LPG বা লিকুইফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস বা লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এল পি জি অথবা এল পি গ্যাস) অর্থাৎ চাপে শীতলীকৃত জ্বালানী গ্যাস, এ সমস্ত নামে প্রোপেন বা বিউটেন কে বা এদের মিশ্রণকে ও নির্দেশ করা হয়। ব্যবহার ★এটি মূলত দাহ্য হাইড্রোকার্বন গ্যাসের মিশ্রণ এবং জালানি হিসেবে রন্ধন কার্যে, গাড়িতে ও ভবনের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে (HVAC) ব্যবহ্রত হয়। ★এটির ব্যবহার প্রপ্যাল্যান্ট গ্যাস হিসেবে এবং শীতক যন্ত্রের রেফ্রিজারেন্ট হিসেবে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে বিভিন্ন কারণে সিএফসি গ্যাসের বিকল্প হিসেবে এল পি জি ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে বায়ুমন্ডলের ওজোন স্তরের ক্ষয় রোধ করা যায়। এছাড়া যখন গাড়িতে এল পি জি ব্যবহার করা হয় তখন অটো গ্যাস নামে অভিহিত হয়। ★১৯১০ সালে আবিষ্কৃত হওয়ার পর ১৯১২ সালে বাণিজ্যিক রূপে উৎপাদন শুরু হয়। এটি জ্বলে শেষ হলে কোন অবশেষ থাকেনা এবং সালফার নির্গত হয়না , এজন্য মোট জ্বালানী শক্তির তিন শতাংশই বর্তমানে এল পি জি । এটি গ্যাসীয় হওয়ায় কোন পানি দূষণ বা ভূমির দূষণ ঘটেনা। এর ক্যালোরিফিক মান ৪৬.১ MJ/kg যেখানে ফার্নেস তৈলের জন্য এ মান ৪২.৫ MJ/kg পেট্রোল/গ্যাসোলিন এর জন্য ৪৩.৫ MJ/kg । কিন্তু এর শক্তি ঘনত্ব প্রতি একক আয়তনে ২৬ MJ/L অন্যদের তুলনায় বেশ কম; কারণ এর আপেক্ষিক ঘনত্ব ফার্নেস তৈল (প্রায় ০.৫–০.৫৮ kg/L) ও পেট্রোল/গ্যাসোলিন (০.৭১–০.৭৭ kg/L) হতে কম। ★এ গ্যাসের স্ফুটনাংক, কক্ষ তাপমাত্রার নিচে থাকে বিধায় দ্রুতই চাপ মুক্ত হয়ে বাতাসে মিশে যায়। তাপে বেড়ে গিয়ে যাতে বিস্ফোরণ না হয় সে লক্ষ্যে স্টীল নির্মিত আধারে সর্বোচ্চ চাপ সহনের মাত্রা পূর্ণ করার বদলে ৮০-৮৫% পূর্ণ করা যায়। চাপের ফলে তরল গ্যাস ও আবার বায়বীয় রুপে পরিবর্তন মোটামুটি ২৫০ঃ১ অনুপাত বজায় থাকে। বাস্পীয় চাপ নামক একটি মাত্রার চাপে এ গ্যাস তরল হয়ে থাকে, যার জন্য ২০° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ বিউটেন এর ক্ষেত্রে ২২০ কিলো প্যাসকাল চাপ প্রয়োজন হয় এবং ৫০° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ প্রোপেন এর ক্ষেত্রে ২২০০ কিলো প্যাসকাল চাপ প্রয়োজন হয়। এল পি জি, প্রাকৃতিক গ্যাসের মতো নয়, বরং বাতাসের চেয়ে ভর বেশী হওয়ায় এটি নিচু স্থান ও বেজমেন্টে জমে থাকতে পারে। বিপদ সমুহ হল - বাতাসের সাথে ছড়িয়ে পড়ার পর আগুনের সংস্পর্শে জ্বলে উঠে, অন্যথায় অক্সিজেনের স্থান দখল করে অক্সিজেনের অভাবে শ্বাস রোধ করতে পারে। ★এলপিজি অনেক দেশে অর্থনৈতিক সুবিধার জন্য রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয়, এটি জ্বালানীর উৎস হিসেবে কোন দেশে চাহিদার প্রথমে থাকে।এল.পি.জি যখন জ্বালানি হিসেবে প্রস্ত্তত করা হয় তখন তা মূলত প্রপেনসমৃদ্ধ; এর বহুল ও সাধারণ ব্যবহার হয় যানবাহনের জ্বালানি হিসেবে, রান্না এবং অন্যান্য প্রয়োজনে তাপ সৃষ্টিতে এবং মাঝে মাঝে গ্রাম এলাকায় আলোর ব্যবস্থাকরনে। সুবিধা এল.পি.জি ইঞ্জিনের অভ্যন্তরীণ দহনের জন্য উপযোগি একটি জ্বালানি। কারণ এল.পি.জি দহনের ফলে সৃষ্ট বায়ু দূষণের মাত্রা এবং কঠিন বর্জ্যের পরিমাণ অত্যন্ত কম হয় এবং এর রয়েছে উচ্চ অকটেন রেটিং। বাংলাদেশে এল.পি.জি-এর বিরাট চাহিদা রয়েছে, বিশেষ করে দেশের উত্তর এবং পশ্চিমাঞ্চলে, যেখানে প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ নেই। এল.পি.জি-এর সর্বোচ্চ চাহিদা রয়েছে পরিবহণ ক্ষেত্রে (১১.৬ লক্ষ টন), এরপরে রয়েছে গৃহস্থালী জ্বালানি হিসেবে (প্রায় ৪.৫ লক্ষ টন) এবং কৃষি ক্ষেত্রে (৪.৩ লক্ষ টন)। সামান্য পরিমাণ এল.পি.জি স্থানীয় ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও ব্যবহূত হয়। ২০১১ সালে পেট্রোবাংলার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নবনির্মিত বাসাবাড়িতে গ্যাসের পাইপলাইন সংযোগ দেয়া বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং রান্নাবান্নার কাজে বিকল্প হিসেবে সিলিন্ডারজাত এল.পি.জি.র ব্যবহারকে উৎসাহিত করা হয়। এতে করে মোট উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রায় পুরোটাই বিদ্যুৎ উৎপাদন প্ল্যান্টসমূহ এবং অন্যান্য শিল্পকারখানায় সরবরাহ করা সম্ভব হবে। সূত্র : কোরা 

Talk Doctor Online in Bissoy App