সারাদিন অনেক খাটাখাটুনি হয়েছে, প্রচণ্ড ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছেন আপনি। ভাবলেন ডিনার সেরে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ি। সেইমতো বিছানায় শুয়েও পড়লেন। কিন্তু ঘুম আর আসছে না। চোখের পাতা খুলে রেখেই কেটে গেল অর্ধেক রাত। এমন সমস্যা অনেকের। বহু মানুষ ঘুম না হওয়ার সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু এটা এমন একটা রোগ, এর ওষুধও খেতে পারবেন না। রোজ রোজ ঘুমের ওষুধ খাওয়া একদমই ঠিক না। তাই রাতের পর রাত জেগেই কাটছে।

ঘুম-কে টেনে আপনার কাছে নিয়ে আসা কিন্তু এত কঠিন কাজও নয়। শুধু জানতে হবে কৌশল।

৪-৭-৮ মেথড ৪-৭-৮ নিশ্বাসের পদ্ধতি মানলে ঘুম আসবে তাড়াতাড়ি। এই পদ্ধতিতে প্রশান্তি পাবেন, ভালো ঘুমের জন্য শরীর রিল্যাক্স হওয়া দরকার। পদ্ধতি - জিভের ডগা ওপরের দাঁতের পাটির পিছনে রাখুন। হুশ শব্দ করতে থাকুন। এরপর মুখ বন্ধ করে নাক দিয়ে শ্বাস নিন। মনে মনে ৪ পর্যন্ত কাউন্ট করুন। নিশ্বাস ছাড়বেন না। ৭ পর্যন্ত গোনার পর মুখ খুলে নিশ্বাস ছাড়ুন। এভাবে তিনবার করুন। এই পদ্ধতি শরীরকে রিল্যাক্স করবে এবং তাড়তাড়ি ঘুম আসবে।

শিডিউল তৈরি করুন ঘুমের নির্দিষ্ট শিডিউল থাকলে ওইসময় দেখবেন ঘুম আসবে তাড়াতাড়ি। শরীরের রেগুলেটরি সিস্টেম আছে, যা শরীরকে অ্যালার্ট করে কখন কী করা উচিত। ঘুমের নির্দিষ্ট সময় থাকলে ওই সময় শরীর মস্তিষ্ককে অ্যালার্ট দেবে ঘুমানোর জন্য। প্রতিদিন ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমানো দরকার। ঘুমানোর আগে শরীরকে ৩০-৪৫ সময় দেওয়া দরকার হালকা হওয়ার জন্য। প্রচুর কাজ করার পর আপনার ঘুম আসবে না সঙ্গে সঙ্গে।

শরীরকে দিন ও রাতের আলোর পার্থক্য বোঝান আপনাদের আগেই বলেছি শরীরের মধ্যে একটা ইন্টারনাল ক্লক রয়েছে, যা ঘুমের সময় অ্যালার্ট করে মস্তিষ্ককে। দিনের বেলায় অতিরিক্ত আলোয় মস্তিষ্ক ঘুমোনোর সঙ্কেত পায় না। তেমনি রাতে, অন্ধকারে মেলাটোনিন হরমোন নিঃসৃত হয়, যেটা ঘুমের জন্য দরকার হয়। রাতে কালো পর্দা দিয়ে ঘিরে রাখতে পারেন রুম, এতে তাড়াতাড়ি ঘুম আসবে।

যোগা, মেডিটেশন দুশ্চিন্তায় থাকলে ঘুম আসতে চায় না। তাই ভালো ঘুমের জন্য স্ট্রেস ফ্রি থাকতে হবে। আপনার স্ট্রেস কাটাতে পারে যোগা, মেডিটেশন। ঘুমের কোয়ালিটি, ঘুমের সময়ের ওপর প্রভাব ফেলে যোগা। মেডিটেশন মেলাটোনিনের স্তরকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।

ঘড়ির দিকে তাকাবেন না মাঝরাতে অনেকের ঘুম ভেঙে যায়। তারপর আর ঘুম আসতে চায় না। দেখবেন জেগে জেগে ভোর হয়ে গেল। গবেষকরা বলছেন, মাঝরাতে ঘুম ভাঙলে ঘড়ির দিকে তাকাবেন না। এতে অবসেসড হয়ে পড়তে পারেন আপনি। ঘড়ির দিকে তাকালে উদ্বেগ বাড়বে, বারবার মনে হবে আপনার ঘুম হচ্ছে না ঠিক করে, মাঝরাত থেকে আপনাকে জেগে থাকতে হবে, আর হয়তো ঘুম হবে না। এই ধরনের চিন্তা যাতে মাথায় না আসে সেজন্য ঘড়ি বেডরুমে না রাখাই ভালো।

দিনে ঘুমোবেন না রাতে যাদের ঘুমের সমস্যা হয়, তারা দিনের বেলা না ঘুমানোর চেষ্টা করুন। গবেষণায় দেখা গেছে, দিনের বেলা ২ ঘণ্টা বা তার বেশি ঘুমোলে রাতে ঠিক মতো ঘুম আসে না।

ডিনারে নজর রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আপনি কী খাচ্ছেন, কখন খাচ্ছেন সেটা ঘুমের ওপর প্রভাব ফেলে। রাতে কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার বেশি খেলে ভালো ঘুমে ব্যাঘাত ঘটবে। তাই লো-কার্ব এবং হাই ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার রাতে খাওয়া উচিত।

দিনের বেলা এক্সারসাইজ করুন আপনি সারাদিন অ্যাকটিভ থাকলে ভালো ঘুম হবে। দিনের বেলা এক্সারসাইজ করলে সারাদিন একজন অ্যাকটিভ থাকতে পারেন। এক্সারসাইজ স্ট্রেস হরমোনের নিঃসরণ কম করে সেরোটোনিনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে। দৌড়ানো, সাইক্লিং, টেনিস খেলা খুব ভালো এক্সারসাইজ।


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে