বালিকণা আকৃতির (১/১৬ মিমি-এর চেয়ে বড় কিন্তু ২ মিমি-এর চেয়ে ছোট) উপাদান দ্বারা গঠিত একটি পাললিক শিলা। প্রাচুর্যের দিক থেকে কর্দমশিলার পরই বেলেপাথরের স্থান। নদী, বদ্বীপ এলাকা, অগভীর সমুদ্র, গভীর সমুদ্র, মরুভূমি অথবা অন্য যেকোন পাললিক পরিবেশে সঞ্চিত বালু থেকে বেলেপাথর গঠিত হয়। পেট্রোলিয়াম আধার হিসেবে বেলেপাথর গুরুত্বপূর্ণ শিলাসমূহের মধ্যে অন্যতম। প্রকৃতপক্ষে, বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত পেট্রোলিয়াম আধারসমূহের অর্ধেকই বেলেপাথর সঞ্চয়নে বিদ্যমান। বাংলাদেশের গ্যাসক্ষেত্রসমূহের সকল গ্যাস-আধার বেলেপাথর স্তর দ্বারা গঠিত। শিলার উচ্চমানের সচ্ছিদ্রতা এবং প্রবেশ্যতার কারণে এই গ্যাস-আধারসমূহ উত্তম থেকে অতি উত্তম হিসেবে বিবেচিত। গ্যাস-আধার গঠন করা ছাড়াও বেলেপাথর বাংলাদেশের ভূতত্ত্ব গঠনকারী একটি সাধারণ শিলা। নবীনতর ভূতাত্ত্বিক এককসমূহ, যেমন- ডুপি টিলা স্তরসমষ্টি এবং টিপাম স্তরসমষ্টি প্রধানত বেলেপাথর দ্বারা গঠিত যারা বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের পার্বত্য এলাকায় অবস্থিত কম উচ্চতার পাহাড়সমূহ গঠন করেছে। এদের অন্তস্থ সুরমা শিলাদল ভূতাত্ত্বিক এককটিও প্রায় সমমাপের দানাবিশিষ্ট বেলেপাথর (গ্যাস আধার) এবং কর্দমশিলার স্তরায়ন দ্বারা গঠিত। বৃহদাকৃতির নির্মাণকাজে বক হিসেবে বেলেপাথর প্রায়ই ব্যবহূত হয়।