ঘাম বেশি না কম হবে তা কিছুটা নির্ভর করে বংশগতির ওপর। কিছুটা পরিবেশের ওপর। অনেকটাই শারীরিক পরিশ্রমের ওপর এবং মানসিক অবস্থা অর্থাৎ উৎকণ্ঠা, টেনশন আছে, না মানসিক ধৈর্যের অধিকারী তার ওপর। উদাহরণ হিসেবে ক্রিকেট খেলার কথা ভাবা যায়। যেমন- মাঠে অত্যন্ত পরিশ্রম করতে হচ্ছে প্লেয়ারদের। তাই তারা প্রচণ্ড ঘামছেন। তাদেরই সহ-খেলোয়াড় ব্যাট হাতে প্যাড পায়ে তৈরি। উত্তেজনায় কপালে স্বেদবিন্দু। অন্যদিকে বাড়িতে টেলিভিশনের পর্দায় যারা খেলা দেখছেন তারাও উত্তেজিত। বলাই বাহুল্য এরাও ঘামছেন, তবে পরিমাণে কম। তবে কম-বেশি যাই হোক না কেন, ঘাম সবারই হয়। আরবে ঘাম হয় না কেন এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। ঘাম হয় ঠিকই, কিন্তু তাপমাত্রা অত্যন্ত বেশি বলে সঙ্গে সঙ্গে তা শুকিয়ে যায়। ঘাম হয়েছে বোঝার আগেই ঘাম উধাও। এই কাণ্ডই চলে চক্রাকারে। বাংলাদেশের বাতাসের আর্দ্রতা ঘামকে সহজে শুকাতে দেয় না। ঘামে জবজবে হয়ে থাকতে হয়। এটা কিন্তু একপক্ষে ভালো। কেননা বেশি ঘাম হয় বলেই গরমে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কম থাকে। কিন্তু আরবে ঘাম কম হওয়ায় শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে যে কোনো সময়। আর তার অবশ্যম্ভাবী ফল হিট স্ট্রোক। অতিরিক্ত ঘাম কমানোর কিছু উপায়:* সারাদিন বেশি পানি পান করতে হবে। এতে শরীরের তাপমাত্রা ঠিক থাকবে। * গোসলের সময় ‘অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল’ সাবান ব্যবহার করতে হবে। * নাইলন ও পলিয়েস্টার কাপড়ের পোশাক ঘাম শোষণ না করে উল্টো ঘাম আটকে রাখে। তাই সহজেই ঘাম শুষে নেয় এমন কাপড়, যেমন: সুতি ও সিল্কের তৈরি পোশাক পরতে হবে। * ডিওডরেন্ট বা অন্য ঘাম প্রতিরোধক লাগানোর সময় শরীর ঠিকভাবে শুকিয়ে নিতে হবে। * মসলাযুক্ত খাবার ঘামের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। তাই মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে যেতে হবে। * মাথার ত্বককে ঘাম থেকে রক্ষা করতে ‘ড্রাই’ শ্যাম্পু ব্যবহার করা যেতে পারে। * ধূমপান, অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন নিলে স্বাভাবিকের চেয়ে শরীর ঘামে বেশি। তাই যতটা সম্ভব এসব পরিহার করতে হবে। * অতিরিক্ত ঘামের জন্য দায়ী বাড়তি ওজন। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। * মানসিক চাপ অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার অন্যতম কারণ। * পানি সমৃদ্ধ তাজা ফল ও শাক-সবজি প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে। * এছাড়া বুকে ব্যাথা, দ্রুত হৃদস্পন্দন, নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা বা হঠাৎ ওজন কমে যাওয়ার কারণে অতিরিক্ত ঘাম হলে, সময় নষ্ট না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।