ইসলামের দৃষ্টিতে ছবি তুলে মোবাইলে সংরক্ষণ করা জায়েজ আছ কি??
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

জীবন্ত প্রাণীর ছবি তৈরি করা বৈধ নয়, যার মধ্যে মানুষ, পাখি এবং অন্যান্য প্রাণীর ছবি অন্তর্ভুক্ত। কারণ যারা এরূপ ছবি তৈরি করে তারা অভিশপ্ত। তবে প্রয়োজনের ক্ষেত্রে ছবি তোলা বৈধ, যেমন: আইডি কার্ড বা পাসপোর্টের জন্য ছবি তোলা ইত্যাদি। ছবি অঙ্কন বা তৈরি হারাম হবার দলিল। # আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল ওয়াহহাব (র)...সাঈদ ইবনে আবুল হাসান (র) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ইবনে আব্বাস (রা) এর নিকট উপস্থিত ছিলাম, এমন সময়ে তাঁর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আবু আব্বাস! আমি এমন ব্যক্তি যে, আমার জীবিকা হস্তশিল্পে। আমি এসব ছবি তৈরি করি। ইবনে আব্বাস (রা) তাঁকে বলেন, (এ বিষয়) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমি যা বলতে শুনেছি, তাই তোমাকে শোনাব। তাঁকে আমি বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি কোন ছবি তৈরি করে আল্লাহ্ তা'আলা তাকে শাস্তি দিবেন, যতক্ষণ না সে তাতে প্রাণ সঞ্চার করে। আর তাতে সে কখনো প্রাণ সঞ্চার করতে পারবে না। (এ কথা শুনে) লোকটি ভীষণভাবে ভয় পেয়ে গেল এবং তার চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে গেল। এতে ইবনে আব্বাস (রা) বললেন, আক্ষেপ তোমার জন্য, তুমি যদি এ কাজ না-ই ছাড়তে পার, তবে এ গাছপালা এবং যে সকল জিনিসে প্রাণ নেই, তা তৈরি করতে পার। আবু আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (র) বলেন, সাঈদ (রা) বলেছেন আমি নযর ইবনে আনাস (রা) থেকে শুনেছি তিনি বলেছেন, ইবনে আব্বাস (রা) হাদীস বর্ণনা করার সময় আমি তার কাছে ছিলাম। ইমাম বুখারী (র) আরও বলেন, সাঈদ ইবনে আবু আরুবাহ (র) একমাত্র এ হাদিসটি নযর ইবনে আনাস (র) থেকে শুনেছেন। [সহীহ বুখারী, চতুর্থ খণ্ড, হাদিস নং ২০৮৪ - ইফা] # ইবনে মুকাতিল (র)...আবূ তালহা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে ঘরে কুকুর থাকে আর প্রানীর ছবি থাকে সে ঘরে (রহমতের) ফিরিশতা প্রবেশ করেন না। [সহীহ বুখারী, পঞ্চম খণ্ড, হাদিস নং ২৯৯৮ - ইফা] # হুমায়দী (র)...মুসলিম (র) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা (একবার) মাসরুকের সাথে ইয়াসার ইবনে নুমায়রের ঘরে ছিলাম। মাসরুক ইয়াসারের ঘরের আঙ্গিনায় কতগুলো মূর্তি দেখতে পেয়ে বললেনঃ আমি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) থেকে শুনেছি এবং তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন যে, (কিয়ামতের দিন) মানুষের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন শাস্তি হবে তাদের, যারা ছবি বানায়। [সহীহ বুখারী, নবম খণ্ড, হাদিস নং ৫৫২৬ - ইফা] # আলী ইবনে আবদুল্লাহ (র)...আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (তাবূক যুদ্ধের) সফর থেকে প্রত্যাগমন করলেন। আমি আমার ঘরে পাতলা কাপড়ের পর্দা টাঙ্গিয়েছিলাম। তাতে ছিল (প্রানীর) অনেকগুলো ছবি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন এটা দেখলেন, তখন তা ছিঁড়ে ফেললেন এবং বললেনঃ কিয়ামতের সে সব মানুষের সবচেয়ে কঠিন আযাব হবে, যারা আল্লাহ্র সৃষ্টির (প্রানীর) অনুরূপ তৈরি করবে। আয়েশা (রা) বলেন, এরপর আমরা তা দিয়ে একটি বা দু'টি বসার আসন তৈরি করি। [সহীহ বুখারী, নবম খণ্ড, হাদিস নং ৫৫৩০ - ইফা] ছবির নিষেধাজ্ঞা যেখানে প্রযোজ্য: স্থায়ী চিত্রের ক্ষেত্রে ছবি তোলা নিষিদ্ধ, তা কাগজে ছাপা হোক বা কাপরে ছাপা হোক বা দেয়ালে অংকন করা হোক ইত্যাদি। আর অস্থায়ী চিত্র যা কোন ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জাম ছারা দেখা যায় না, যেমন ডিজিটাল ছবি যা মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে অথবা কম্পিউটার দিয়ে তোলা হয়, যা স্ক্রিনে দৃশ্যমান হয় আবার অদৃশ্য হয়ে যায়। এরূপ অস্থায়ী ছবি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পরে না। যা বিভিন্ন আলেমেরা বলেছেন। শেইখ ইবনে উথাই’মিন বলেছেন: আধুনিক ছবি দুই ধরনের হয়ে থাকে: 1. যেসব ছবি, যা কোন কিছুর সাহায্য ছারা দেখা যায় না, আমাকে বলা হয়েছে যেমন ভিডিও ক্যামেরার দৃশ্য। এরূপ ছবির ক্ষেত্রে কোন নীতিমালা নেই এবং এগুলি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পরে না। যেসব আলেমরা প্রিন্ট করা ছবির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করেছেন তারাই বলেছেন এরূপ অস্থায়ী ভিডিও ক্যামেরার ছবির ক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই। 2. যা কাগজে ছাপানো হয়। শেইখ ডা: খা’লিদ আল-মুস’হাকি (র:)- কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল: আমি মোবাইল দিয়ে স্মৃতির জন্য আমার বাচ্চার ছবি তুলি। কিন্তু আমি পড়েছি যে স্মৃতির জন্য ছবি তোলা শরীয়ত মতে হারাম। আমার এই ছবি তোলা কি শরীয়তে নিষিদ্ধ অথবা এটা কি ঠিক আছে মোবাইলে ফোনের ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলা। এর ক্ষেত্রে দলিল কি? আমি এও পড়েছি যে কম্পিউটার এবং মোবাইলের ছবিকে ‘ছবি’ বলা হয় না, কারণ তা রাখা হয় কম্পিউটার বা মোবাইলের মেমোরিতে এবং তা ছাপানো হয় না। আমি যদি কম্পিউটার বা মোবাইলে ছবি খুলি তাহলে তাতে ফেরেশতারা কি থাকবে না চলে যাবে? আমি আশা করছি আপনি আমাকে বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে বুঝাতে পারবেন কারণ এটি খুব বিভ্রান্তিকর বিষয়। আল্লাহ্ যেন আপনাকে ভাল প্রতিদান দেয়। তার উত্তর: ‘মোবাইল বা কম্পিউটার বা ভিডিও টপের ছবিগুলি, শরীয়তের ছবির নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পরে না কারণ এই ছবিগুলোর কোন আকার নেই এবং তা স্থায়ী নয় , যতক্ষণ না তা কাগজে ছাপা হয়। এ ভিত্তিতে মোবাইলে বা কম্পিউটারে স্মৃতির জন্য ছবি রাখাতে কোন সমস্যা নেই, যদি না তা দ্বারা কোন হারাম কাজ করা হয়। এবং আল্লাহ্ই ভাল জানেন’… এই নীতির ভিত্তিতে, কেউ যদি মোবাইল দিয়ে বা ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে দেয় তাতে কোন সমস্যা নেই, যদি না তা ছাপানো হয়। তবে তা ঝুকিপূর্ণ ও তাকওয়ার খেলাপ। কিন্তু মেয়েদের ক্ষেত্রে এরূপ ছবি তোলা শরীয়ত সম্মত নয়, কারণ তা ফিতনার কারণ হবে এবং তা ছেলেদের মধ্যে খারাপ কামনা- বাসনা তৈরি করবে। কম্পিউটার ও মোবাইল স্ক্রীনে থাকা প্রাণীর (অশ্লীল ও নারীর ছবি ছাড়া) ছবি প্রিন্ট করার আগ পর্যন্ত জায়েজ বলেছেন জামিয়া বিন্নুরিয়া পাকিস্তানের ফাতওয়া বিভাগ। সুতরাং ফটোগ্রাফী ছবিকে মুতলাক জায়েজ বলা এই হিসেবে যে, তা মূলত ছবি না, বরং তা ছায়াকে আটকে ফেলা, এরূপ বলা উচিত নয়, বরং তার বৈধতা প্রয়োজন পর্যন্ত সীমিত থাকবে। (তাফসীরু আয়াতিল আহকাম-২/৩০০) কম্পিউটার স্ক্রীনে বা মোবাইল স্ক্রীনে ছবি না রাখাটাও তাক্বওয়ার দাবী। সুতরাং ওলামায়ে কেরামসহ যারা সমাজের অনুস্বরণীয় ব্যক্তিত্ব তাদের জন্য অবশ্যই একাজটি বর্জনীয়। যেন সাধারণ মানুষরা ছবি তুলে প্রিন্ট করার মাধ্যমে সুস্পষ্ট হারাম কাজে লিপ্ত হতে উদভুদ্ধ না হয়। আল্লাহ তায়ালা আমাদের মেজাজে শরীয়ত অনুযায়ী আমল করার তৌফিক দান করুন। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন আমিন। সোর্স http://askislambd.weebly.com/gqa114.html . . আরো দেখুনঃ http://islamforu.com/মোবাইলে-ছবি-তোলা/

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

কোন প্রাণীর ছবি তোলা জায়েজ নয়| তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে কিছু কিছু ক্ষেত্রে জায়েজ| যেমন আপনি যদি হজ্ব করতে চান সেখানে পাসপোর্টে আপনার ছবি লাগবে| এমন অনেক গুলো ক্ষেত্র আছে যেখানে জায়েজ| এবং সেই ক্ষেত্র গুলোতে জায়েজ হলে মোবাইলে রাখাও জায়েজ|

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

আনাস ভাই ঠিকই বলছেন তবে না রাখাই উত্তম কারন যেখানে কোনো জীব বা জন্তুর ছবি থাকে সেখানে আল্লাহর রহমতের ফেরেস্তা প্রবেশ করে না।তাই একান্ত প্রয়োজনীয় ছাড়া এগুলো রাখা সম্পূর্ন রুপে না যায়েজ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Manik Raj

Call

উত্তর : প্রয়োজন যদি থাকে, তাহলে ছবি উঠাতে পারবেন, কিন্তু যদি প্রয়োজন না থাকে, তাহলে অহেতুক ফালতু কাজের জন্য যদি কেউ ছবি তোলেন, তাহলে তিনি গুনাহগার হবেন, কোনো সন্দেহ নেই। ইসলাম যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে যেসব কাজ থেকে দূরে থাকতে বলেছে, তার মধ্যে এটি একটি। কারণ, এই পথ দিয়ে মূলত আদম সন্তানদের মধ্যে শিরক এসে ঢুকেছে। এটা শিরকের আগমনের পথ। আর বর্তমান সময়ে এসব ছবি মানবজাতির বড় ধরনের পতস্থলনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় যে বড় বড় মূর্তি দাঁড় করানো হচ্ছে বিভিন্ন আকার দিয়ে, এগুলো ইসলামে একেবারেই গর্হিত কাজ। এর মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে আমরা হারাম ও শিরকের দিকে ধাবিত হচ্ছি অনেক অনেক দ্রুতগতিতে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ