শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

যখন আপনি পেঁয়াজ কাটছেন, তখন পেঁয়াজে থাকা কোষগুলো ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর ফলে পেঁয়াজে থাকা সালফিনিক এসিড থেকে এমিনো এসিড সালফোক্সাইড বের হয়ে আসে। এর ফলে পেঁয়াজের ভেতরে যে এনজাইম ছিল তা সালফিনিক এসিডের সাথে মিশে যায় এবং প্রোপেন ইথিয়ল সালফার অক্সাইড উৎপন্ন করে। এই যৌগটি উদ্বায়ী প্রকৃতির অর্থাৎ বাতাসে ভেসে যেতে সক্ষম। যখন পেঁয়াজ কাটা হয় তখন এই প্রোপেন ইথিয়ল সালফার অক্সাইড গ্যাসটি বাতাসে ভেসে আমাদের চোখের সংস্পর্শে চলে আসে। আমাদের চোখে প্রাকৃতিকভাবেই কিছু পানি থাকে। এই পানির কাজ হচ্ছে চোখকে পরিষ্কার রাখা। পেঁয়াজ কাটার ফলে যে গ্যাস উৎপন্ন হয়, তা চোখের এই পানির সাথে বিক্রিয়া করে সালফিউরিক এসিড উৎপন্ন করে। এই সালফিউরিক এসিড চোখে জ্বালা-পোড়া সৃষ্টি করে। ফলে চোখ থেকে আরো বেশি পানি নিঃসৃত হয় যাতে এই এসিডটি ধুয়ে যেতে পারে। পেঁয়াজ কাঁটার সময়ে নিচের পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করতে পারেন। এতে আর চোখ দিয়ে পানি ঝরবে না। (১) পেঁয়াজ কাটার সময় সেগুলোকে পানিতে ডুবিয়ে রেখেই কাটতে পারেন। (২) পেঁয়াজকে ফ্রিজে রেখে দিন। ঠাণ্ডা পেঁয়াজ কাটলে ঝাঁঝ কম বের হয়। কারণ পেঁয়াজ কাটলে উপরে যে রাসায়নিক প্রক্রিয়ার বর্ণনা আমরা দিয়েছি, ঠাণ্ডা পেয়াজে সেই প্রক্রিয়াটি অনেক ধীর গতিতে সম্পন্ন হয়। অর্থাৎ চোখ জ্বালা-পোড়ার জন্য যে গ্যাসটি দায়ী সেটি তেমন নির্গত হয় না।

পেঁয়াজ কাটার সময় আমরা আসলে অসংখ্য কোষ কাটি। ফলে কোষের ভেতরে থাকা পদার্থগুলো মুক্ত হয়ে যায়। কোষে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড সালফোক্সাইড মিলে তৈরি করে সালফেনিক অ্যাসিড। কোষের ভেতরে থাকা বিভিন্ন এনজাইম সালফেনিক অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে তৈরি করে প্রোপেনিয়াল এস-অক্সাইড নামক সালফারের একটি উদ্বায়ী যৌগ। এই যৌগ বাতাসে ভেসে চলে আসে আমাদের চোখে। পরে তা চোখের জলীয় অংশের সঙ্গে বিক্রিয়ায় তৈরি করে সালফিউরিক অ্যাসিড। আর এই অ্যাসিডের কারণেই আমাদের চোখে জ্বালাপোড়া হয়। তখন চোখের ভেতরে ঢুকে পড়া অ্যাসিড দূর করে দিতেই মূলত চোখ থেকে পানি বের হয়।