শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

কারণ ভারত যুদ্ধাস্ত্রের দিক থেকে অনেকটাই দুর্বল এবং আমারা দেখেছি যে, ১৯৬২সালের যুদ্ধে ভারত চীনের কাছে আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়েছিল।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
সময় বদলেছে, ভারত এখন সামরিক শক্তিতে অনেক শক্তিশালী * চীনের চারদিকে ১৪টি দেশ রয়েছে। ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হলে বেইজিংয়ের শত্রু দেশগুলো চুপ করে বসে থাকবে নাl 
চীন, ভুটান ও ভারতের সিকিম প্রদেশের সংযোগস্থলে ডোকা লা সীমান্তে বেইজিং ও নয়াদিল্লির মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে সামরিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিবিসিতে ভারতীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষক মারুফ রাজার একটি বিশ্লেষণ প্রকাশিত হয়েছে। এখানে তার অনুবাদ তুলে ধরা হল-চীন বারবার ১৯৬২ সালের যুদ্ধের কথাশোনায়। কিন্তু তারা ভুলে যায় যে ওই যুদ্ধের পর আরও ৫৫ বছর পেরিয়ে গেছে। ১৯৬৭ সালে নাথুলা পাসে দুই দেশের মধ্যে যে সংঘর্ষ হয়েছিল, তাতে ভারত কী রকম জবাব দিয়েছিল তা বোধহয় চীন ভুলে গেছে। তারপরও ১৯৮৭ সালে সুন্দরম চু এলাকা দিয়ে চীনা সেনারা ভারতে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। তৎকালীন ভারতীয় সেনাধ্যক্ষ জেনারেল সুন্দরজী তাদেরকে এমন প্যাঁচে ফেলেছিলেন যে ভারত ছেড়ে তাদের লুকিয়ে পালাতে হয়েছিল।এছাড়াও চীনের মনে রাখা দরকার যে, ১৯৭৯ সালে ভিয়েতনামকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে গিয়ে ওদের নিজেদেরই কী শিক্ষা হয়েছিল! সেজন্যই ফালতু আর বাচ্চাদের মতো হুমকি যেন চীন না দেয়। ১৯৬২ সালের যুদ্ধের সময় সেনা অভিযানের সব নিয়ন্ত্রণ রাজনৈতিক নেতৃত্ব নিজের হাতে নিয়ে নিয়েছিলেন। বেশ কিছু জেনারেল নিজের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করেননি। এজন্যই চীনের কাছে পর্যুদস্ত হয়েছিল ভারত। ১৯৬২ সালের যুদ্ধ নিয়ে যত বই বেরিয়েছে, সেগুলো পড়লেই বোঝা যায় সেনাবাহিনী সব দায়দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু আর তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভিকে কৃষ্ণ মেননের ওপরে ছেড়ে দিয়েছিল। ভারতীয় সেনাবাহিনী ঠিকমতো যুদ্ধের প্রস্তুতিও নিতে পারেনি।সেই সময়ে বরফে ঢাকা এলাকায় যুদ্ধ করার মতো পোশাক বা অস্ত্র কিছুই ঠিকমতো ছিল না। তাদের প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যে টিকে থাকার প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণও ছিল না। এসবের মধ্যে নেহেরু আর মেনন ভরসা করেছিলেন যে তারা সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান করে ফেলতে পারবেন। তারা ভেবেছিলেন, জাতিসংঘে ভাষণ শুনিয়ে চীনকে পিছু হঠতে বাধ্যকরতে পারবেন তারা। তাদের কোনো প্রচেষ্টাই সফল হয়নি। ৫৫ বছর পরে এখন কিন্তু আর সেই অবস্থা নেই। সাড়ে পাঁচ দশক ধরে ভারতীয় সেনাবাহিনী সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। অস্ত্রসজ্জা, প্রশিক্ষণ, মিসাইল তো রয়েছেই, সঙ্গে আছে বিমানবাহিনীর শক্তি।১৯৬২ সালে ভারত বিমানবাহিনীকে ব্যবহার করেনি। কিন্তু এখন ভারতের কাছে সেই শক্তি রয়েছে। শুধু চীনের মোকাবেলা করা যাবে তাই নয়, তাদের পথরোধও করা যাবে। গোটা চীন হয়তো দখল করে নেয়া যাবে না, কিন্তু মুখোমুখি লড়াই করতে এখন সক্ষম ভারতীয় বাহিনী। এটা ঠিক যে, চীন অর্থনৈতিক ও সামরিকভাবে শক্তিশালী। ভারতের থেকে অনেক বেশি শক্তিধর তারা। পরমাণু শক্তিতেও তারা ভারতের থেকে বেশি ক্ষমতাবান। কিন্তু এখন যে অঞ্চলে দুই দেশের মধ্যে সমস্যাটা বেধেছে, সেখানে চীন খুব একটা শক্তিশালী অবস্থানে নেই।এর বেশ কয়েকটা কারণ রয়েছে। প্রথমত, ওই এলাকায় চীনা সেনাবাহিনীর লজিস্টিকস লাইন আপ অনেকটা দূরে। বহুদূর থেকে তাদের সামরিক রসদ আনতেহবে। দ্বিতীয়ত, পাহাড়ি এলাকায় যে বাহিনী নিজেদের অবস্থা রক্ষা করছে,তাদের উৎখাত করতে গেলে আক্রমণকারীকে দশগুণ বেশি শক্তি প্রয়োগ করতে হয়। এখন সিকিমের ওই অঞ্চলে ভারত কিন্তু নিজেদের এলাকা রক্ষা করছে। চীনের মতো আক্রমণাত্মক ভূমিকায় নেই ভারত। তাই ভারতীয় সেনাদের ওখান থেকে সরিয়ে দিতে গেলে চীনা বাহিনীকে অনেক বেশি শক্তি প্রয়োগ করতে হবে। সেটা করার আগে চীন নিশ্চয়ই কয়েকবারভাববে।আরেকটা বড় কারণ হল, চীনের চারদিকে ১৪টি দেশ রয়েছে। যদি ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে চীনের বাকি শত্রু দেশগুলো চুপ করে বসে থাকবে না, এটা চীন ভালো করেই জানে। অন্তত জাপান আর ভিয়েতনাম চুপকরে বসে থাকবে না। ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে এরকম আরও কিছু দেশও চীনের ওপরে চাপ তৈরি করবে। তাই স্বপ্ন দেখা ছেড়ে দেয়া উচিত চীনের। চীন দখল করতে চায় না ভারত। কিন্তু যদি চীন ভারতের সীমানা পেরোনোর চেষ্টা করে, তাহলে তাদের হাল খারাপ হয়ে যাবে।
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ