সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বাড়ছেই। পত্রিকার পাতা, টিভির পর্দা জুড়ে আমরা প্রতিনিয়তই দেখি সড়ক দুর্ঘটনার চিত্র। শুধু বাংলাদেশেই নয় বিশ্বের অন্যান্য দেশেও সড়ক দুর্ঘটনার হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সপোর্টেশন রিসার্চ ইনস্টিটিউড এক গবেষণার বিশে^র সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনাপ্রবণ ১০টি দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে
নামিবিয়া
নামিবিয়া দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকার একটি রাষ্ট্র। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে নামিবিয়ার নাম। দেশটিতে সড়ক দুর্ঘটনায় সর্বোচ্চ সংখ্যক লোক মারা যায়। প্রতিবছর লাখে অন্তত ৪৫ জন মানুষের মৃত্যু হয় এই দেশটিতে। সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে দেশটির দুর্বল সড়ক অবকাঠামোকেই দায়ী করা হয়। তাছাড়া দেশটির অনেক চালকই দেশটির আবহাওয়া সম্পর্কে জ্ঞাত নয়, এটাও একটি কারণ।
থাইল্যান্ড
থাইল্যান্ড দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক গবেষণা অনুযায়ী বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতি ১০ হাজার লোকের মধ্যে অন্তত ৪৪ জনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার প্রাথমিক কারণ হিসেবে ধরা হয় দেশটির ট্রাফিক অব্যবস্থাপনাকে। তাছাড়া অবকাঠামোগুলো ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত না করার ফলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে সড়কগুলো।
ইরান
দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ায় পারস্য উপসাগরের তীরে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র ইরান। সাম্প্রতিক সময়ে ইরানে সড়ক দুর্ঘটনা মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক গবেষণা ও অভিবাসন বিভাগ পর্যটকদের দেশটিতে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেয়, উৎসাহিত করে। প্রতিবছর দেশটিতে লাখে অন্তত ৩৮ জন মারা যায় সড়ক দুর্ঘটনায়। কারণ হিসেবে দায়ী করা হয় দেশটির চালকদের বেপরোয়া ও নিয়ন্ত্রণহীন গাড়ি চালানো, ওভার টেকিং প্রবণতাকে। তাছাড়া দেশটির ট্রাফিক নিয়মও ঠিক ভাবে মানা হয় না।
সুদান
আফ্রিকা মহাদেশের উত্তরাঞ্চলের একটি রাষ্ট্র সুদান। প্রতিবছর লাখে অন্তত ৩৬ জনের মৃত্যু হয় সড়ক দুর্ঘটনায়।
দুর্ঘটনা বৃদ্ধির মূল কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়েছে সড়কের অবকাঠামোর দুর্বল রক্ষণাবেক্ষণকে। রাস্তাগুলো গাড়ি চালানোর জন্য ঠিক উপযোগী নয়। সেই সঙ্গে রাতের বেলা সড়কে যথেষ্ট আলোর অভাবও আরেকটি কারণ।
সুইজারল্যান্ড
ইউরোপ মহাদেশে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র সুইজারল্যান্ড। বহুকাল ধরেই ছুটি কাটানোর গন্তব্য হিসেবে সুইজারল্যান্ড গোটা বিশ্বের পর্যটকদের তালিকার প্রথম দিককার সারিতে থাকছে এই দেশটির নাম। এই দেশটির সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করা হয় নিয়ন্ত্রণহীন গতি ও ওভারটেকিং প্রবণতাকে। তাছাড়া দেশটির কিছু প্রদেশে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি রাতের বেলা যথেষ্ট আলোর অভাবও রয়েছে।
ভেনেজুয়েলা
দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের উত্তর উপকূলে ক্যারিবীয় সাগরের তীরে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র ভেনেজুয়েলা। দেশটিতে প্রতিবছর লাখে অন্তত ৩৫ জন মানুষ নিহত হয় সড়ক দুর্ঘটনায়।
প্রাথমিক কারণ হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বেপরোয়া অর্থাৎ গতিসীমার অধিক দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানোর ফলেই এই দুর্ঘটনা ঘটছে। তাছাড়া রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সড়কগুলো হয়ে পড়েছে বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।
কঙ্গো
কঙ্গো প্রজাতন্ত্র আফ্রিকা মহাদেশের একটি রাষ্ট্র। সাম্প্রতিক সময়ে এই দেশে সড়ক দুর্ঘটনা বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটে সড়কের মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবের জন্য। দেশটির কিছু সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক। তাছাড়া সড়ক দুর্ঘটনার জন্য চালককেও দায়ী করা হয়েছে। দক্ষতা, দায়িত্বজ্ঞান ও পেশাগত জ্ঞানসম্পন্ন চালকের অভাবও রয়েছে।
মালাবো
মালাবো পূর্ব আফ্রিকার একটি রাষ্ট্র। দেশটিতে প্রতিবছর লাখে অন্তত ৩২ জনের মৃত্যু হয় সড়ক দুর্ঘটনায়। দেশটির রাস্তা খুবই নাজুক। সেই সঙ্গে গাড়ির মান নিয়ন্ত্রণ করা হয় না। রাস্তায় স্ট্রিট লাইটের সংখ্যা খুবই অপ্রতুল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে এগুলোকেই দায়ী করেছে।
ইরাক
ইরাকের সড়কগুলোবেশ দুর্ঘটনাপ্রবণ। বিশেষ করে দেশটির হাইওয়ের সড়কগুলো। এই সড়কে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে বিশেষ করে দেশটির মহাসড়কগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের যথেষ্ট অভাব রয়েছে।
সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক
দেশটির বেশির ভাগ চালকই সড়কের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত নয়। একই সঙ্গে রাতের সড়কে আলো খুবই অপ্রতুল। তাছাড়া দেশটির গাড়ির মান ও রক্ষণাবেক্ষণকেও দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা