বর্তমান সময়ে হার্টের সমস্যা
এতোটাই প্রকোপ যে
পৃথিবীতে প্রতিদিন শুধুমাত্র হার্ট
এ্যাটাকের কারণে লাখ লাখ মানুষ মারা যায়। হার্ট
এ্যাটাক মানুষকে পঙ্গু ও বিকলাঙ্গও করে
দেয়, তাই আগে থেকেই হার্টকে সুস্থ ও
শক্তিশালী রাখতে পালন করুণ কিছু সহজ নিয়ম।
এতে একদিকে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে
অন্যদিকে হার্টও ভালো থাকবে। চলুন
জেনে নেই নিয়মগুলো----
নিয়মিত দৌড়ান:
এটা একটা সাধারণ তরিকা। তবে হার্ট ভালো
রাখতে হলে প্রতিদিন কমপক্ষে তিন
কিলোমিটার করে দৌড়ানোর উপদেশ
দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এ ক্ষেত্রে দৌড় শুরুর
আগে এবং শেষে হার্ট রেটের সংখ্যা
লিপিবদ্ধ করারও অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা।
ধূমপান ছেড়ে দিন:
বলা হয়ে থাকে ধূমপানে বিষপান। কেননা এই
অভ্যাসটি হার্টের সমস্যার মতো ভয়াবহ
অসুখের দিকে ঠেলে দেবে আপনাকে।
ওজন কমান :
আপনার শরীরের মাত্রারিক্ত ওজন হৃদয় বহন
করতে পারবে না। তাই ওজন কমান। ওজন
নিয়ন্ত্রণে আনুন। হার্টের সমস্যার সঙ্গে
অন্য অনেক শারীরিক জটিলতাও পালাবে।
দূষিত বায়ু এড়িয়ে চলুন:
সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বে দূষিত বায়ুর পরিমাণ
বেড়েছে। আবহাওয়াবিদদের ভাষ্য মতে,
শীতকালে সকালের দিকে বাতাসে দূষিত
পদার্থের পরিমাণ বেশি থাকে। সাধারণত
বাতাসে থাকা অতিরিক্ত ধাতব পদার্থ নিঃশ্বাসের
সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে
স্কন্ধদেশের ধমনিপ্রাচীরকে আরো পুরু
করে তোলে, যে কারণে রক্ত সঞ্চালন
বাধাগ্রস্ত হয়।
মুঠোর ব্যায়াম করুন:
টানা চার সপ্তাহের মুঠো সঞ্চালন-প্রসারণ
ব্যায়ামও আপনার রক্তচাপ কমাতে সাহায্য
করবে। হাইপারটেনশন জার্নাল জানিয়েছে,
এর মাধ্যমে আপনি রক্তের ঊর্ধ্বচাপ কমিয়ে
আনতে পারেন প্রায় ১০ শতাংশ হারে।
ডিম খান:
যাঁরা বলছেন, বেশি বেশি ডিম খেলে
কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ে তাঁদের
জন্য দুঃসংবাদ। কেননা ব্রাজিলীয় গবেষকরা
জানিয়েছেন, ডিমের কুসুমে থাকা ভিটামিন ই,
বি-১২ এবং ফলেট করোনারি আর্টারিকে
পরিষ্কার রাখে। তবে কেউ যদি দিনে চারটি
করে ডিম খেতে থাকেন, তবে তাঁকে
এসব গবেষণার কথা ভুলে যেতে হবে।
শ্বাসের ব্যায়াম করুন:
না, নিজের ইচ্ছামতো গতিতে শ্বাস নিতে কিংবা
ছাড়তে বলা হচ্ছে না। চিকিৎসকদের পরামর্শ
অনুযায়ী প্রতিদিন শ্বাসের ব্যায়াম করুন।
উদাহরণ হিসেবে প্রথমে ৩০ সেকেন্ডে
ছয়টি পূর্ণাঙ্গ শ্বাস-প্রশ্বাস সম্পন্ন করুন।
এরপর সময়ের পরিমাণ কমাতে থাকুন। এ ব্যায়াম
আপনার হৃদ সংকোচনসংক্রান্ত চাপ কমাতে
ধন্বন্তরি ভূমিকা রাখবে।
সময়মতো ঘুমান:
যাদের অনিদ্রা নামক রাজরোগ আছে, তারা
অন্যদের চেয়ে ৪৫ শতাংশ বেশি হার্ট
এটাকের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। তাই
প্রয়োজন অনুযায়ী ঘুমের জন্য প্রতিদিন
বেশি বেশি শারীরিক পরিশ্রম করার আহ্বান
জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
কম চর্বি যুক্ত খাবার খান:
খাবারে থাকা চর্বি হৃৎপিণ্ডকে অকার্যকর করে
তুলতে ভূমিকা রাখে। সুতরাং খাদ্য তালিকা
থেকে নিয়মিতভাবে চর্বির পরিমাণ কমাতে
থাকুন, তবে অবশ্যই পুষ্টি তালিকার নিুক্রম
ছাড়িয়ে যাবেন না।
এনার্জি ড্রিংকস থেকে বিরত থাকুন:
শক্তিবর্ধক এসব পানীয়কে ‘শত্রু’ হিসেবে
গণ্য করুন। কেননা এসব পানীয়
কোনোভাবেই আপনার কোনো
ধরনের উপকারে আসবে না, উল্টো
রক্তচাপ বাড়িয়ে মুহূর্তেই আপনাকে ধসিয়ে
দেবে।
গান গান:
হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে গলা ছেড়ে গান
গাইতেও উৎসাহিত করেছেন
চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, দলবদ্ধ
সংগীত কিংবা কারাওকে হাসিখুশি রাখে
হৃদযন্ত্রকেও।
সামাজিক যোগাযোগ বাড়ান:
একা বাস করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা অন্যদের
তুলনায় বেশি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে থাকে।
তাই অন্যদের সঙ্গে কথা বলুন, হাত মেলান,
জড়িয়ে ধরুন এবং আরো বেশি সামাজিক হতে
চেষ্টা করুন; নিজের স্বার্থেই।