শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

রাজন হত্যা বাংলাদেশের সিলেটে পৈশাচিক অত্যাচারে মৃত্যু হল ১৩ বছরের এক কিশোরের। অপরাধ? সে নাকি চুরি করেছে। চুরির অভিযোগে গত বুধবার সিলেটের কুমারগাঁও বাসস্টেশন এলাকায় একটি ওয়ার্কশপের সামনে খুঁটিতে বেঁধে ওই কিশোর রাজনের উপর অমানবিক নির্যাতন চালায় কিছু দুষ্কৃতী। কিন্তু, এখানেই অন্ত হয়নি অমানবিকতার। দুষ্কৃতীরা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে এই মধ্যযুগীয় অত্যাচারের ভিডিও তোলে। তারপর আইসিস জঙ্গিদের কায়দায় সেই ভিডিও স্যোশাল মিডিয়ায় আপলোড করে দেয়। নির্যাতনের এই ভিডিও আতঙ্কে স্তব্ধ হয়ে যায় গোটা বাংলাদেশ। নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ইতিমধ্যে পুলিস কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে। বাকিদের সন্ধানে চলছে চিরুনি তল্লাসি। কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী গ্রামের মাইক্রোবাস চালক শেখ আজিজুর রহমানের ছেলে রাজন। চুরির দায়ে তাকে ধরে কয়েক ব্যক্তি। তারপর খুঁটিতে বেঁধে শুরু হয় নির্মম মারধর। তারা উল্লাসে চিত্কার করে বলে ‘কোন সিস্টমে তরে মারতাম খ, আমরার হখল সিস্টম জানা আছে’। অর্থাত তোকে কীভাবে মারব বল, আমাদের সব পদ্ধতি জানা আছে।' লোহার রড দিয়ে ছোট্ট রাজনের পায়ের গাঁটে, পুরুষাঙ্গে বারবার আঘাত করা হয়। একনাগাড়ে বেশ কিছুক্ষণ মারার পরে নিস্তেজ হয়ে পড়ে রাজন। তাদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চায় অসহায় কিশোর। ‘আমি মরি যাইয়ার! কেউ আমারে বাঁচাও রে বা!’ কখনও তেষ্টায় জল চায়। রজনের কাতর আর্তনাদে মন গলেনি দুষ্কৃতীদের। তারা উলটে বলে ‘পানির বদলা ঘাম খা!’ দফায় দফায় রাজনের ওপর অত্যাচার চালায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রাজনের। এরপর দুষ্কৃতীরা রাজনের দেহকে সরানোর চেষ্টা করে। সারা দিন ছেলের খোঁজ না পেয়ে রাজনের মা থানায় ডায়েরি করেন। পুলিসের তদন্তে খোঁজ মেলে রাজনের। রাজনের মা লুবনা বলেন, ‘আমার পুয়া (ছেলে) চোর না। এ কথা সারা এলাকার মানুষ জানে। আমি ছেলে হত্যার উচিত বিচার চাই।’ রাজনকে মারার সময় দুষ্কৃতীরা বলেছিল, ‘তরে এমন শিক্ষা দিমু, হালার হালা জীবনে আর চুরি খরতে ফারতে নায় ’। চুরির অপবাদে হতদরিদ্র কিশোরকে নির্মম অত্যচার করে হত্যাই যদি 'শিক্ষা' হয় তাহলে আমাদের সমাজ কোন বর্বরযুগে পৌঁচ্ছাছে? এই করুণ ভিডিও দেখার পর এমন প্রশ্ন তুলে নিন্দায় সরব হয়েছেন স্যোশাল মিডিয়া থেকে বিভিন্ন মহল।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ