলো করে দিয়েছেন? হতভাগা শিক্ষার্থীদের কারো যদি এই লেখা চোখে পড়ে তাদের খালি বলবো,ভেঙে না পড়ে সামনে এগিয়ে যাও, কখনো হার মেনে নিওনা।

Talk Doctor Online in Bissoy App

পাস নয় পাশ, ক্রোচিং নয় কোচিং। আগে বানান গুলো ঠিক করেন। মেইন বই ঠিক মত পড়েন। বিজ্ঞান বিভাগ হলে বেশি করে মেইন বই পড়ুন। বড় বড় অধ্যায় গুলো ছোট ছোট করে নোট করে রাখুন। বুঝে বুঝে পড়ুন সরকারী ভার্সিটি তেই চান্স পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ

Talk Doctor Online in Bissoy App