যারা বিয়ে করার আগেই কিংবা ছোট বেলায় মারা যায়, তাদের তো কোনো জোড়া থাকে না। যুক্তি সহ ব্যখা চাই।
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Habib96

Call

আল্লাহ তাআলা বলেন: وَأَنَّهُ خَلَقَ الزَّوْجَيْنِ الذَّكَرَ وَالْأُنثَىٰ “এবং তিনিই সৃষ্টি করেন যুগল-পুরুষ ও নারী।”  (সূরা নজম: ৪৫) আল্লাহ আরও বলেন: وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِّتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُم مَّوَدَّةً وَرَحْمَةً ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ “তাঁর আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সঙ্গিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যেন তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। (সূরা রূম: ২১) ★তাফসীর: উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, তিনি মানুষকে নারী ও পুরুষ এই দুই প্রজাতিতে সৃষ্টি করেছেন। এখানে উদ্দেশ্য হল, নারী-পুরুষ দুই প্রজাতি। স্বামী-স্ত্রী উদ্দেশ্য নয়। কেননা, অনেক ছেলে বা মেয়ে অবিবাহিত অবস্থায় মারা যায়। অনেকেই বিবাহ ছাড়াই জীবন অতিবাহিত করে দেয়। তাহলে কোথায় তাদের স্ত্রী/স্বামী? সুতরাং নিশ্চিতভাবে বলা যায়, জোড়া দ্বারা স্বামী-স্ত্রী উদ্দেশ্য নয়। বরং নারী ও পুরুষ এ দুই প্রজাতি উদ্দেশ্য। পরের আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন যে, তিনি আমাদের সঙ্গীনীদেরকে আমদের মধ্য থেকেই সৃষ্টি করেছেন। অর্থাৎ নারী পুরুষ উভয়কেই আল্লাহ মানুষ প্রজাতির মধ্য থেকেই সৃষ্টি করেছেন। (তাফসীরে ইবনে কাসীর) উভয়ের সৃষ্টি উপাদান এক। তা হল, পুরুষের বীর্য। নারী-পুরুষ উভয়েই পুরুষের বীর্য থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা প্রতিটি বস্তুই জোড়া জোড়া সৃষ্টি করেছেন: আল্লাহ তাআল বলেন: وَمِن كُلِّ شَيْءٍ خَلَقْنَا زَوْجَيْنِ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ  “আমি প্রত্যেক বস্তু জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি, যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।" (সূরা যারিয়াত: ৪৯) তাফসীর: মুফাসসিরগণ বলেন, প্রতিটি বস্তু জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টির অর্থ: আল্লাহ তাআলা তার সৃষ্টি জগতকে পরষ্পর বিপরীতমূখী করে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন। ◼ প্রখ্যাত তাবেঈ ও মুফসসির মুজাহিদ ( রহ.) উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বিপরীতমূখী বিষয়ের উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেন: ঈমান-কুফর, সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য, হেদায়াত-গোমরাহী, রাত-দিন, আসমান-জমিন, মানুষ-জিন ইত্যাদি। ◼ ইবনে কাসীর (রাঃ) বলেন, অল্লাহর প্রতিটি সৃষ্টি জোড়া জোড়া। যেমন আসমান-জমিন, রাত- দিন, সূর্য-চন্দ্র, স্থল-জল, আলো-অন্ধকার, ঈমান-কুফর, জীবন-মৃত্যু, সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য, জান্নাত-জাহান্নাম ইত্যাদি। এমনকি প্রাণী জগতেও জোড়াজোড়া। যেমন, জিন-ইনসান, পুরুষ-নারী, বিভিন্ন ধরণের তৃণ-লতা ইত্যাদি। ◼ জোড়া জোড়া সৃষ্টির আরও উদাহরণ:  সুস্থতা-অসুস্থতা, সাদা-কালো, ভালো-মন্দ, সমতল-অসমত, সকাল-সন্ধ্যা, ঠাণ্ডা-গরম, শুষ্ক-আদ্র, শক্ত-নরম, মিষ্টি-তিতা, চক্ষুষ্মান-অন্ধ, উঁচু-নিচু ইত্যাদি।  এসব বিপরীতমূখী জোড়া জোড়া সৃষ্টি মহান স্রষ্টা আল্লাহর অনুপম নির্দশন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

আল্লাহ তায়ালা বলেন, পবিত্র ও মহান তিনি, যিনি মাটি হতে উৎপন্ন উদ্ভিদ, স্বয়ং মানুষ এবং ওরা যাদের জানে না, তাদের সকলকে জোড়া জোড়া সৃষ্টি করেছেন। (সুরা ইয়াসিনঃ ৩৬) তিনি প্রত্যেক জিনিস জোড়া জোড়া করে সৃষ্টি করেছেন। অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা মানুষকে যেমন- নারী-পুরুষ করে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন তেমনি প্রত্যেকটি জিনিস যা আমরা দেখতে পাই আর যা দেখতে পাই না সবকিছু তিনি জোড়ায় জোড়ায় তথা নর-নারী করে সৃষ্টি করেছেন। পূর্বকালে মানুষ জানত না উদ্ভিদেরও পুরুষ ও স্ত্রী লিঙ্গ রয়েছে। অথচ কুরআন এ উদ্ভিদ বিজ্ঞান সম্পর্কে ১৪০০ বছর আগে বলে দিয়েছে। উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মতে, প্রত্যেক উদ্ভিদের পুরুষ ও স্ত্রী লিঙ্গ আছে। এমনকি সমজাতীয় লিঙ্গ বিশিষ্ট উদ্ভিদেরও পুরুষ ও স্ত্রী লিঙ্গ আছে। বর্তমানে মানুষ যা জানে না ও পরবর্তীতে যা আবিস্কার হবে সেগুলোসহ সব বিপরীত লিঙ্গ করে সৃষ্টি করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন, আমি সকল কিছুকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। (আয যারিয়াতঃ ৪৯) অর্থাৎ জোড়ায় জোড়ায় সৃজনের নীতির ভিত্তিতে পৃথিবীর সমস্ত বস্তু সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রতিটি উদ্ভিদ ও প্রাণীর সৃষ্টিতে আমরা পুরুষ ও নারী জোড়া জোড়া হিসেবে দেখতে পাই। অর্থাৎ, প্রতিটি জিনিস জোড়া জোড়া, নর ও নারী। অথবা ঐ জিনিসের বিপরীত জিনিসও সৃষ্টি করেছি। যেমন, আলো ও আঁধার, জল ও স্থল, চন্দ্র ও সূর্য, মিষ্ট ও তিক্ত, দিন ও রাত, ভালো ও মন্দ, জীবন ও মৃত্যু, ঈমান ও কুফরী, সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্য, জান্নাত ও জাহান্নাম, মানব ও দানব ইত্যাদি। এমন কি জীবের বিপরীত জড়পদার্থও এই জন্য জরুরী যে, যাতে দুনিয়ারও জোড়া হয়। অর্থাৎ, দুনিয়ার মোকাবেলায় দ্বিতীয় জীবন আখেরাত। আলোচ্য আয়াত দ্বারা এটা উদ্দ্যেশ্য নয় যে, যারা বিয়ে করার আগেই কিংবা ছোট বেলায় মারা যায়, তাদের কোন জোড়া থাকে না। মুলত তাদের আদি পিতা মাতা আদম ও হাওয়া (আঃ) একটি জোড়া এটাই উদ্দ্যেশ্য।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ