শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

আদর্শ পুকুরের বৈশিষ্ট্য সমূহঃ- পুকুরের পানির বর্ন হালকা সবুজ হবে। পানির তাপমাত্রা ২৫-৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস হবে। পানির স্বচ্চতা ১০-২০ সে. মি হবে। ৬-৮ ঘন্টা আলোর ব্যবস্থা থাকবে। ৫-১০ পিপিএম দ্রবীভূত অক্সিজেন থাকবে এবং দ্রবীভূত কর্বন-ডাই অক্সাইড হবে ১-২ পিপিএম এর নিচে। পানির পিএইচ ৭.৫ থেকে ৮.৫ এর মধ্যে। লৌহ এর পরিমাণ থাকবে ০.৫ পিপিএম এর নিচে। ক্ষারকত্ব হবে ১০০-২০০ পিপিএম, হাইড্রোেজন গ্যাস থাকবে ০.০০০২ পিপিএম এবং পানির ঘোলাত্ব হবে ২০০০০ পিপিএম এর কম। পানিরউপর কোনো শ্যাওলার স্তর থাকবে না এবং পানির উপর কোনো লাল স্তর থাকবে না। পুকুরের তলদেশে ১৫ সেমির নিচে কাঁদা থাকবে। প্রয়োজনীয় পানি ধারন ক্ষমতা থাকবে। পুকুরের আকৃতৃ আয়তকার হবে। চাষযোগ্য মাছ অনুযায়ী পানির গভীরতা থাকবে। পরিমিত প্রাকৃতিক খাবার থাকবে। পুকুরে বকচর থাকবে। পুকুরে আলো বাতাসের প্রবাহ থাকবে। পুকুরের পানি দূষনমুক্ত থাকবে। পুকুর রাক্ষুসে মাছ মুক্ত থাকবে। ক্ষতিকারক প্রানি মুক্ত থাকবে। পানি দেয়া এবং পানি নিষ্কাশনের উন্নত ব্যবস্থা থাকবে। পুকুরে পর্যাপ্ত রোদ পড়বে পুকুরের তলায় জৈব পদাথের পরিমান ১-২% থাকবে। কাদার পরিমান ৪-৬ ইঞ্চি থাকবে। পুকুরের তলা পঁচা কাদামুক্ত হবে এবং  মাটি দোঁ-আশ হবে। পানি ধারনের স্থায়িত্বকাল বিবেচনায় পুকুর দুই ধরনের হয়ে থাকে- ১/বাৎসরিক ও ২/ মৌসুমি। বাৎসরিক পুকুরের বৈশিষ্ট সমূহঃ সারা বছর পানি থাকে, পুকুরের গভীরতা ৪-৯ ফুট কিংবা তার চেয়েও বেশি থাকে, রুই কাতল জাতিয় মাছ চাষ করা যায়। চাষ যোগ্য মাচের নাচারি এবং লালন পুকুর হিসেবে ব্যবহার করা যায়। মৌসুমি পুকুরের বৈশিষ্টসমূহঃ মৈসুমি পুকুরে সাধারনত বছরের একটা নিদ্দিষ্ট সময়ে পানি থাকে। ৫-৭ মাস পচনি থাকে। পুকুরের গভীরতা ২-৭ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। সরপুটি, শিং, মাগুর, নাইলেটিকা, মাছের চাষ করা যায়। চিংড়িও চাষ করা যায়। মাচ চাষের ধরনের উপর ভিত্তি করে পুকুরকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। ১/ আতুর পকুরঃ যেসমস্ত ছোট, মাঝারি এবং অগভীর পুকুরে ৪-৫ দিন বয়সি রেণু পোনা ছেড়ে ১৫-২০ দিন লালন পালন করা হয়, সে সমস্ত পুকুরই আতুর পুকুর। আতুর পুকুরের পানির গভীরতা ৩-৫ ফুট পর্যন্ত হয়। এবং আয়তন ১০-২৫ শতাংশ হয়। মাটি দোআস কিংবা এটেল দোআস হয়। চারাপুকুর/লালন পুকুরঃ আতুর পুকুর এবং চারা পুকুর প্রায় একই ধরনের হয়। তবে চারা পুকৃর কিছুটা বড় হয়ে থাকে। এসমস্ত পুকুরে এক ইন্ঞি মাপের ১৫-২০   দিনের পোনা মজুদ করে ৩-৪ ইন্চি বড় করে পোনা বিকক্রি করা হয়। পানির গভীরতা ৪-৫ ফুট বা কিছুটা বড়ও হয়ে থাকে এবং আয়তন ২৫-১০০ শতাং পর্যন্ত হেত পারে। মজুদ পুকুরঃ চারা পুকুর ধেকে বড় এবং বাৎসরিক পুকুরকে মজুদ পুকুর হিসেবে ব্যবজার করা যায়। এসমস্ত পুকুরে পানির গভীরতা ৪-৯ কিংবা তার চেয়েও বেশী হতে পারে। আয়তন ২০ শতাংশ কিংবা তার ছেয়েও বড় যে কোন মাপের এবং যে কোনো আকৃতির হতে পারে। প্রতি শতাংশে ৩০-৩৫ টি বড় পোনা চাষ করা যেতে পারে। রুই, কাতল, পাঙ্গাস ইত্যাদি মাছ অথবা চিংড়ির চাষও করা যেতে পারে। এসমস্ত পুকুরে ৩-৪ ইন্চি মাপের পোনা ছেড়ে ১-২ বছরে বড় মাছ উৎপাদন করা হয়। আয়তনের উপর ভিত্তি করেও পুকুর তিন প্রকারঃ মিনি পুকুরঃ সরপুটি, শিং, মাগুর, নাইলেটিকা ইত্যাদি মাছ চাষের জন্য ভালো। মিনি পুকুর সাধারনত ১-৫ পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রয়োযনে পুকুরের পানি সহজেই পরিবর্তন করা যায়। মাছের যত্ননেয়া এবং সহজেই মাছ ধরা যায়। মাঝারি পুকুরঃ রুই, কাতল এবং কার্প জাতীয় মাছের পোনা উৎপাদনে ব্যবহার করা যায়। কার্প এবং চিংড়ির মিশ্র চাষের জন্য ব্যবহার করা যায়। মাঝারি পুকুরের আয়তন ১০-৩০ শতাংশ হয়ে থাকে। বড় মজুদ পুকুরঃ কাতল, রুই, চীনা কর্প ইত্যাদি বড় আকারের মাছ চাষ করা হয়ে থাকে। ১-২ বছর কিংবা তার চেয়েও বেশি সময়ের মাছ চাষ করা হয়। পুকুরের আয়তন ৩০ শতাংেশর বেশী। গভীরতা ৪-৯ ফুট কিংবা তার ক্ষেত্র বিশেষ তার চেয়েও বেশী হয়। এবং ব্যবস্থাপনা ব্যয়সাধ্য। পুকুরের পাড় ঝোপঝাড় মুক্ত রাখাঃ পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদনের জন্য দৈনিক ৬-৮ ঘন্টা সূর্যালোক পড়া প্রয়োজন। পুকুরের পাড়ের গাছপালা ঝোপঝাড় থাকার করনে পর্যাপ্ত সূর্যালোকের অভাবে পর্যাপত সার দেয়ার পরেও কাঙ্খিত পরিমাণ ফাইটোফপ্লাঙ্কটন উৎপন্ন হয় না। ফলে পুকুরের মধে্য অক্সিজেন  এর ঘাটতি দেখা দেয়। এজন্য পুকুরের পাড় ঝোপঝাড় মুকত রাখতে হবে। তাছাড়া পুকুর পাড়ের ঝোপঝাড় হতে পাতা পড়ে পুকুরের  পানি বিষাক্ত করে পেলে। পুকুরের তলার অতিরিক্ত কাঁদা সরানোঃ পুকুরের তলদেশে ১৫ সেমি এর কম পরিমাণ কাঁদা থাকা উচিৎ। কাঁদা বেশি হলে অধিক পরিমাণে জৈব পদার্থ থাকে ফলে পানিতে অধিক পরিমান মিথেন, কর্বন-ডাই অক্সাইড ও অন্যান্য বিষাক্ত গ্যাসের সৃষ্টি হয় যা মাছের জন্য ক্ষতিকর। আগাছা অপসারণঃ কচুরিপানা, টোপাপানা, শাপলা, কলমিলতা, হেলেঞ্চা, ক্ষুদেপানা ইত্যাদি পুকুরের পানিতে সূর্যালোকে পড়তে ও বাতাস চলাচল করতে বাঁধা দেয় ফলে প্রাতৃতিক খাদ্য তৈরী ব্যহত হয়। তাছাড়া, এসব জলজ আগাছায় সাপ, ব্যাঙ্গ আশ্রয় নেয়। রোগ জীবানু চড়ায়। কাজেই এসব জলজ আগাছা সরিয়ে ফেলতে হবে। গুগল থেকে নেওয়া।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ