দশ বছর বয়সের সময় পড়াশোনা ছাড়া আমরা আর কি করতাম তা কি কারো সঠিকভাবে মনে আছে? হয়তো টিভিতে কার্টুন দেখা, বাইরে বন্ধুদের সাথে খেলাধূলা করা, গল্পের বই পড়া- এই সাধারণ কাজগুলোই ছিল সবার তালিকায়। অনেকের হয়তো আকাশে প্লেন উড়তে দেখে স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে পাইলট হবার। কিন্তু সেই বয়সে যেমন কেউ প্লেন চালাতে পারতো না, তেমনি বড় বড় বিজ্ঞানীদের আবিষ্কারের গল্প শুনলেও কেউ আর নতুন কিছু আবিষ্কার করতে পারতো না। আর এই অসাধ্য কাজটিই সাধন করেছিলো আমেরিকার মাত্র দশ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী; নাম যার ক্লারা ল্যাজেন। অতটুকু বয়সেই সে আবিষ্কার করেছিলো সম্পূর্ণ নতুন এক অণু, যার কি না রয়েছে অপরিসীম সম্ভাবনা। আর দেরী না করে চলুন টাইম মেশিনে করে প্রায় ২ বছর আগে, ২০১২ সালের শুরুর দিক থেকে ঘুরে আসা যাক; জেনে নেয়া যাক ক্লারা ল্যাজেনের সেই অসাধারণ আবিষ্কারের কাহিনী... ক্লারা তখন কানসাস সিটির একটি স্কুলের ফিফথ গ্রেডের এক ছাত্রী। তার সায়েন্স টিচার কেনেথ বোয়েহার একদিন ক্লাসে ঢুকলেন কিছু অণুর বল-স্টিক মডেল নিয়ে। উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীরা যাতে বিভিন্ন অণুর গাঠনিক সংকেত সঠিকভাবে আয়ত্ব করতে পারে সেটা নিশ্চিত করা। তিনি যথারীতি শিক্ষার্থীদের মাঝে সেগুলো বিতরণও করলেন। কিছুক্ষণের মাঝেই ঘটলো সেই বিস্ময়কর ঘটনা। ক্লারা তার কাছে থাকা মডেলটিতে কার্বন, নাইট্রোজেন আর অক্সিজেন পরমাণুগুলো এক জটিল উপায়ে সাজালো। তারপর বোয়েহারের কাছে জানতে জানতে চাইলো, সে কি কোনো নতুন অণু বের করে ফেলেছে কি না সে ব্যাপারে। বোয়েহার নিজেও এ ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলেন না। তাই তিনি মডেলটির ছবি তুলে সেটি পাঠিয়ে দিলেন Humboldt State University তে তার এক কেমিস্ট বন্ধুর কাছে। সেই বন্ধুই জানালেন সেই বিস্ময়কর খবর, ক্লারার আবিষ্কার করা অণুটি একেবারেই নতুন। Tetranitratoxycarbon- এই ছিলো ক্লারার আবিষ্কৃত অণুটির নাম। এই নতুন অনুটির সাথে আবার গঠনে মিল আছে নাইট্রোগ্লিসারিনের। সেই সাথে এর আছে শক্তি সঞ্চয় করে রাখার এক কৌশল। এই অণুটি প্রকৃতিতে পাওয়া যায় না। তাই একে কেবলমাত্র গবেষণাগারেই প্রস্তুত করা সম্ভব। আর ঠিকভাবে সংশ্লেষণ করা গেলে এটিকে শক্তিশালী বিস্ফোরক তৈরির উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। ক্লারার এ অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ বোয়েহারের সেই বন্ধু, রবার্ট যোয়েলনার, ক্লারা আর কেনেথ বোয়েহারকে এই অণুটির ওপর লেখা একটি রিসার্চ পেপারে কো-অথর হিসেবে লিপিবদ্ধ করেন। মাত্র দশ বছর বয়সে এমন আবিষ্কার! ভাবতে সত্যিই অবাক লাগে। বোয়েহার পরে বলেছিলেন, ক্লারার এই আবিষ্কার তার স্কুলের ছেলে-মেয়েদের মাঝে বিজ্ঞান আর রসায়ন নিয়ে একটি আলোড়ন তুলতে সক্ষম হয়েছিলো। আর এই আবিষ্কার ক্লারাকেও বায়োলজি আর মেডিসিনের মতো সাবজেক্টের প্রতি করে তুলেছিলো আগ্রহী... সূত্রঃ http://www.popsci.com
Share with your friends
Call

Clara Lazen

Talk Doctor Online in Bissoy App