বর্তমান সময়ের সবথেকে বড় ভয়াবহ দুর্যোগ এর নাম নোভেল করোনা ভাইরাস ( কোভিড-19 ) । এই শতাব্দীর সব থেকে ভয়াবহ ভাইরাস বলা চলে। মানব ইতিহাস এ পর্যন্ত যত ভাইরাস এর আক্রমন হয়।

কোন ভাইরাসই এক সাথে এতো গুলো দেশে আক্রমন করতে পারে নি । কিন্তু এই ভাইরাস এমন একটি ভাইরাস যার প্রভাব কম বেশি সমগ্র দেশেই আছে। ইতিহাসের প্রথমবার সকল মানুষ এতো দিন ঘর বন্দি হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বাজায় রেখেছে।

চলুন জেনে নেই এই ভাইরাস এর যাবতীয় তথ্য কি এই ভাইরাস, কি দিয়ে এটা তৈরি , কি ভাবে ছড়ায়, এর ভাইরাসের উপসর্গ, এবং এর চিকিৎসা ও ঔষুধ সম্পর্কে সহজ ভাষায়.




কখনো কি ভেবেছেন মানুষ এতো কিছু তৈরি করেছে: মোবাইল, কম্পিউটার, ইন্টারনেট আরো কতো কি। বর্তমানে আপনি এই লেখাটি, যে ডিভাইস এ পড়ছেন ওইটাও মানুষই তৈরি করেছে।

এখন প্রশ্ন হলো মানুষ এর মাথায় এতো বুদ্ধি থাকা সত্ত্বেও কেনো করোণার ভ্যাকসিন তৈরি করতে এতো সময় লাগছে?

কেনইবা প্রত্যেকটি দেশের ইকোনোমি এর অবস্থা খারপ হওয়া সত্ত্বেও । সব দেশ লোক ডাউন কেন জারি করছে। কেনই বা সামাজিক দূরত্ব বাজায় রাখতে বলছে?




করোণা ভাইরাস কি?

এই ভাইরাস এই জন্য ভয়াবহ না, যে এই ভাইরাসের কারণে মানুষ মারা যাচ্ছে । এই জন্য ভয়াবহ কারন এই ভাইরাস এর Transmisson power অনেক Fast । এটি Human to Human অনেক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
কোরনা ভাইরাস Human Body to Human Body ছড়ায়।

এই ভাইরাস মানুষ এর শরীরে প্রবেশ করতে পারে তিনটি মাধ্যমে ১) চোখ ২) নাক ৩) মুখ। এই ভাইরাস শরীরে যাওয়ার পর । মানুষ এর Lung (ফুসফুস) সিস্টেম কে দূর্বল (Freez) করে দেয়। এর ফলে respiratory system Failed হয়। শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সমস্যা হয়।




How To DeFend the Virus:


এই ভাইরাস থেকে বাচার প্রাথমিক উপায় হলো । Effected লোক থেকে দূরত্ব বাজায় রাখা। আর এই কারনেই সকল দেশে লোকডাউন এবং স্যোসাল ডিস্টেন্স মেইন্টেন রাখার পরামর্শ দিচ্ছে।

কারন আপনি যত মানুষের সংস্পর্শে আসবেন তত বেশি করোণা হওয়ার চান্স থাকবে।




করোনার বিরুদ্ধে আমাদের শরীর কি ভাবে কাজ করে?

উদাহরণ স্বরুপ কম্পিউটার সিস্টেম কে বোঝানে হচ্ছেঃ

ধরুন আপনার কম্পিউটার অথবা ল্যাপটবে যখন কোন পেনড্রাইভ প্রবেশ করান । তখন আপনার কম্পিউটার এর থাকা এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ওই পেন ড্রাইভটি স্ক্যান করে। আর যদি কোন ভাইরাস পেয়ে থাকে তাহলে । ওই খান থেকে রিমুভ করে দেয়।

এই একই পদ্ধতি আমাদের শরীরেও হয়ে থাকে। ভাইরাস কে প্রোটেক্ট করার জন্য আমাদের শরীরে থাকে একটি ইমিউনিটি সিস্টেম। যা শরীরের ক্ষতিকর ভাইরাস,ব্যাকটেরিয়া এর বিরুদ্ধে কাজ করে।

কম্পিউটার এর ক্ষেত্রে যদি নতুন কোনো ভাইরাস তৈরি হয়। কিন্তু এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার, সেই ভাইরাস কে না চিনতে পারে । তাহলে সে ওই ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে পারবে না। এর ফলে ওই ভাইরাস কম্পিউটার সিস্টেম কে ক্ষতি করবে।


এই একই জিনিস করোনার ভাইরাস এর ক্ষেত্রে ও হয়ে থাকে। কারন এইটা একটা নতুন ভাইরাস। তাই আমাদের শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেম এর বুঝতে একটু বেশি সময় লাগছে।এ ভাইরাস কে কিভাবে Defend করতে হয়।


এই ভাইরাস এর বিরুদ্ধে লড়তে আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম,শরীরে একটি এন্টিবডি (antibody) তৈরি করবে। এবং এই এন্টিবডি দ্বারা আমাদের শরীর করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতে পারবে। কিন্তু এই এন্টিবডি তৈরি করতে আমাদের শরীর এর সময় লাগছে ৮-১০ দিন।


কিন্তু সব মানুষ এর ইমিউনিটি পাওয়ার এক নয় । তাই কারো ক্ষেত্রে এন্টিবডি তৈরি করতে কম/ বেশি দিন লাগতে পারে।


কিন্তু এই খানে সব থেকে বড় সমস্যা হলো । এতো দিনে করোণা ভাইরাস শরীরের প্রভাব দেখানো শুরু করে দেয়। এবং ইমিউনিটি সিস্টেম কে আরো দূর্বল করে দেয়।
তত দিনে ফুসফুস এ আক্রমন শুরু হয়ে যায়।

এই জন্য যাদের আগে থেকে ডায়বেটিস, ফুসফুস আক্রন্ত রোগী, তাদের ঝুকি বেশি কারন তাদের ইমিউনিটি সিস্টেম বেশি দুর্বল। এবং এ পযর্ন্ত দেখা গেছে যত মানুষ মারা গেছে তাদের বেশির ভাগই ডায়বেটিস, হাপানী রোগী।


বর্তমান সময়ে যেসব করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে তাদের ট্রিটমেন্ট দেওয়া হচ্ছে স্বাভবিক ফুলুতে যে ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়। যাতে ভাইরাস বাড়তে না পারে। আর ততক্ষন রোগীর শরীর এন্টিবডি তৈরি করার সময় পায়।

আর তাদের ইমিউনিটি সিস্টেম কে স্ট্রং করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। কারন এখন পযর্ন্ত করোনার ভ্যাকসিন এর পরিক্ষা চলছে। ভ্যাকসিন পেতে আরা কিছু দিন সময় লাগতে পারে।



ভ্যাকসিন কি ভাবে আবিষ্বার করে ?



এখন যদি বলেন এই ভ্যাকসিন কি ভাবে তৈরি করে ?

ভ্যাকসিন তৈরি হয় কোন একটি নিদিষ্ট ভাইরাস এর সেম্পল সংগ্রহ করে ।প্রথমে সেই ভাইরাস কে অনেক ছোট একটুরো করে। অথবা বলেতে পারেন সেই ভাইরাস কে Ineffective বানাবে। যাতে কারো শরীরে ওই ভাইরাস প্রবেশ করালে ওই ভাইরাস তেমন মারত্মক প্রভাব না ফেলতে পারে ।

এরপর যাদের ইমিউনিটি সিস্টেম ভালো,সেই সব লোকেদের শরীরে ইনজেক্ট করা হয়। এখনে, একটা জিনিস বলে রাখি প্রথমে অন্য কোন প্রানীর উপর এ ও এটা পরিক্ষা করা হয়।

এরপর সব ঠিক থাকলে তাদের শরীরে ৮-১০ দিন এর ভিওর ।ওই ভাইরাস প্রোটেক্ট করার জন্য একটি এন্টিবডি তৈরি হয়ে যায়।

তাদের শরীরে এন্টিবডি তৈরি হয়ে গেলে । তাদের শরীরের রক্ত সংগ্রহ করে সেই খান থেকে এন্টিবডি নিয়ে গবেষণা কর হয়। আর এই এন্টিবডির উপর ভিত্তি করে গবেষকরা ভ্যাকসিন তৈরি করে থাকে। যতটা সহজ করে বল্লাম ততটা সহজ নয় এটা।

কোন ভ্যাকসিন তৈরি করতে ৪টি আলাদা আলাদা ধাপ থাকে। এই ধাপ গুলো পেরিয়ে ভ্যাকসিন তৈরি হয়। তাই করোনার ভ্যাকসিন তৈরিতে এতো বেশি সময় লাগছে।

মানব ইতিহাসে আজ পযর্ন্ত এমন কোন ভ্যাকসিন তৈরি হয়নি যা, ১- ১.৫ বছরের ভিওর আবিষ্কার হয়েছে । কিন্তু বর্তমানে করোণার যে পরিস্থিতি, তাতে ভ্যাকসিন যত দ্রুত সম্ভব তৈরির চেষ্টা করছে অনেক গুলো দেশ।


করোনার ভ্যাকসিন তৈরিতে সময় লাগারন কারন:
কোন ভ্যাকসিন তৈরি করার জন্য অনেক গুলো ধাপ পার করতে হয় আর প্রতিটি ধাপে সময় লাগে ৩ মাস এর মতো । প্রথমে, ভাইরাসটি নিয়ে Analyis করবে। তারপর ভাইরাস টিকে আরো ছোট টুকরো করে Neutralize করবে।যাকে বলা হয় এন্টিজেনিক (antigenic)। যা ভাইরাস টির ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে দেবে। এরপর সেই ভাইরাস কোন প্রানীর শরীরে প্রদান করে।

৮-১০ দিন এর ভিওর যখন সেই প্রানীর শরীরের এন্টিবডি তৈরি হবে। সেই এন্টিবডি নিয়ে অন্য কোন প্রানীর শরীরে প্রদান করা হবে। যদি এই ধাপ সফল ভাবে সম্পন্ন হয় তাহলে এবার মানব শরীরের প্রদান করা হবে ওই ভাইরাস টি।

এরপর মানব দেহে যখন ওই ভাইরাস এর এন্টিবডি তৈরি হয় । ওই এন্টিবডি আবার অন্য কোন মানব দেহে প্রবেশ করিয়ে পরিক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা হয়। ওই ভাইরাস প্রবেশ করানোর পর মানব শরীরের আর কোন সাইড ইফেক্ট হয় কি না?

অন্য কোন রোগের সাথে ওই এন্টিবডি কি ভাবে রিয়াক্ট করে। অন্য কোন ক্যামিকাল এর সাথে কি ভাবে রিয়েক্ট করে। আরো অনেক কিছু বিশ্লেষণ করা হয়।

এরপর ওই এন্টিবডি থেকেই এন্টিডোর / ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়। এরপর ওই ভ্যাকসিন বিভিন্ন বয়সের মানুষ এর উপর পরিক্ষা করে দেখবে, বিভিন্ন দেশের মানুষ এর উপর পরিক্ষা করে দেখবে।

এরপর সবকিছু ঠিক থাকলে ,সেই সব রির্সাচ এর ফাইল জমা দিতে হয় WHO(World Health Orgination) এর কাছে। WHO সব কিছু বিচার বিবেচনা এবং পরিক্ষা করে দেখবে সব ঠিক আছে কি না। ঠিক থাকলে ভ্যাকসিন বাজারে ছাড়ার অনুমতি দিবে।


করোনা কি?



২০১৯ সালের ডিসেম্বার এর সময় হঠ্যাৎ করে মধ্য চীনের উহানে ,নিমোনিয়া ভাইরাস এর আক্রমন বাড়তে থাকে । কিন্তু অনেক রির্সাচ করার পর পাওয়া যায় এটা আগের কোন পরিচিত ভাইরাস। যা নাম করন করা হয় নভেল করোনা ভাইরাস।করোনা ভাইরাস ১৯৩০ সালে সর্বপ্রথম আবিষ্কৃত হয়। এটা বড় একটা ভাইরাস এর গুচ্ছ। এই ভাইরাসের গঠন গত দিক থেকে মনে হয় ।এটা কোন মুকুট (crown) এর মতো আর crown ল্যাটিন ভাষায় করোনা বলা হয়। এখান থেকেই এর নাম করন।




কোভিড-১৯ (COVID-19) কি?

তাহলে এই কোভিড-১৯ আবার কি? করোণা আর কোভিড-১৯ এর পার্থক্যই কি?
না কোভিড -১৯ আর করোনার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। কোভিড-১৯ (covid-19) কো অর্থ কোরনা , ভি এর অর্থ ভাইরাস , ডি এর অর্থ ডিজিজ আর যেহেতু এটা ২০১৯ এ আবিষ্কার হয়েছে তাই এর নাম করন করা হয়: Covid-19 বা করোনা। এই ভাইরাস মানব দেহে প্রবেশ করে ,শ্বাসনালীতে সংক্রামন ঘটায়।যার ফলে মানুষের স্বাভাবিক শ্বাস প্রশাস এর ব্যাঘাত ঘটায়। এর ফলে রোগীর মৃত্যুর ঝুকি বাড়ে। বিশেষ করে যাদের শরীরে ইমিউনিটি পাওয়ার দূর্বল তাদের সমস্যা বেশি হয়ে থাকে।

করোনা ভাইরাস এর গঠন?

আগেই বলা হয়েছে করোনা ভাইরাস একটা বড় ভাইরাসের সংগঠিত রুপ। এই ভাইরাস অনেক গুলো অংশ নিয়ে গঠিত।ভাইরাসটির তিনটি প্রধান উপাদান থাকে।

এই ভাইরাসের আছে বিশাল একটা RNA (রাইবো নিউক্লিক এসিড) । যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৮০-১৬০ Nanometers in Dia meters। এর কাজ হলো কোন জীবন্ত কোষ এ প্রবেশ করে ,ভাইরাস এর বংশ বৃদ্ধিতে সাহয্যে করা। এই সুবিশাল RNA এর কারনেই ভাইরাস এতো দ্রুত মানব দেহে ছড়ায় (প্রতিলিপি তৈরি করতে পারে)।

দ্বিতীয় উপাদানটি হলো প্রোটিন। এই প্রোটিন অন্য জিবন্ত কোষে আটকে গিয়ে সংক্রামিত করে। এবং কোষের ক্ষতি করে কোষে কে দূর্বল করে দেয়।
করোনা ৫ ধরনের প্রোটিন নিয়ে গঠিত :
১) ‍S Protine(Spike).
২) N Protine (Neucleocapsid)
৩) E Protine (Envelope)
৪) M Protine (Membrane)
৫) HE Protine (Hemaglutine Estersase)

*Spike Protine আর HE Protine হিউম্যান সেলে ভাইরাস প্রবেশ করতে সাহায্যে করে। এই প্রোটিন এর গঠন দেখতে মুকুট (crown)এর মতো হয়।



তৃতীয় উপাদন টি হলো Enveloped particles যা ভাইরাসের অনান্য অংশ গুলো সুসজ্জিত রাখতে সাহায্যে করে।


করোনা ভাইরাস এর ইতিহাস

করোনা ভাইরাসটি প্রথম আবিষ্কার হয় ১৯৩০ সালে। প্রথমদিকে এটি প্রানীর দেহে পাওয়া যায়। মুরগির মধ্যে পাওয়া যায় ব্রঙ্কাইটিস ভাইরাস হিসেবে। এরপর প্রথম বার ২০ এর দশকে মাথা নাড়া দেয়।



২০১৯ সালে প্রথমবার চীনের উহান শহরে এই ভাইরাসটি শনাক্ত করে। অনেকেই ধারনা করে, এই ভাইরাস টি এতো দশক ধরে প্রানীর দেহ থেকে প্রানীর দেহে ছড়িয়েছে। আর এই প্রানী দেহ থেকেই
মানুষ এর দেহে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। কারন চীনের ওই খাদ্যা অভ্যাসের কারনে।

ধারনা করা যায় বাদুড় থেকেই এই ভাইরাস মানব দেহে প্রবেশ করেছে। কারন উহান এর ওই শহরে বাদুড়, খরগোশ,সাপ বিক্রি হতো।

আবার অনেকে মনে করেন, এটা চীন সরকারের একটা চাল মাত্র তারা চেয়েছিল তাদের দেশের গরিব জনগনকে শেষ করে দিতে। তাই তারা কৃত্রিম ভাবে এই ভাইরাস তৈরি করেছে। এরপর সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও চীনের বিরুদ্ধে এমন কোন প্রমান এখনো পাওয়া যায় নি।কিন্তু অনেকের কাছে এটা চায়না ভাইরাস নামেও পরিচিত।

২০০৩ সালে এই ভাইরাসটির একটি প্রজাতি পাওয়া যায় SARS-COV । ২০০৪ সালে পাওয়া যায় HCOV-NL63। ২০০৫ সালে পাওয়া যায় HKU1। ২০১২ সালে ভাইরাসটির আর একটি প্রজাতি পাওয়া যায় MERS-COV। ২০১৯ সালে এসে আবার চীনে SARS-COV 2 পাওয়া যায় । যা বর্তমানে নোভেল করোনা নামে পরিচিত।



ভাইরাসের প্রকার ভেদ:
করোনা ভাইরাসের অনেক গলো প্রজাতি আছে। এর ভিওর মাত্র ৭টি প্রজাতি মানব দেহে রোগ সংক্রমণ করতে পারে। করোন বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। একটি হলো i) Respiratory
আর একটি হলো 2) Gastrointestinal।

Respiratory এর symptoms সর্দি, হাঁচি-কাশি , নিমোনিয়া । Respiratory এর প্রজাতির মধ্যে আছে 229E(আলফা করোনা ভাইরাস ), NL63 (আলফা করোনা ভাইরাস ),OC43(বিটা করোনা ভাইরাস),HKU1(বিটা করোনা ভাইরাস)

এই চারটি প্রজাতির করোনা ভাইরাস মানবদেহে সর্দি ,কাশি,নিমোনিয়ার উপর্সগ সৃষ্টি করে। ২০০৩ সালে করোনার এক প্রজাতি চীনে ছড়িয়েছিল SARS-COV(Severe acute respiratory Syndrome)। তাছাড় middle east এ ২০১২ সালে করোনার আর এক প্রজাতি MERS-COV(Middle East Respiratory Syndrome)।

আর বর্তমানে চীনে যে প্রজাতি পাওয়া গেছে ওটা হলো SARS-COV2। যা নাম করন করা হয় নোভেল করনা ভাইরাস।

করোনা ভাইরাস কি কি লক্ষণ

করোনা রোগীদের observ করে কিছু common লক্ষন দেখা গেছে। তা হলো
* জ্বর।
*শুষ্ক কাশি।
*অবসাদ।

আরো যে,Symptoms দেখা যায়।
*গলা ব্যাথা।
* শ্বাসকষ্ট।
*মাথা ব্যাথা।
* স্বাদ নেওয়ার ক্ষমতা হারানো।
*অঙ্গ বিকল হওয়া।
*ডায়রিয়া।
* শরীর ব্যাথা করা।
*পায়ের পাতা বর্নহীন হওয়া।
*ত্বকে ফুসকড়ি পরা।


করোনার উপসর্গ এর সাথে সাধারন ইনফ্লুয়েঞ্জা (ফ্লু) এর সাথে অনেকটা মিল পাওয়া যায়। তাই চিকিৎসকে রা প্রথমদিকে ইনফ্লুয়েঞ্জা এর ক্ষেত্রে যে ঔষুধ ব্যবহার করেতে সেই সব ঔষুধ দিয়েই চিকিৎসা চালায়। কিন্তু তেমন কোন ফল পায় নি। এই ভাইরাস মানব দেহে প্রবেশ করার পর আক্রমন শুরু করে দেয়। প্রথমদিকে এর উপসর্গ খুব কম দেখা যায়। এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।



করোনা ভাইরাস কিভাবে ছড়ায়:

করোনা ভাইরাস Human 2 HuMan ছড়ায়। Droplet Transmission এর মাধ্যমে করোনার রোগীর হাচি,কাশি, স্পর্শ থেকে ছড়ায়। ভাইরাস এর Transmission ক্ষমতা অনেক বেশি। এই ভাইরাস অনেক তাড়া-তাড়ি মানব দেহে কোষে ঢুকে বংশবৃদ্ধি করে। Multiply হতে পারে। এবং তা হাচি, কাশি এর মাধ্যমে চারদিকে ছড়িয়ে যেতে পারে।


নিজেকে সুস্থ রাখতে করনীয়:

১) প্রথমে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কারো সাথে যদি কথাও বলতে যান তাহলে অন্তত ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
২) নিজের নাক, মুখ, চোখ বার বার স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৩) বাহিরে গেলে অবশ্যই মাস্ক ব্যাবহার করতে হবে।
৪) বাহির থেকে এসে ১০-১৫ সেকেন্ড পযর্ন্ত হাত ধুতে হবে।
৫) অ্যালকোহল যুক্ত হ্যান্ড স্যানেটাইজার ব্যবহার করতে হবে।
৬) শরীরের ভিটামিন ডি বৃদ্ধি করার জন্য । রোদ লাগতে হবে।
৭) বাহির থেকে আনা শাক সবজি গুলো ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
৮) শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ার বৃদ্ধি করার জন্য পরিমান মতো শাক সবজি খেতে হবে।
শাক সবজি বেশি তাপমাত্রায় রান্না করা যাবে না। কারন বেশি তাপমাত্রায় রান্না করা হলে সাক শবজির ভিটামিন নষ্ট হয়ে যায়।

৯) যতটা সম্ভব বাসায় থাকার চেষ্ট করতে হবে।
করোনা হলে করনীয়:

১) গুরুতর অবস্থা হলে হাসপাতালে যোগাযোগ করুন। তা না হলে বাসায় থাকুন।
২) আপনার নাক ও মুখ ঢেকে রাখুন। হাচিঁ কাশি দেওয়ার সময় টিস্যু ব্যাবহার করুন।
৩) বার বার স্পর্শ করতে হয়। এমন প্রোয়জনীয় বস্তু জীবাণু নাশক দিয়ে পরিষ্কার করবেন।
৪) নিদিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলুন।
৫) গরম পানি পান করতে পারেন।
যথেষ্ট বিশ্রাম নেন
উষ্ণ থাকেন
প্রচুর পরিমাণে পানি পান করেন
গরম পানি দিয়ে গোছল ও গলা ব্যথার জন্য গড়গড়া করেন


ব্লাক ফাঙ্গাস

করোনাভাইরাস: কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে



করোনা রোগীর হাচিঁ-কাশি এর সময় যে, সূক্ষ জলের ফোটা তৈরি হয়। তাকে এরোসল বলা হয়। এর এই এরোসল এর মাধ্যমে ভাইরাসটি Transmission হয়। এখন করোনা ভাইরাস কোথায় কতোক্ষন বেচে থাকে এই নিয়ে ইংল্যান্ড র্জানাল অব মেডিসিন এর প্রতিবেদন থেকে পাওয়া যায়। ভুপৃষ্ঠে ও বাতাসে বেচেঁ থাকার ক্ষমতা রয়েছে ভাইরাসটির।

ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাতাসে তিন ঘন্টা, তামাতে ৪ঘন্টা, কার্ডবোর্ডে ২৪ ঘন্টা ,প্লাষ্টিক ও স্টেইনলেস স্টিলে ২-৩ দিন জিবত থাকতে পারে ভাইরাসটি। যেহেতু কার্ডবোর্ড ও জামা-কাপড় এর উভয়ের মধ্যেই আর্দ্রতা শোষণকারী আশ বা সুতো থকে।

তাই জমা-কাপড়েও ভাইরাসটি ২৪ ঘন্টা বেচেঁ থাকার ক্ষমতা থাকে। কারন ভাইরাসটির বেচেঁ থাকার জন্য আর্দ্রতার প্রয়োজন হয়। তাই প্রোয়জনীয় জিনিস গুলো রোদে শুকানো ভালো। এর ফলে ভাইরাসটি দ্রুত শুকিয়ে মারা যায়।

করোনা ভাইরাস কিভাবে পরীক্ষা করা হয়?

করোনা পরিক্ষা করার জন্য নিকটবর্তী কোন হাসপালে যাবেন ,যেখানে করোনার নমুনা সংগ্রহ করে। হাসপাতাল গুলো করোনা পরিক্ষার জন্য প্রথমে রোগীর নাক ও গলার ভেওর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে।
এরপর নমুনা গুলো ঢাকা পাঠায়। ঢাকার গবেষণাগারে নমুনা পরিক্ষা-নীরিক্ষা করতে। আর পরিক্ষার ফল জানতে সময় লাগে কিছু দিন । তাছাড়াও করোনার অফিসিয়াল ওয়েব সাইড থেকেও বিস্তারিত জানতে ও সাহায্য পেতে ভিজিট করুন: https://corona.gov.bd/

করোনা চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপি

প্লাজমা থেরাপি নতুন কোন চিকিৎসা না। অনেক আগে থেকেই এই ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রায় ১০০ বছর আগে থেকে। এই প্লাজমা থেরাপি কনভালসেন্ট থেরাপি নামেও পরিচিতি। ১৯১৮ এর দিকে স্প্যানিশ ফ্লু এর
এর সময় এর ব্যবহার করা হতো। পরবতৃীতে ১৯৩০ এর দিকে হাম এর চিকিৎসার জন্য এই পদ্ধতি এর ব্যবহার করা হতো। এরপর অনান্য ভাইরাস এর ক্ষেত্রেও এর ব্যবহার হতো,ইবোলা, সার্স ইত্যাদি।

এখন প্রশ্ন হলো এই প্লাজমা থেরাপি আসলে কি? প্লাজমা হলো মানুষের রক্তের জলীয় অংশ বা রক্ত রস। এটা রক্তের একটা অংশ হলুদাভ রঙের। যারা করোনা ভাইরাস কে মোকাবেলা করে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাদের শরীরে ভাইরাসটি প্রতিরোধ করার জন্য একটি এন্টিবডি বা ওই ভাইরাসটি প্রতিরোধ করার ক্ষমতা তৈরি হয়। এবং তাদের শরীর থেকে ওই এন্টিবডি বা প্লাজমা এর সেম্পল বের করে । অনান্য রোগীকে দেওয়া হয়।

একজন এর কাছ থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করে দুই-তিন জন রোগীকে দেওয়া সম্ভব হবে। কিন্তু হ্যা, সব রোগীর ক্ষেত্রে এই থেরাপী কাজ করে না।


ব্লাক ফাঙ্গাস সম্পর্কে জানতে


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে