হাদিস গ্রন্থ অসংখ্য, অগণিত বললে অত্যুক্তি হবে না। আপনি নির্দিষ্ট করে বলতে পারবেন না যে, এক হাজার হাদিস গ্রন্থ আছে, বা দুই হাজার আছে! হাদিস গ্রন্থ হাজার হাজার আছে। লাখও হয়ে যেতে পারে। কেননা, প্রায় প্রত্যেক ভাষায়ই একাধিক এমনকি শত শত হাদিস গ্রন্থও রয়েছে। আগের যুগেই শত শত হাদিসের কিতাব লেখা হয়েছে। একেক ইমাম একাধিক হাদিসের কিতাব লিখেছেন। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল, বুখারি, নাসায়ি, বাইহাকিসহ অনেক ইমামের একাধিক হাদিসের কিতাব রয়েছে। আর বর্তমান যুগেও হাদিসের কিতাব লেখা হচ্ছে। তাই হাদিসের কিতাব গুণে শেষ করা প্রায় অসম্ভব। . যেসব গণ্ডমূর্খেরা জাল এবং জয়িফ কাকে বলে, তা-ই বলতে পারবে না, তারাই কেবল এই কথা বলতে পারে যে, সিহাহ সিত্তাহ ছাড়া বাকি সব কিতাব জাল ও জয়িফ! এরা সিহাহ সিত্তাহ ছাড়া অন্যগুলোর নামও জীবনে শুনেনি! অথচ ইমাম বুখারি রাহিমাহুল্লাহ নিজে এক লাখেরও বেশি সহিহ হাদিস মুখস্থ করেছিলেন। কিন্তু তন্মধ্যে মাত্র সাড়ে ছয় হাজারের মতো হাদিস তিনি সহিহ বুখারিতে এনেছেন! বাকি নব্বই হাজারেরও বেশি হাদিস তিনি বর্ণনা করেননি! এখন সেই নব্বই হাজার যদি কেউ বর্ণনা করে, তাহলে তা জাল ও জয়িফ হয়ে গেল? ইমাম বুখারি নিজে বলেছেন, আমার এই সহিহ বুখারি ছাড়াও অনেক অনেক সহিহ হাদিস রয়ে গেছে, যেগুলো আমি এই কিতাবে আনতে পারিনি। সেসব সহিহ হাদিসের অনেকগুলো মুসনাদে আহমাদ, মুসতাদরাকে হাকিম, মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবাহ এবং মুসান্নাফে আবদির রাযযাক সহ বিভিন্ন হাদিসের কিতাবে রয়েছে। . সহিহ ও জাল হাদিস চেনা এত সহজ নয়। হাদিস কোনো বোমা নয় যে, মেশিন লাগালেই লাল বাতি জ্বলবে! এটা মুহাদ্দিসদের কাজ। সাধারণ মানুষের দ্বারা এটা সম্ভব নয়। দশ বছর মাদরাসায় পড়ে, এরপর আরও দুই বছর হাদিসের ওপর গবেষণা করেও কোন হাদিস সহিহ, কোনটা জয়িফ- বলতে পারে না! আগের যুগের ইমামরা অনেক যাচাই বাছাই করে বলেছেন যে, এই হাদিস সহিহ, ওই হাদিস জয়িফ... . বই পড়েই এসব বিষয় এত সহজে বুঝতে পারবেন না। যদি আরবি জানেন, তাহলে ইবনে হাজার আসকালানির শরহু নুখবাতিল ফিকার, ইমাম যাহাবির সিয়ারু আ'লামিন নুবালা ইত্যাদি গ্রন্থ পড়তে পারেন। আর বাংলায় কিছু জাল হাদিস সম্পর্কে জানতে পারবেন "এসব হাদিস নয়" বই থেকে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ