আল্লাহ সুদকে হারাম করেছেন এবং ব্যাবসাকে হালাল করেছেন। বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি ইসলামী ব্যাংক আছে। যে সব ইসলামী ব্যাংক শরীয়ত অনুযায়ী ব্যাবসা করে তাদের সাথে লেনদেন করা হালাল। এই ব্যাপারে ভাল ভাবে খোজ নিয়ে তবে টাকা রাখা যায়। কোন সুদী ব্যাংকে টাকা রাখা ঠিক না। কারণ এর ফলে তাদের সুদের ব্যাবসা এবং সুদি ব্যাংকের ব্যাবসা বেড়ে যাবে। তবে কোন সুদী ব্যাংকে টাকা রাখলে যেই টাকা সুদ হিসেবে পাওয়া যাবে, সেই সুদের সমপরিমান টাকা কোন রকম ছোয়াবের নিয়ত ছাড়া মিসকিনদের দিয়ে দিতে হবে। এতে কোন গুনা হবে না। আর সুদের টাকা রাস্তাতেও ফেলতে পারবেন না, কারণ এই টাকা খারাপ লোকের হাতে পরলে তারা নিজের সার্থে সমাজের ক্ষতির জন্য উক্ত টাকা ব্যায় করবে। ফলে এটা সমাজের জন্য আরো ভয়ংকর হয়ে উঠবে। আপনি যদি ব্যাংক থেকে সুদের টাকা তুলে না নেন, তাহলে সুদি ব্যাংক গুলো ব্যাবসায়ে বেশী বেশী লাভ করবে। এবং তারা সমাজে আরো বেশী প্রভাবশালী হয়ে উঠবে। তখন সবাই ইসলামী ব্যাংক বাদ দিয়ে সুদি ব্যাংকের সাথে বেশী করে ব্যাবসা করবে এবং আরও বেশী সুদী ব্যাংক গড়ে উঠবে। এর ফলে ইসলামী ব্যাংক অস্তিত্বের সংকটে পরবে আর সুদি ব্যাংক আমাদের মুসলমানদের গিলে খাবে। আবার ব্যাংকে সুদের টাকা পড়ে থাকলে, এই টাকা তারা নিজেরা তুলে নিয়ে ইসলামের বিপক্ষে বা সমাজের জন্য ক্ষতিকর হয় এমন সব কাজেও ব্যাবহার করতে পারে। তাই মুসলমানদের সার্বিক সার্থেই সুদি ব্যাংক বাদ দিয়ে, ইসলামী ব্যাংকের সাথে বেশী করে ব্যাবসা করা উচিত। ইসলামী ব্যাংক ইসলাম নিয়ে ব্যাবসা করেনা, বরং মুসলমানদেকে হলাল ভাবে আর্থিক লেনদেনে সাহায্য করে এবং সুদমুক্ত ব্যাংকিং ব্যাবসা করে। আমরা যদি বেশী বেশী ইসলামী ব্যাংকের সাথে লেনদেন করি তবে সুদি ব্যাংকগুলো ধংস হতে বাধ্য। আর আমরাও একটি সুদমুক্ত অর্থনীতি গড়ে তুলতে পারব। বর্তমান বিশ্বে সুদি ব্যাংকের প্রভাব অত্যান্ত বেশী আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আইন-কানুনও সুদের উপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে। ফলে ইসলামী ব্যাংকগুলো একা পড়ে যাওয়ায়, তাদের পক্ষে সুদমুক্ত লেনদেন করা খুবই কঠিন, কখনো কখনো অসম্ভবও বটে। এই ভাবে ইসলামী ব্যাংকগুলোতে কোন সুদি আয় হয়ে থাকলে, সেগুলো থেকে গ্রাহকদেরকে কোন ধরনের মুনাফা দেয়া হয়না বরং তারা নিজেদের হালাল লাভ থেকে গ্রাহকদেরকে মুনাফা দেয়। সুদি ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের সাথে সরাসরি সুদের ভিত্তিতে লেনদেন করে থাকে। আর ইসলামী ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের সাথে এমন ভাবে লেনদেন করে যাতে সুদ না হয়। কেউ কেউ বলে ইসলামী ব্যাংকগুলো সরাসরি সুদ খায়না, একটু ঘুরায় খায়। এটা তাদের অজ্ঞতা। সুদ হলে ঘুরায়া খাওয়া লাগতো না, সরাসরি খেলেই হত। যেমন : ১/ কেউ ইসলামী ব্যাংকগুলোতে টাকা রাখলো, এর মানে সে ইসলামী ব্যাংকের ব্যাবসাতে লাভ-লোকসানের ভিত্তিতে টাকা বিনিয়োগ করলো। কাজেই আপনার প্রাপ্ত লাভ হালাল। ২/ আবার কাউকে ব্যাবসায়ীক উদ্দেশ্য ইসলামী ব্যাংকগুলো টাকা দিলো, এর মানে এই নয় যে ব্যাংক তাকে সুদে ঋণ দিল। এখানে আপনি যেই পণ্য বা সেবা কিনতে চাইবেন, সেটাই মাঝ খান থেকে ইসলামী ব্যাংক কিনে নিয়ে আপনার কাছে লাভে বিক্রি করবে। এভাবেই ইসলামী ব্যাংকগুলো হালাল ভাবে লাভ করে। আরও মনে রাখতে হবে ইসলামী ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের সাথে ব্যাবসা করে, কিন্তু গ্রাহকদের ব্যাবসাতে সাধারণত অংশ নেয়না। তাই গ্রাহকদের নিজেদের ব্যাবসায়িক লাভ-ক্ষতি তার নিজের, এটা ইসলামী ব্যাংকের লাভ-ক্ষতি না। অনেকে বলে ইসলামী ব্যাংকগুলোতে ক্ষতি হয়না কেন। দেখুন, সমস্ত ক্ষতি সরকারী ব্যাংকগুলোতে হয়, কিন্তু কোন বেসরকারী ব্যাংকেই তাদের উন্নত এবং সতর্ক ব্যাবস্থারপনার জন্য বেশী একটা ক্ষতির শিকার হতে হয় না। ইসলামী ব্যাংকগুলো অনেক বেশী সতর্ক ভাবে লেনদেন করে, তাদের ঋণ খেলাপী সবচেয়ে কম, তাই তাদেরকে ক্ষতির শিকার হতে হয়নি। বাংলাদেশে একদল লোক আছে, যারা ভারতের দালাল, মুসলিম বিদ্বেষী এবং চেতনা বিক্রি করে খায়। এরা ইসলামের সবকিছুর মধ্যেই জামাতের গন্ধ পায়, আর বোমাবাজি করে নিরীহ মুসলমানদেরকে মেরে ফেলে। আর একদল আছে যারা গোপনে গোপনে ইহুদী-খ্রীস্টানদের এজেন্ট , আর থাকে প্রকাশ্যে একেবার মুসলিম বেশে। তারাও ইসলামের নামে বোমাবাজি করে নিরীহ মুসলমানদেরকে মেরে ফেলে। নিজের ইহকাল আর পরকালের ভাল চাইলে এই দুটি দল থেকে নিজেকে বাচিয়ে রাখুন। আর এর জন্য ইসলামকে এবং চারপাশের জগৎকে ভালভাবে জানুন।