শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Jobedali

Call

ঘোরতর রক্ষণশীল ও ব্রাহ্মণ্য ধর্মের পৃষ্ঠপোষক সেন বংশীয় সম্রাট বল্লাল সেন কৌলিন্য প্রথা প্রবর্তন করেন| 

বাংলাদেশের কুলজী বা কুলপঞ্জী অনুসারে বল্লাল সেনের মাতামহ আদিশূর যজ্ঞানুষ্ঠানের জন্য বর্তমান উত্তরপ্রদেশের কুলজী বা কুলপঞ্জী থেকে পাঁচজনকে বেদ বিদ বাংলায় এনেছিলেন এবং ওই পাঁচজন ব্রাহ্মণদের সঙ্গে পাঁচজন অনুচরও এসেছিল| পরবর্তীতে বল্লাল সেন রাজা হয়ে ওই পাঁচজন ব্রাহ্মণ ও তাদের পাঁচজন অনুচরের চারজনের বংশধরদের আচার, বিনয়, বিদ্যা, প্রতিষ্ঠা, তীর্থ দর্শন, নিষ্ঠা, বৃত্তি, তপস্যা ও দান- এই নয়টি গুণের ভিত্তিতে কুলিন রূপে গণ্য করেন|
অধ্যাপক নীহাররঞ্জন রায়ের মতে, "সমাজের উচ্চশ্রেণীর মধ্যে প্রবর্তিত কৌলিন্য প্রথা জাতিভেদ প্রথাকে তীব্র করেছিল"| অনেকে মনে করেন, কৌলিন্য প্রথা প্রবর্তনের মধ্যে বল্লাল সেনের রাজনৈতিক অভিসন্ধি ছিল| বাংলায় যেসব ব্রাহ্মণ বা অন্য শ্রেণী তাকে সমর্থন করত না, তিনি তাদের সামাজিক অবনত করেন| আর যারা তার সমর্থক ছিল, তাদের কুলিন ঘোষণা করে স্বতন্ত্র শ্রেণী ও সমর্থক সৃষ্টি করেন|

হরিশচন্দ্র কবিরত্নের সম্পাদিত "বল্লাল চরিত" থেকে জানা যায় যে- আর্থিক সহযোগিতা করতে অস্বীকার করায় বাংলার সাহা বা সুবর্ণ বণিক সম্প্রদায়ের মর্যাদা হরণ করে বল্লাল সেন তাদের নিম্ন জাতিতে পরিণত করেছিলেন| আবার প্রয়োজনের তাগিদে তিনি মালাকার, কুম্ভাকার ও কর্মকারদের সৎ শূদ্র পর্যায়ে উন্নতি করেছিলেন|

তবে একথা সত্য যে, কৌলিন্য প্রথার প্রবর্তন বল্লাল সেন বাংলার সামাজিক ভিত্তিকে দুর্বল করে দিয়েছিলেন, যার কুফল লক্ষণ সেনকে ভোগ করতে হয়| পরিশেষে বক্তিয়ার খলজির আক্রমণের সময় তিনি বাংলার সর্বসাধারণের সমর্থন ও সক্রিয় সাহায্য থেকে বঞ্চিত হন|

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ