শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

রক্তে এ্যালার্জী ইসিনোফিল অন্যান্য রক্ত কোষ যথা- লোহিত, স্বেত রক্ত কণিকার মত অস্থি মজ্জা(bone marrow) থেকে উৎপন্ন হয়। এটি স্বেত রক্ত কণিকার একটি উপাদান। ইসিনোফিল ব্যকটেরিয়া ও অন্যান্য জীবাণু বা পরজীবী মেরে ফেলে। এরা সাইটোটক্সিক অণু,সাইটোকাইনেজ নিঃসরণের মাধ্যমে এ কাজটি করে। এছাড়াও এরা পরজীবী কিটের ও ডিম্ব ধ্বংশ করে এবং এলার্জি প্রতিক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

লার্জিজনিত রোগ ও চিকিৎসা

এলার্জি বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষের কাছে এক অসহনীয় ব্যাধি। এলার্জি হাঁচি থেকে শুরু করে খাদ্য ও ওষুধের ভীষণ প্রতিক্রিয়া ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে এলার্জি সামান্যতম অসুবিধা করে, আবার কারো ক্ষেত্রে জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। ঘরের ধুলাবালি পরিষ্কার করছেন? হঠাৎ করে হাঁচি এবং পরে শ্বাসকষ্ট অথবা ফুলের গন্ধ নিচ্ছেন বা গরুর মাংস, চিংড়ি, ইলিশ ও গরুর দুধ খেলেই শুরু হলো গা চুলকানি বা চামড়ায় লাল লাল চাকা হয়ে ফুলে ওঠা।

এগুলো হলে আপনার এলার্জি আছে ধরে নিতে হবে। এলার্জি কী, কেন হয় এবং কী করেই এড়ানো যায়, তা নিয়ে কিছু আলোচনা করা যাক।

প্রত্যেক মানুষের শরীরে এক একটি প্রতিরোধ ব্যবস্হা বা ইমিউন সিষ্টেম থাকে। কোনো কারণে এই ইমিউন সিষ্টেমে গোলযোগ দেখা দিলে তখনই এলার্জির বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

এলার্জি

আমাদের শরীর সবসময়ই ক্ষতিকর বস্তুকে (পরজীবী, ছত্রাক, ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া) প্রতিরোধের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের চেষ্টা করে। এই প্রচেষ্টাকে রোগ প্রতিরোধ প্রক্রিয়া বা ইমিউন বলে। কিন্তু কখনো কখনো আমাদের শরীর সাধারণত ক্ষতিকর নয়, এমন অনেক ধরনের বস্তুকেও ক্ষতিকর ভেবে প্রতিরোধের চেষ্টা করে। সাধারণত ক্ষতিকর নয়, এমন সব বস্তুর প্রতি শরীরের এই অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াকে এলার্জি বলা হয়।

এলার্জি সৃষ্টিকারী বহিরাগত বস্তুগুলোকে এলার্জি উৎপাদক বা এলার্জেন বলা হয়।

এলার্জিজনিত প্রধান সমস্যা

এলার্জিজনিত সর্দি বা এলার্জিক রাইনাইটিস

এর উপসর্গ হচ্ছে অনবরত হাঁচি, নাক চুলকানো, নাক দিয়ে পানি পড়া বা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, কারো কারো চোখ দিয়েও পানি পড়ে এবং চোখ লাল হয়ে যায়।

এলার্জিক রাইনাইটিস দুই ধরনের

সিজনাল এলার্জিক রাইনাইটিসঃ বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় এলার্জিক রাইনাইটিস হলে একে সিজনাল এলার্জিক রাইনাইটিস বলা হয়।

পেরিনিয়াল এলার্জিক রাইনাইটিসঃ সারা বছর ধরে এলার্জিক রাইনাইটিস হলে একে পেরিনিয়াল এলার্জিক রাইনাইটস বলা হয়।

লক্ষণ ও উপসর্গ

সিজনাল এলার্জিক রাইনাইটিস

–ঘন ঘন হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া, নাসারন্ধ্র বন্ধ হয়ে যাওয়া। এছাড়াও অন্য উপসর্গ, চোখ দিয়ে পানি পড়া ও চোখে তীব্র ব্যথা অনুভব করা।

পেরিনিয়াল এলার্জিক রাইনাইটিস

–পেরিনিয়াল এলার্জিক রাইনাইটিসের উপসর্গগুলো সিজনাল এলার্জিক রাইনাইটিসের মতো। কিন্তু এ ক্ষেত্রে উপসর্গগুলো তীব্রতা কম হয় এবং স্হায়িত্বকাল বেশি হয়।

সমন্বিতভাবে এলার্জির চিকিৎসা হলো

এলার্জেন পরিহারঃ যখন এলার্জির সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায়, তখন তা পরিহার করে চললেই সহজ উপায়ে এলার্জি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

ওষুধ প্রয়োগঃ এলার্জিভেদে ওষুধ প্রয়োগ করে এলার্জি উপশম অনেকটা পাওয়া যায়।

এলার্জি ভ্যাকসিন বা ইমুনোথেরাপিঃ এলার্জি দ্রব্যাদি থেকে এড়িয়ে চলা ও ওষুধের পাশাপাশি ভ্যাকসিনও এলার্জিজনিত রোগীদের সুস্হ থাকার অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি। এ পদ্ধতি ব্যবহারে কর্টিকোষ্টেরয়েডের ব্যবহার অনেক কমে যায়। ফলে কর্টিকোষ্টেরয়েডের বহুল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে রেহাই পাওয়া যায়। বিশ্বের অধিকাংশ দেশে, বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে। বর্তমানে বিশ্বস্বাস্হ্য সংস্হাও এই ভ্যাকসিন পদ্ধতির চিকিৎসাকে এলার্জিজনিত রোগের অন্যতম চিকিৎসা বলে অভিহিত করে। এটাই এলার্জি রোগীদের দীর্ঘমেয়াদি সুস্হ থাকার একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি।

আগে ধারণা ছিল এলার্জি একবার হলে আর সারে না। কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্হার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। প্রথম দিকে ধরা পড়লে এলার্জিজনিত রোগ একেবারে সারিয়ে তোলা সম্ভব। অবহেলা করলে এবং রোগ অনেক দিন ধরে চলতে থাকলে নিরাময় করা কঠিন হয়ে পড়ে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ