ভূমি জরীপ কাজে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে ১৮৭৬ খ্রীষ্টাব্দে ঢাকা সার্ভে স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯০৫ সালে ঢাকার নওয়াব আহসানউল্লাহ এ বিদ্যালয়টির প্রতি আকৃষ্ট হন এবং মুসলমানদের শিক্ষা-দীক্ষার অগ্রগতি, উন্নয়ন ও প্রসারের জন্য ১.১২ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে ১৮০৮ খ‌্রীষ্টাব্দে এর নামকরণ করা হয় আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল। শুরুতে এর অবস্থান ভাড়াকৃত ভবনে হলেও ১৯০৬ সালে সরকারী উদ্যোগে বর্তমান শহীদুল্লাহ হলের নিকটবর্তী স্থানে এর নিজস্ব ভবন নির্মিত হয়। ১৯২০ সালে এটি বর্তমান স্থানে স্থানান্তরিত হয়। শুরুতে এই বিদ্যালয়টি ঢাকা কলেজের সাথে সংযুক্ত ছিল। পরে এটি সরাসরি জনশিক্ষা পরিচালকের অধীনে ন্যাস্ত হয়। মি: এন্ডারসন এর প্রথম অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। এর পরে ১৯৩২ সালে শ্রী বি.সি. গুপ্ত এবং ১৯৩৮ সালে জনাব হাকিম আলী অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। ১৯৪৭ সালের মে মাসে বাংলার সরকার ঢাকায় একটি প্রকৌশল কলেজ স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন এবং ১৯৪৭ সালের আগষ্ট মাসে আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলটি আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে উন্নীত হয়। জনাব হাকিম আলী এর অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। ১৯৪৮ সালের ফেব্রুয়ারীতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার এই কলেজটিকে অনুমোদন দেন। এ সময় কলেজটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ছিল। ১৯৫৬ সালে আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সেমিষ্টার প্রথা এবং নতুন পাঠ্যক্রম অনুমোদিত হয়। ১৯৫৭ সালে ডিগ্রী কোর্সে আসন সংখ্যা ১২০ থেকে বৃদ্ধি করে ২৪০ এ উন্নীত করা হয়। ১৯৫৮ সালে ডিপ্লোমা কোর্স বন্ধ করে দেয়া হয়। বর্তমান ড.এম. এ. রশীদ ভবন (মেইন হোস্টেল) এবং বর্তমান নজরুল ইসলাম হল (সাউথ হোস্টেল) ছাত্রদের আবাসিক হল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ১৯৫৮ সালে আহসানউল্লাহ হল নির্মিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৬১ সালে ড. এম. এ. রশীদ কারিগরী শিক্ষা পরিচালকের পদে যোগ দেন এবং ডা. ওয়াকার আহমেদ অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। স্বাধীনতা পূর্ব সময়ে উচ্চতর প্রকৌশল শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৬২ সালের ১ জুন আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে পূর্ব পাকিস্তান প্রকৌশল ও কারিগরী বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়। কারিগরী শিক্ষা পরিচালক ডা. এম. এ. রশীদ প্রথম ভাইস চ্যান্সেলর পদে অধিষ্ঠিত হন। কায়েদ-ই-আজম হল (বর্তমান তিতুমীর হল), শেরে বাংলা হল ও লিয়াকত হল (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী হল) নামে তিনটি নতুন হল ছাত্রদের জন্য তৈরী করা হয়। প্রফেসর কবির উদ্দিন আহমেদ প্রথম ছাত্র কল্যাণ পরিচালক নিযুক্ত হন। ১৯৬২ সালেই স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদে স্থাপত্য বিভাগ খোলা হয় এবং নতুন বিভাগের জন্য টেক্সাস এ এন্ড এস কলেজের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ শিক্ষক এই বিভাগে যোগ দেন। এভাবেই প্রকৌশল ও স্থাপত্য এই দুটি অনুষদ ও স্থাপত্য বিভাগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত এবং মানবিক বিভাগ আগে থেকেই চালু ছিল। ১৯৭৩ সালে প্রথম এবং ১৯৭৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তমন অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন চ্যান্সেলর এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী এবং বিচারপতি আবু সাদাত মো: সায়েম যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় সমাবর্তনে সনদপত্র বিতরণ করেন

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ