শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

১২৪ নম্বর আয়াতে বলেছেন,

 وَإِذِ ابْتَلَى إِبْرَاهِيمَ رَبُّهُ بِكَلِمَاتٍ فَأَتَمَّهُنَّ قَالَ إِنِّي جَاعِلُكَ لِلنَّاسِ إِمَامًا قَالَ وَمِنْ ذُرِّيَّتِي قَالَ لَا يَنَالُ عَهْدِي الظَّالِمِينَ (124) 

"যখন ইব্রাহীমকে তাঁর পালনকর্তা কয়েকটি বিষয়ে পরীক্ষা করলেন, অতঃপর তিনি তা পূর্ণ করে দিলেন, তখন পালনকর্তা বললেন, আমি তোমাকে মানবজাতির নেতা করব। তিনি বললেন, হে আল্লাহ! আপনি আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও (ইমাম) নিযুক্ত করুন। তিনি বললেন, আমার অঙ্গীকার অত্যাচারীদের পর্যন্ত পৌঁছাবে না।" (২:১২৪) পয়গম্বরদের মধ্যে হযরত ইব্রাহীম (আ.) ছিলেন বিশেষভাবে মর্যাদাবান। তাঁর নাম পবিত্র কোরআনের ২৫টি সূরায় ৬৯ বার এসেছে এবং তাকে মহানবী (সা.)-এর মতোই আদর্শ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এই সূরাতেই এই আয়াত থেকে শুরু করে ১৮টি আয়াতে পবিত্র কাবাঘরের প্রতিষ্ঠাতা আল্লাহর এ নবীর কথা বলা হয়েছে। হযরত ইব্রাহীম (আ.) আল্লাহর বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর ইমামত লাভ করেন। এই আয়াতে 'কালিমাত' বলে যে শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, তার মাধ্যমে হযরত ইব্রাহীম (আ.)-এর ওপর অর্পিত কিছু কঠিন দায়িত্বের কথা বলা হয়েছে যা কিনা তিনি সফলভাবে সম্পন্ন করেছিল। ওইসব কঠিন দায়িত্বের কয়েকটি দিক হচ্ছে, হযরত ইব্রাহীম (আ.) তার গোত্রের মধ্যে একমাত্র একত্ববাদী ছিলেন। কিন্তু তিনি একাই অসীম সাহসিকতার সাথে শিরক্‌ ও মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে সংগ্রামে নামেন। মূর্তিগুলো যেখানে রাখা হতো একদিন সেখানে ঢুকে তিনি সমস্ত মূর্তিগুলো ভেঙ্গে ফেলেন। মূর্তি ভাঙ্গার দায়ে তাকে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করা হয়। কিন্তু হযরত ইব্রাহীম (আ.) দৃঢ় ঈমান ও স্থিরচিত্তে অগ্নিকুণ্ডে প্রবেশ করলেন। কিন্তু সবাই লক্ষ্য করল আল্লাহর ইচ্ছায় আগুন ঠাণ্ডা হয়ে গেল এবং তার কোন ক্ষতিই হলো না। হযরত ইব্রাহীমের জন্য আল্লাহর আরেকটি পরীক্ষা ছিল, তার পুত্র সন্তানকে কোরবানীর নির্দেশ। দীর্ঘদিন সন্তান থেকে বঞ্চিত থাকার পর আল্লাহ তাকে পুত্র সন্তান ইসমাইলকে দান করলেন। আল্লাহর নির্দেশে বহুদিনের কাঙ্ক্ষিত পুত্র সন্তানকেই তিনি কোরবানী করতে উদ্যত হয়েছিলেন। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় ইসমাইলের পরিবর্তে কোরবানী হয় এক পশু। এভাবে বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর আল্লাহতালা তাঁকে ইমামতের মর্যাদা দান করলেন। হযরত ইব্রাহীম (আ.) আল্লাহর কাছে তার বংশধরদের জন্যেও ইমামতের মর্যাদাদানের প্রার্থনা করেন৷ আল্লাহপাক তার এই প্রার্থনার জবাবে বললেন, ইমামতের এই মর্যাদা বংশানুক্রমিক নয় বরং যার যোগ্যতা আছে সেই এ মর্যাদার অধিকারী হতে পারবে। রাসূলের দায়িত্ব হলো- আল্লাহর বাণী ও বিধি-বিধান পৌঁছে দেয়া এবং জনগণকে ভালো কাজের সুসংবাদ ও মন্দ কাজের ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া। অপরপক্ষে ইমামের দায়িত্ব হলো সমাজে ওই বিধি-বিধান বাস্তবায়ন করা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। সূরা বাকারাহ'র এ আয়াতে স্পষ্টভাবে বলে দেয়া হয়েছে যে, ইমামত আল্লাহর অঙ্গীকার ও আমানত, যা জালিম, অন্যায়কারী ও গুনাহগার ব্যক্তিরা পাবে না। এ আয়াত থেকে বুঝা যায়, যারা জীবনে গুণাহ করেছে তারা ইমামতের দায়িত্ব পেতে পারে না।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ