রাতে শোওয়ার প্রস্তুতি চলছে। স্ত্রী বড় আয়নার সামনে বসে চুল আঁচড়ে নিচ্ছিলেন। আর খুঁটিয়ে দেখছিলেন নিজেকে। স্বামী পেপার পড়ছিলেন খাটে হেলান দিয়ে। প্রতিদিনের অভ্যেস। দিনে পড়ার সময় পান না। তাছাড়া না পড়লে ঘুম আসতে দেরি হয়। এ নিয়ে স্ত্রী মাঝেমধ্যে খিটিমিটি করেন। প্রতিরাতে এভাবে পেপার পড়াটা তার খুব অপছন্দ। প্রায় ২০ বছরের দাম্পত্য জীবন তাদের।
স্ত্রী আয়নায় নিজেকে পরখ করে স্বামীকে বললেন, ‘দিন দিন বুড়ি হয়ে যাচ্ছি। তাই না?’
কোনো কথা বললেন না স্বামী। শুধু একবার স্ত্রীকে দেখলেন।
স্ত্রী আবার বললেন, ‘চেহারায় কেমন বলিরেখা দেখা দিয়েছে। থুতনিতে মাংস জমেছে। বিশ্রী লাগে দেখতে, খেয়াল করেছ তুমি?’
এবারও কোনো জবাব দিলেন না স্বামী। চোখ না তুলে পেপার পড়তে থাকলেন।
এতে একটু বিরক্ত হলেন স্ত্রী। আয়নায় ঝুঁকে বললেন, ‘দেখো, চুলে কেমন পাক ধরেছে। চামড়া ঝুলে যাচ্ছে!’
এসব শুনে স্বামীর কোনো প্রতিক্রিয়া হলো না। একেবারে চুপ থাকলেন। স্ত্রীর কথায় সম্মতি বা অসম্মতি কোনোটাই জানালেন না।
স্বামীর দিকে ঘুরে স্ত্রী বললেন, ‘কিছু বলছ না যে?’
তবু স্বামী চুপ। পেপার পড়ায় মনোযোগ।
এবার স্ত্রী একটু রাগের সঙ্গে জানতে চাইলেন, ‘নীরব না থেকে কিছু একটা তো বলবে?’
স্বামী মৃদু স্বরে বললেন, ‘কী আর বলব!’
‘কী আর বলব মানে!’ রাগ বাড়ল স্ত্রীর। ঝগড়ার সুরে জানতে চাইলেন, ‘বলো, আমি যা বললাম তা ঠিক কিনা?’
স্বামী আবার চুপ। এবার স্ত্রী ঝাঁজের সঙ্গেই বললেন, ‘ক্যাবলার মতো ওভাবে পেপার না পড়ে কিছু একটা তো বলবে?’
‘তা বয়সের কারণে ওসব হতেই পারে। তবে আর যা-ই হোক, তোমার চোখের চাহনি আগের মতোই আছে।’
‘তাই নাকি! বলছ?’ একটু খুশিই মনে হলো স্ত্রীকে।
স্বামী বললেন, ‘হ্যাঁ, যখন তুমি ঝগড়া শুরু করো!’