সাধারণত মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৬ আর ছেলেদের ক্ষেত্রে ১৮ বয়সের পর লম্বা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। তবে বলা হয়ে থাকে ২০ বছরের পর আর লম্বা হয় না । কারো কারো মতে ২৫ এর পর গ্রোথ আর হয়না। বন্ধ হয়ে যায়। সত্যি বলতে কি লম্বা হওয়াটা যেহেতু বংশগত বা জেনেটিক ফ্যাক্টর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং বয়স যদি ২৫ এর বেশি হয়ে থাকে তবে বিশেষ কিছু করার থাকে না। তবে যদি বয়স ২০ এর নিচে হয় , বিশেষ করে যারা শিশু বা বয়ঃসন্ধিকাল চলছে যাদের, তাদের জন্য কিছু ডায়েট বা ব্যায়াম করলে উপকার পাওয়া সম্ভব। তাই যাদের বংশে খাটো হওয়ার প্রবণতা আছে তাদের বাচ্চাদের ছোটবেলা থেকে যত্ন নেয়া উচিত্ । ০১. সুষম খাদ্য গ্রহণ করাঃ এক জন লোক অনেক খাটো দেখায় যদি তার শরীর ফাঁপা থাকে। তাই ফিট থাকতে হয় সঠিক খাবার খেয়ে। - প্রচুর পরিমাণে লীন প্রোটিন খেতে হবে। যেমন সাদা ফার্মের মুরগীর মাংস, মাছ ও দুগ্ধজাত খাবারে প্রচুর লীন প্রোটিন থাকে। যা পেশী গঠনে সাহায্য করে ও হাড্ডির ক্ষত পূরণ করে। - কার্বোহাইড্রেট খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে। যেমন – ভাত, আলু, কেক ইত্যাদি। অতিরিক্ত মিষ্টি ও সোডা থেকে দূরে থাকুন। - প্রচুর ক্যালসিয়াম খান যা সবুজ শাকসবজীতে পাওয়া যায়। দুধ, দই -এ প্রচুর ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। - যথেষ্ট পরিমাণে জিংক থেতে হবে। জিংক পাওয়া যায় কুমড়া, ওয়েস্টার ও গম, ও চিনাবাদামে। - ভিটামিন ডি খেতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে। এটি পেশী ও হাড্ডি গঠনে ভূমিকা পালন করে। এর অভাবে শিশুদের গ্রোথ ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং তরুণীদের ওজন বাড়ে। মাছে, মাশরুমে ও সূর্যের আলোতে পাওয়া যায় ভিটামিন ডি। ০২. ব্যায়ামঃ তরুণরা বিশেষ করে বয়ঃসন্ধি কালে হাইট বাড়ানোর ব্যায়াম করে। লাফান, যেমন – দড়ি লাফান, সাঁতার কাটুন, সাইকেল চালান, প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট। জিমে জয়েন করুন পারলে। খেলাধুলা করুন। ০৩. ঘুমঃ পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান প্রতিদিন। ঘুমের সময় শরীর বাড়ে। তাই পর্যাপ্ত ঘুমালে শরীর লম্বা হওয়ার মতো সময় পায়। কমপক্ষে ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমান যদি আপনার বয়স ২০ এর কম হয়। শরীরের হরমোন গভীর ঘুম এর সময় উত্পন্ন হয়। পিটুইটারী গ্লান্ড থেকে গ্রোথ হরমোন বের হতে সাহায্য করে। ০৪. গ্রোথ যেসব কারণে প্রভাবিত হয় তা পরিহার করার চেষ্টাকরুন। আপনার ন্যাচারাল হাইট যাতে পরিবেশ গত কারণে না কমে তার চেষ্টা করবেন। এলকোহল বা স্মোকিং করা যাবেনা। এগুলো কম বয়সে খাওয়া উচিত্ নয়। যারা অপুষ্টিতে ভোগেন তাদের স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি খাটো দেখায়। যারা একটু খাটো তারা সোজা হয়ে থাকার চেষ্টা করবেন সব সময়। কুঁজো হয়ে হাঁটবেন না। ঘাড়টা একটু পেছনে বাঁকিয়ে সোজা হয়ে হাঁটার অভ্যেস করুন। এতে কিছুটা লম্বা লাগবে। একটু টাইট কাপড় পরার চেষ্টা করবেন। নিজেকে চিকন দেখাতে পারলে কিছুটা লম্বা লাগবে। ডার্ক রঙের ড্রেস যেমন – কালো, নীল, সবুজ পরার চেষ্টা করবেন। মেয়েরা বাইরে গেলে হাইহিল পরবেন। এছাড়া ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন, যদি দেখেন যে আপনার সন্তানের সঠিক গ্রোথ হচ্ছেনা। ডাক্তার রা অনেক রকম টিট্টমেন্ট দিয়ে থাকেন। গ্রোথ হরমোন থেরাপি ছোট বেলায় নিলে কিছুটা উপকার পাওয়া যায়। তাই আপনার শিশুর সঠিক গ্রোথ হচ্ছে কিনা তা জানতে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ রাখুন।
লম্বা হওয়া না হওয়া জন্মগত, জেনেটিক্যাল ব্যাপার। সাধারণত ২১ থেকে ২৩ বছর বয়স পর্যন্ত মানুষ লম্বা হতে পারে। সুতরাং আপনার এখনো সময় রয়েছে। নিয়মিত খেলাধূলা করতে হবে, সুষম খাবার খেতে হবে, পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। লম্বা হওয়ার জন্য সাঁতার খুব ভালো একটা ব্যায়াম, কেননা এতে একই সময়ে শরীরের সমস্ত অঙ্গ-প্রতঙ্গের ব্যায়াম হয়। তবে আগেই বলেছি লম্বা হওয়া না হওয়া জন্মগত, জেনেটিক্যাল ব্যাপার। সুতরাং কোনো ডাক্তার, হেকিম, কবিরাজে কাজ হবে না। বিষয়টিকে পজিটিভলি নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যান।