এ যুদ্ধের জন্য দায়ী অন্য কারণগুলো হলো- কূটনৈতিক সঙ্কটের সময়ের ঘটনাবলী। এর মধ্যে ছিল, উদ্দেশ্য নিয়ে বিভ্রান্তি (যেমন জার্মানি মনে করেছিল ব্রিটেন এ যুদ্ধে নিরপেক্ষ থাকবে), যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি যা অবশ্যম্ভাবী ঘটে থাকে এবং কূটনৈতিক বিভ্রান্তি ও যোগাযোগের অভাবে সঙ্কট দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ে।১৯১৪ সালের ২৮ জুন গ্যাবরিলো প্রিন্সিপ ফ্রাঞ্জ ফারনান্দকে হত্যা করে। এ ঘটনার পর যুদ্ধ ঘোষনা করা হয়। এরপর কয়েকটি দেশ পরস্পরকে সহায়তা করার চুক্তি স্বাক্ষর করে। এরা মিত্র দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। যুদ্ধের চার বছরে অনেকগুলো দেশ কয়েকটি জোট গঠনের চুক্তি করে। এতে কোন কোন দেশের পক্ষে যুদ্ধ ঘোষনা করা ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না।এ যুদ্ধের আরেকটি কারণ ছিল সমরবাদ। ইউরোপের শক্তিগুলোর বিভক্তি সেখানে ব্যাপক অস্ত্রপ্রতিযোগিতার সুত্রপাত ঘটে। ফ্রান্স ও জার্মানি উভয়েই ১৯৭০ থেকে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত তাদের সেনা সংখ্যা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করে। সাগরে নিয়ন্ত্রণ দখলে ব্রিটেন ও জার্মানি তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামে। উভয়ে যুদ্ধজাহাজ তৈরি করে।আরেকটি কারণ ছিল জাতীয়তাবাদ। নিজ দেশের অধিকার ও স্বার্থকে সর্বোচ্চ অধিকার দেয়া হচ্ছে জাতীয়তাবাদ। ইউরোপের দেশগুলো নিজেদেরকে অন্যদের থেকে শ্রেষ্ট বলে দাবি করতে থাকে।
১৯১৪ সালের ২৮ জুন বসনিয়ার রাজধানী সারায়েভো শহরে অস্ট্রিয়ার যুবরাজ আর্চডিউক ফ্রাঞ্জ ফার্ডিনান্ড এক সার্বের গুলিতে নিহত হন। অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি এই হত্যাকাণ্ডের জন্য সার্বিয়াকে দায়ী করে এবং ওই বছরের ২৮ জুন সার্বিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এ যুদ্ধে দু'দেশের বন্ধু রাষ্ট্রগুলো ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়ে। এতে যোগ দিয়েছিল সে সময়ের অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী সকল দেশ। এভাবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের (১৯১৪-১৯১৮) সূচনা হয়। তবে অস্ট্রিয়ার যুবরাজের হত্যাকাণ্ডই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের একমাত্র কারণ ছিল না। উনিশ শতকে শিল্পে বিপ্লবের কারণে সহজে কাঁচামাল সংগ্রহ এবং তৈরি পণ্য বিক্রির জন্য উপনিবেশ স্থাপনে প্রতিযোগিতা এবং আগের দ্বন্দ্ব-সংঘাত ইত্যাদিও প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের কারণ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে একপক্ষে ছিল উসমানীয় সাম্রাজ্য, অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি, জার্মানি ও বুলগেরিয়া। যাদের বলা হতো কেন্দ্রীয় শক্তি। আর অপরপক্ষে ছিল সার্বিয়া, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জাপান, ইতালি, রুমানিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যাদের বলা হতো মিত্রশক্তি। সুত্রঃ উইকিপিডিয়া