মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছেন। এটি সন্দেহাতীতভাবে একটি ভালো উদ্যোগ।

এইচএসসি পাসের পরই নেমে পড়তে হয় ভর্তিযুদ্ধে। লেখাপড়ার মান,  পরিবেশ এবং আর্থিক সাশ্রয় বিবেচনায় সবার মনেই স্বপ্ন থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক সময় বিভাগীয় শহরকেন্দ্রিক হওয়ায় অসুবিধা হয়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই নেই পর্যাপ্ত আবাসন সুবিধা। যার ফলে মেসে, হোস্টেলে থাকতে হয় অনেকের। ছেলেরা মানিয়ে নিতে  পারলেও মেয়েরা অনেক সময় প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়। এভাবে থাকার খরচ অনেক বেশি। দরিদ্র, নিম্নমধ্যবিত্ত ও ক্ষেত্রবিশেষে মধ্যবিত্তরা  পড়েন ভোগান্তির মুখে। অনেককেই পড়ার সময় প্রাইভেট পড়ানোর জন্য দৌড়াতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করে এবং দুই-তিনটা প্রাইভেট পড়িয়ে পরীক্ষা ও টেস্টের প্রস্তুতি নেওয়ার পর্যাপ্ত সময় থাকে না। কিন্তু পরীক্ষায় পাস তো করতে হবে!  তাই পরীক্ষার তিন মাস আগ থেকে চলে নোটের পেছনে দৌড়াদৌড়ি । নোট  মুখস্থ করে কোনোক্রমে  দ্বিতীয় শ্রেণি পেলেই যেন তুষ্ট শিক্ষার্থীরা।

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে স্কুল-কলেজের একটি মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। স্কুল-কলেজ জ্ঞান দেয় এবং সেই জ্ঞান কাজে লাগিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান সৃষ্টি করে। মুখস্থনির্ভর শিক্ষা এই জ্ঞানসৃষ্টির অন্যতম পথের কাঁটা। তাই শিক্ষার মানোন্নয়নেও জেলাভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন অতীব জরুরি ।

আর বর্তমান সরকারের  মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে উন্নয়ন। তবে কেউ আঙুল ফুলে কলাগাছ, কেউ দিন আনে দিন খায় -এটা উন্নয়ন না। যেসব জায়গায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চাহিদা পূরণে সেখানে অবকাঠামোও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কর্মসংস্থান হয়েছে বহু লোকের। তাই অবহেলিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিকল্প নেই।

তাই ৬৪ জেলার প্রতিটিতে ন্যূনতম ১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এখন সময়ের দাবি। 



শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে