December 12, 2017 সাইফুল ইসলাম সোহেল ভ্রমণ গাইড
Last updated on September 30th, 2019 at 07:36 pm
আপনারা যারা ইন্ডিয়া ভ্রমনে যেতে চাচ্ছেন টুরিস্ট হিসেবে তাদের প্রথম যে জিনিসটি জরুরি তা হল ভারতীয় ভিসা। ইন্ডিয়ান ভিসা প্রসেসিং করার জন্য আপনারা হয়ত অনেকেই কোন এজেন্ট দিয়ে ভিসার ফর্ম পুরন ও ভিসা ফি পরিশোধ করিয়ে থাকেন। এজন্য গুনতে হয় অতিরিক্ত খরচ। এছাড়া ফর্ম পুরনেও মাঝে মাঝে ভুল হয়ে থাকে যেগুলো নিজে করলে এড়ানো সম্ভব। এখন আপনি কিন্তু কোন এজেন্টের সহায়তা ছাড়াই নিজে নিজেই করে ফেলতে পারেন ফর্ম পুরন থেকে শুরু করে জমাদান পর্যন্ত সকল কাজ।
আজ এখানে আমি আপনাদের ইন্ডিয়ান ভিসা পাওয়ার উপায় তথা ইন্ডিয়ান ভিসা আবেদন করার নিয়ম বিস্তারিত জানাবো। কিভাবে ভারতীয় ভিসার জন্য আবেদন করবেন ও এর জন্য কি কি কাগজপত্র লাগবে, কোথায়, কিভাবে আবদনপত্র জমা দিবেন ইত্যাদিসহ সবকিছু সাথে আমার নিজের আবেদন জমা দেয়ার অভিজ্ঞতা। আমি নিজে গতবছর ডিসেম্বরে আমার ইন্ডিয়ান ভিসা প্রসেসিং আমি করিয়েছি। এছাড়া গতবছর এপ্রিলেও আমি আমার ভাইয়ের ভিসার সব কিছু রেডি করে দিয়েছি।
আপনারা যারা লেখা পড়তে পছন্দ করেন তারা এই লেখাটি পড়ুন। তবে যারা ভিডিও পছন্দ করেন তাদের জন্য আমি ‘ইন্ডিয়ান ভিসা প্রসেসিং এর A-Z’ নামে ‘Nirbodh‘ এর ইউটিউবে চ্যানেলে একটি সিরিজ শুরু করছি। সব ভিডিও এখন আপলোড করা হয়নি। তবে এই সপ্তাহের মাঝেই সব দিতে চেষ্টা করব। আমি নিজে আবার সামনের সপ্তাহে ভিসা আবেদন করব আর সেই এক্সপেরিয়েন্স থেকে নতুন করে সব তথ্য দেয়ার জন্যই একটু অপেক্ষা করছি। এছাড়া এই লেখাটির মাঝে মাঝেও ওই সেকশন রিলেটেড ভিডিও দিয়ে দিচ্ছি আপনার সুবিধার জন্য। আর এখানে সম্পুর্ন প্লে-লিস্টদিয়ে দিচ্ছি।
লেখাটি অনেক বড় বিধায় প্রয়োজনীয় অংশে দ্রুত নেভিগেট করতে এই ‘Quick Navigation’ মেনুটি ব্যবহার করতে পারেন। ‘Quick Navigation’ এর পাশের [show] তে ক্লিক করলেই সম্পুর্ন মেনু দেখতে পারবেন।
Quick Navigation [show]
১. আবেদন ফর্ম রেডি করা (পুরণ করা, ছবি আর স্বাক্ষর দেয়া)
২. প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি সংগ্রহ
৩. ভিসা আবেদন ফি পরিশোধ করা
৪. ভিসা আবেদন জমা দেয়া
৫. পাসপোর্ট সংগ্রহ বা ফেরত নেয়া।
মনে রাখবেন এখন কোন কেন্দ্রেই কোন ধরণের ভিসার জন্যই অ্যাপয়েন্টমেন্ট বা ইটোকেন লাগে না।
আপনারা যারা জানেন কিভাবে কি করতে হয়, শুধু জানতে এসেছেন যে কি কি ডকুমেন্ট লাগবে এখং এত বড় লেখা পড়ার সময় নেই তাদের জন্য এটুকুই যথেষ্ট। তাহলে চলুন এখন, যেসব কাগজপত্র জমা দিতে হবে তা এক নজরে দেখে নিই। এখানে সব ডকুমেন্ট যে ক্রমে জমা দিতে হবে সেই ক্রম অনুযায়ী নিচে দেয়া হল। IVAC গেলেই দেখবেন উচ্চসরে বারবার বলা হবে যে এই ক্রমে কাগজ রেডি করুন।
তবে আপনারা সব বিষয় সম্পর্কে আরো ভাল করে জানার জন্য আমার ভিডিওটিওদেখতে পারেন।
ইন্ডিয়ান ভিসার জন্য কি কি কাগজ লাগবে(ভিডিও)
সকল কাগজপত্রের মেইন কপি নিয়ে যাবেন, ওরা দেখতে চাইবে। না দেখাতে পারলে জমা নাও নিতে পারে। কাগজগুলো স্ট্যাপল করার দরকার নেই, ওরা বলে স্ট্যাপল করা থাকলে খুলে ফেলতে। আপনি চাইলে একটা ফাইলে সব নিতে পারেন।
এখানে শুধুমাত্র ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য যেসব ডকুমেন্ট লাগে তা উল্লেখ করা হয়েছে। মেডিক্যাল, ট্রানজিট ও ব্যাবসা ভিসার জন্য প্রধান সব ডকুমেন্ট একই তবে আলাদা আলাদা কিছু ডকুমেন্ট লাগে। আপনারা IVAC এর হেল্পলাইন থেকে জেনে নিতে পারেন।
আর মেডিকেল ভিসা আবেদনের বিস্তারিত দেখুন এখানে ইন্ডিয়ান মেডিকেল ভিসা করার নিয়ম
আবেদনপত্র পুরন করার আগে আপনার ছবির একটা সফট কপি লাগবে যেটা আপনাকে একেবারে শেষ ধাপে আপলোড করতে হবে। তাই আগে থেকেই রেডি রাখুন। ওদের মতে ”ডিজিটাল ছবি ও একটি রঙ্গীন ছবি (উভয় ছবিই একই হতে হবে এবং তিন মাসের কম সময়ের মধ্যে তোলা হতে হবে।”
ভিসা আবেদন ফরমটি কিভাবে পুরন করবেন সেটা বিস্তারিত দেখুন আমার নতুন করা ভিডিও টিউটোরিয়ালটিতে। ভিডিওটি দেখতে ক্লিক করুন এখানেঅথবা নিচের ছবিতে।
এখন ইন্ডিয়ান ভিসা ফরম পুরন করতে যান চলে এই লিংকে https://indianvisa-bangladesh.nic.in/visa/index.html তারপর ‘Online Visa Application‘ লিংকে ক্লিক করে তথ্য পুরন করা শুরু করুন।
উপরের স্যাম্পল ফাইল দেখলেই বুঝবেন কি কি তথ্য কোথায় দিতে হবে। শুধু যেখানে ইন্ডিয়ার কোন রেফারেন্স চাইবে সেখানে যেকোন হোটেলের নাম ঠিকানা, টেলিফোন দিলেই হবে। গুগল ম্যাপে সার্চ দিলেই অনেক হোটেলের নাম পাবেন। একি ভাবে শেষের দিকে ভারতে কোন হোটেলে থাকবেন সেইরকম হোটেলের নাম চাইবে, সেখানেও সেইম হোটেলের নাম, ঠিকানা, টেলিফোন দিন।
আপনি কি ভিসা চাচ্ছেন, কত মাসের জন্য, এন্ট্রি সংখ্যা ও সবচেয়ে গুরত্বপুর্ন হল পোর্ট সিলেকশন অংশ।
আপনাকে একেবারে প্রথম দিকেই ‘Visa Type’ সিলেক্ট করতে হবে। আপনি যেহেতু টুরিস্ট হিসেবে যাচ্ছেন সেহেতু ‘TOURIST VISA’ সিলেক্ট করুন।
কত মাসের ভিসা চাচ্ছেন এখানে আপনি ৩, ৬, ১২ আপনার যেটা দরকার সেটা দিতে পারেন। তবে ১২ দেয়াই ভাল, কেননা ওরা চাইলে ১২ বদলে ৬ মাস দিতে পারে। কিন্তু আপনি ৩ মাস চাইলে তো আর ওরা ৬ মাস দিবে না।
No of Entries অপশনে আপনি কতবার ভারতে প্রবেশ করতে চান সেটা দিবেন। আপনি SINGLE অথবা MULTIPLE যেতা দরকার দিতে পারেন। তবে ভিসার মেয়াদের মাঝে একাধিকবার যেতে চাইলে MULTIPLE দিবেন।
সবচেয়ে গুরত্বপুর্ন অংশ হল পোর্ট সিলেকশন। মানে যাওয়া আসার জন্য কোন পোর্ট সিলেক্ট করবেন। যেমন ধরুন আমাদের দেশে ৩ টা পোর্ট খুবই জনপ্রিয়। হরিদাসপুর/বেনাপোল, ডাউকি/তামাবিল ও চ্যাংড়াবান্ধা/বুড়িমারি। যারা শিলং যেতে চান তারা BY ROAD DAWKI, যারা দার্জিলিং যেতে চান তারা Changrabandha ও যারা কলকাতা বা কলকাতা হয়ে ইন্ডিয়ার অন্য শহর যাবেন তারা Haridaspur সিলেক্ট করবেন। এখন আরেকটি বিষয় মাথায় রাখবেন যে আপনার যেকোন পোর্টের ইন্ডিয়ার ভিসা থাকলেই আপনি ইন্ডিয়ার যেকোন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে, Haridaspur দিয়ে গাড়িতে ও Gede দিয়ে রেলে যেতে পারবেন। তাই আমার মতে আপনি প্রিফারেন্সের ভিত্তিতে অন্য যেকোন পোর্ট সিলেক্ট করতে পারেন কেননা আপনি Haridaspur by Road, by Road/Rail Gede and AIR তো ফ্রি পাচ্ছেনই এর সাথে। তাই আমি আমার বেলায় ‘BY ROAD DAWKI’ সিলেক্ট করেছিলাম। আশা করি বুঝতে পারছেন।
ইন্ডিয়ান ভিসার পোর্ট পরিবর্তন আবেদনের বিস্তারিত
সবার শেষে ছবি আপলোড করে ফর্মটি প্রিন্ট করে নিন।
এখন এক কপি ২x২ ইঞ্চি মাপের ওই একই ছবির একটি ছবি আঠা দিয়ে লাগিয়ে নিন।
এখন ছবির ঠিক নিচের বক্সে ও ২য় পেইজের নিচে ডান দিকে পাসপোর্টের মত স্বাক্ষর করুন।
ব্যাস হয়ে গেল ফর্ম রেডি।
যেসব কাগজপত্র পাসপোর্ট ও ফর্মের সাথে দিতে হবে তা উপরে সংক্ষপে বলা হয়েছে। এখানে বিস্তারিত তুলে ধরা হল। আপনি অফিয়াল ওয়েবসাইট হতেও দেখে নিতে পারেন এখান থেকে। তবে এখানে আমি সহজে বিস্তারিত বলার চেষ্টা করব।
তবে আপনারা সব বিষয় সম্পর্কে আরো ভাল করে জানার জন্য আমার ভিডিওটিওদেখুন। আমি সুন্দর করে সব বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেছি।
বিদেশ ভ্রমনের নাম নিলেই যেটি সবার আগে লাগবে সেটি হচ্ছে পাসপোর্ট। তাই পাসপোর্ট না থাকলে পাসপোর্ট করে নিন। পাসপোর্ট করতে পড়ুন পাসপোর্ট করার নিয়ম। পাসপোর্ট সম্পর্কে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে সেগুলো হচ্ছে-
এর যেকোন একটা হলেই হবে। এইগুলা দ্বারা দেখা হয় যে আপনি এই দেশের নাগরিক, এছাড়া স্থায়ী ঠিকানা প্রমানের জন্যও এটা দরকার।ফর্মে স্থায়ী ঠিকানা এ অনুযায়ী পুরন করবেন।
গত তিনমাসের একটি Paid অথবা Unpaid বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস বা টেলিফোন বিলের ফটোকপি। এর সাথে শুধুমাত্র আপনার বর্তমান ঠিকানার মিল থাকতে হবে। হুবুহু, মিল থাকতে হবে এমন হয়, তবে ঝামেলা এড়াতে এটা দেখেই ফর্ম পুরন করা উচিৎ। আর এ বিল আপনার নামে হতে হবে না।
বিল প্রিপেইড কার্ড সিস্টেম হলে কার্ডে যেখানে ঠিকানা লিখা আছে সেটাসহ সম্পুর্ন কার্ডের ফটোকপি দিবেন সাথে লাস্ট বিল জমা দেয়ার রশিদ দিতে পারলে ভাল হয়।
আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণের জন্য ব্যাংক স্টেটমেন্ট অথবা ডলার এনডোর্সমেন্ট লাগবে।
একাউন্টে কমপক্ষে ২০,০০০ টাকা রেখে গত ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট নিন। অনলাইন কপি হলে হবে না, ব্যংকে সিল ও স্বাক্ষর থাকতে হবে। আর ভিসা আবেদন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ব্যালেন্স বজায় রাখুন। ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর ফটোকপি না দিয়ে, মেইন কপিই দিয়ে দিতে পারেন। আপনার নিজের ব্যাংক স্টেটমেন্ট না থাকলে আপনি আপনার বাবা-মায়ের ব্যাংক স্টেটমেন্টও ব্যাবহার করতে পারেন।
৩০.৪.২০১৯ আপডেটঃ
যারা ব্যাংক স্টেটমেন্ট দিয়ে ইন্ডিয়ান ভিসার জন্য আবেদন করবেন, তারা অবশ্যই Jamuna Future Park – Ivac এ যাওয়ার সময় ব্যাংকের চেক বুক/ATM/Credit/ Dual currency Card সাথে করে নিয়ে যাবেন, অন্যথায় ফাইল জমা নিবে না। এবং যারা ডলার এনডোরস করে আবেদন করেছেন তারা অবশ্যই রিয়েল এনডোরসমেন্ট করবেন, এবং এন্ডোর্স্মেন্ট এর কপি ও সাথে করে ডলার অবশ্যই নিয়ে যাবেন। তারা ডলার দেখতে চায়, না দেখাতে পারলে জমা নিবে না। আমি আজকে পাসপোর্ট জমা দিয়ে এসেছি, আমার কাছেও ডলার দেখতে চেয়েছে,আমি ডলার সাথে করেই নিয়ে গিয়েছিলাম।
অনেক মানুষ কে দেখেছি যারা চেক বুক দেখাতে পারেনি, ডলার দেখাতে পারেনি, তাদের পাসপোর্ট জমা নেয় নাই।
এখন থেকে মানি এক্সচেঞ্জ এর ডলার এনডোর্সমেন্ট IVAC গ্রহণ করে না। তাই আপনাকে কোন তফসিলি ব্যাংক মানে সরকারি, বেসরকারি যেকোন ব্যাংক থেকে ১৫০ ডলার এনডোর্স করতে হবে। তবে আপনি ২০০ করাতে পারেন। আর অবশ্যই এনডোর্সমেন্ট এর পেপার এর কপি জমা দিতে হবে, শুধু পাসপোর্টে এনডোর্স করালে হবে না। এনডোর্সমেন্ট এর পেপার বর্ডারে লাগতে পারে তাই কপি বা মেইন কপি সংরক্ষণ করুন।
আপডেটঃ আপনাদের জন্য সুখবর হচ্ছে এখন আইভিএসি ঢাকা ও আইভিএসি চট্টগ্রামে সকাল ৯.০০ টা থেকে বিকাল ৪.০০ টা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ভ্রমণ কার্ড এবং ডলার এন্ডোর্স্মেন্ট করতে পারবেন।
আপনার যদি আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড থাকে তাহলে, ব্যাংক আপনার পাসপোর্টে এন্ডোর্সমেন্ট এরিয়াতে এন্ডোর্স করে দিবে। আর ভিসা আবেদন করার জন্য এই এন্ডোর্সমেন্ট পেইজের ফটোকপি ও কার্ডের দুই পাশের ফটোকপি জমা দিতে হবে। তবে আপনি চাইলে নিরাপত্তার জন্য কার্ডের মাঝের ৪ ডিজিট ব্লক করে দিতে পারেন।
এছাড়া অনেক ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল কার্ড ইস্যু করে যেমন, ইবিএল একুয়া কার্ড, লাইফস্টাইল কার্ড, স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার ট্রাভেল কার্ড ইত্যাদি। এইগুলার ক্ষেত্রেও একই ভাবে এন্ডোর্সমেন্ট পেইজের ফটোকপি ও কার্ডের দুই পাশের ফটোকপি জমা দিতে হবে।
আপনি ছাত্র হলে স্টুডেন্ট আইডি কার্ড বা বেতনের রশিদ এর ফটোকপি।
চাকুরীজীবী হলে NOC (No Objection Certificate)
আর ব্যাবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি দিবেন।
গৃহিণী হলে সে যার উপর নির্ভরশীল তার পেশার কাগজ দিতে হবে।
ফ্রিল্যান্সার হলে যে প্লাটফর্মে কাজ করেন সেখান থেকে কিছু দিতে পারেন। যেমন ধরুন প্রোফাইলের প্রিন্ট, আর্নিং হিস্টোরি। আর যারা Upwork এর কাজ করেন তারা ‘Certificate of Earnings’ দিতে পারেন। যেকোন দেশের ভিসা আবেদনে ইহা ওষুধের মত কাজ করে।
ইন্ডিয়ান ভিসা ফর্মে পেশা হিসেবে Freelancer অপশন আছে।
আর অন্য কোন কাগজ যদি দিতে চান তাহলে আপনি দিতে পারেন। তবে আবশ্যিক কিছু না। যেমন, আপনি চাইলে আপনি কভার লেটার, অথবা আগে ভিসা করে না গেলে তার কারণ লিখে আবেদন জমা দিতে পারেন ইতাদি।
ইন্ডিয়ান ভিসার নতুন নিয়ম ২০১৮অনুযায়ী ৫ আগস্ট ২০১৮ থেকে ভিসা প্রক্রিয়াকরণ ফি সকল কেন্দ্রের জন্য ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে । ইন্ডিয়ান ভিসা আপনি দুইভাবে জমা দিতে পারেন।
তবে যেভাবেই ফি দিন না কেন একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন ভিসা ফি পেমেন্ট করার পর ৩ দিনের মাঝেই ফর্ম জমা দিতে হবে। না দিলে পেমেন্ট বাতিল হয়ে যাবে এবং আবার ফি পে করতে হবে।
ইন্ডিয়ান ভিসা ফি জমা দেয়া এখন খুবই সহজ। আপনি নিজে ঘরে বসে ইন্ডিয়ান ভিসা ফি জমা দিতে পারেন। এর জন্য এই লিংকে গিয়ে বিস্তারিত পুরন করে বিভিন্ন পেমেন্ট অপশনের যেকোন একটা দিয়ে পে করতে পারবেন। পেমেন্ট অপশন গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বিকাশ, রকেট, DBBL Nexus, দেশি বিদেশি ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড ইত্যাদি। কিভাবে পুরো প্রক্রিয়াটা শেষ করবেন তার জন্য IVAC বিস্তারিত একটা ম্যানুয়াল রেডি করে রেখেছে, সেটা দেখুন এখানে। ৮০০ টাকা ফি আর পেমেন্ট চার্জসহ ৮২৪ লাগবে।
ভিসা এপ্লিকেশন ফি কিভাবে নিজে নিজে অনাওলাইনে পরিশোধ করবেন সেটা বিস্তারিত দেখুন আমার নতুন করা ভিডিও টিউটোরিয়ালটিতে। ভিডিওটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে অথবা নিচের ছবিতে।
এখন আপনি যদি নিজে ফি দিতে না চান, তাহলে ভিসা আবেদন কেন্দ্রের আশেপাশে অনেক দোকান পাবেন যারা ফি জমা দিয়ে দেয়। আর এজেন্টরা ৫০ থেকে ১০০ টাকাও বেশি নিবে।
যেভাবেই পেমেন্ট দিন না কেন আপনার ফোন নাম্বারে একটা মেসেজ আসবে। কোন প্রিন্ট আউট বা মেসেজ দেখানোর দরকার পরে না, যদি না পেমেন্ট নিয়ে কোন সমস্যা হয়। আপনি শুধু নিজে একবার এই লিংক থেকে চেক করে নিবেনন যে আপনার আবেদনের ফি সঠিকভাবে জমা পড়েছে কিনা। লিংকে ক্লিক করার পর উপরে ডান দিকে ‘CHECK PAYMENT STATUS’ এ ক্লিক করে আপনার WEB FILE NUMBER, Passport No আর ক্যপাচা পুরন করে দেখে নিন আপডেট। এখানে ঠিক দেখালে আর কিছু কোন চিন্তা নেই। এখন জমা দিতে চলে যান।
WEB FILE NUMBER কি তা দেখুন নিচের ছবিতে।
WEB FILE NUMBER
ভিসা ফি জমা দেয়া হয়ে গেলে এখন আপনাকে ভিসা আবেদন কোন Indian Visa Application Center (IVAC) বা ‘ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র (আইভ্যাক)’ – এ জমা দিতে হবে। এখন কোন কেন্দ্রেই কোন ধরণের ভিসার জন্যই অ্যাপয়েন্টমেন্ট বা ইটোকেন লাগে না।
এখন ঢাকাতে শুধুমাত্র একটাই আইভ্যাক । উত্তরা, মতিঝিল ,গুলশান, শ্যামলী সব কেন্দ্র সরিয়ে এক জায়গায় নিয়ে আসা হয়েছে। এখন অফিসিয়াল নাম আইভিএসি, ঢাকা ( জেএফপি ) যেটা যমুনা ফিউচার পার্ক-এ অবস্থিত। বিস্তারিত নিচে
ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র, ঢাকা (জেএফপি)
জি – এক , দক্ষিণ কোর্ট, যমুনা ফিউচার পার্ক, প্রগতি শরণী, বারিধারা, ঢাকা -২২২9, বাংলাদেশ .
Hot Line: 09612 333 666
E-mail: [email protected]
Website: www.ivacbd.com
আমার আইভিএসি জেএফপি -যমুনা ফিউচার পার্ক কেন্দ্রে জমা দেয়ার অভিজ্ঞতা নিচে দেয়া হল।
আমি ২য় বারের মত ভিসা আবেদন জমা দিয়েছিলাম আইভিএসি জেএফপি -যমুনা ফিউচার পার্ক কেন্দ্রে এ বছর জানুয়ারির ১৩ তারিখে।
এখন তো কোন কেন্দ্রেই কোন অ্যাপয়েন্টমেন্ট বা ইটোকেন লাগে না, সব কিছু রেডি করে একদিন গেলেই হয়। য়ার এখন এখানে আগের মিরপুর রোডের মত ভীড়ো নাই। ৫০ টার মত কাউন্টার আছে। যেখানে টুরিস্ট ভিসা জমা নেয়ার কাউন্টারই সবচেয়ে বেশি। এছাড়া বিজনেস, ট্রাঞ্জিট, স্টুডেন্ট ও অন্যান্য ভিসার জন্য আলাদা কাউন্টার আছে। তাই ৩০ মিনিতের বেশি সময় লাগবে না এখন জমা দিতে।
প্রথমেই শপিং মলের ভিতর ঢুকলেই কাউকে জিজ্ঞেস করলেই দেখিয়ে দিবে কোথায় জমা দিতে হবে। প্রথমে লাইন ধরে চেক করে ভেতরে ঠুকতে হবে, এর পর গেটের কাছাকাছি গেলে কি ধরনের ভিসা আবেদন করবেন সে অনুযায়ী প্রিন্ট করা সিরিয়াল টোকেন দিবে যেটা নিয়ে আপনাকে ভেতরের রুমে গিয়ে বসতে হবে। এখানে গেলেই দেখবেন ওদের টোকেন-ডিস্প্লেতে কাউন্টার ও সিরিয়াল দেখাবে।
এর মাঝে ওরা আপনাকে বলবে যে কিভাবে আবেদনপত্রের সব কাগজগুলো সাজাবেন। এরপর আপনার সিরিয়াল আসলে কাউন্টারে গেলে একজন এক্সিকিউটিভ সব চেক করবেন, আপনার সব ডকুমেন্টের মুল কপি দেখতে চাইতে পারেন। আপনি কি করেন, ব্যংক স্টেটমেন্ট কার, কেন ইন্ডিয়া যাবেন এই টাইপের কিছু প্রশ্ন করতে পারে। এরপর সব ঠিক থাকলে আপনাকে একটা রশিদে স্বাক্ষর করে, আরেকটা রশিদ দেয়া হবে। এই রশিদ দিয়ে পাসপোর্ট ফেরত নিতে হবে। তাই যত্ন করে রাখুন।
এই ভিসা আবেদন কেন্দ্রের কিছু বিষয়।
আপনি ভিসা আবেদন জমা দেয়ার সময় আপনাকে একটি প্রাপ্তি রশিদ দেয়া হবে যাতে আপনার নাম, পাসপোর্ট নম্বর, Web File No, ভিসা আবেদন ফি ইত্যাদিসহ একটা তারিখ দেয়া থাকবে। তারিখটি এভাবে দেয়া থাকে ‘Delivery on or after: 2017-12-17’. এর মানে আপনি উল্লিখিত তারিখ বা এর পর যেকোনদিন নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট ডেলিভারি নিতে পারবেন। যদি অনলাইনে রশিদে উল্লিখিত তারিখের আগেই পাসপোর্ট রেডি দেখায় তাতেও আগে দিবে না। আর সব সময় যে রশিদে উল্লিখিত সময়েই পাসপোর্ট ডেলিভারি দেয়া হবে এমন কিন্তু নয়, অনেক সময় দেরিও হতে পারে। তাই আপনি আইভ্যাকে যাওয়ার আগে চেক করে নিন যে আপনার আবেদনের কি অবস্থা। সাধারণত ওরা আগেই এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয় যে আপনার পাসপোর্ট ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত। এছাড়া আপনি আইভ্যাকের ওয়েবসাইটে আপনার ভিসার আবেদন ট্র্যাক করতে পারেন। এজন্য আপনাকে যেতে হবে এই ঠিকানায়, এরপর আপনি যেই সেন্টারে আপনার আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন তা সিলেক্ট করুন।
এখন নিচের দেখানো বক্সে ‘Web file Number’ দিয়ে সাবমিট করুন। এখন আপনি আপনার ভিসা আবেদণের বর্তমান অবস্থা জানতে পারবেন।
এই IVAC ৩:০০ থেকে ৬:০০ পর্যন্ত পাসপোর্ট ডেলিভারি দিয়ে থাকে। নিচের ছবিটি দেখুন, এটি আমাকে দেয়া হয়েছিল ফর্ম জমা দেয়ার পর।
IVAC Receipt
ভিসা জমা দেয়ার জন্য সকালে যেটুকু ভীড় হয় তার চেয়ে পাসপোর্ট নিতে বেশি বড় লাইন হয়। তবে আশার কথা পাসপোর্ট নিতে বেশি সময় লাগে না তাই দ্রুতই লাইন শেষ হয়। পাসপোর্ট ডেলিভারির সময় তারা কোন কথা বলবে না, শুধু রশিদ দিবেন আর পাসপোর্ট নিবেন।
আর একটা কথা রশিদ যত্ন করে রাখুন, কারণ হারিয়ে গেলে অনেক ঝামেলা হবে। জিডী করতে হবে ও এর পরেও কাগজপত্র লাগে। তাই সাবধান!
তো আপনার পাসপোর্ট নিয়ে নিন, আর চেক করে দেখুন ভিসা পেয়েছেন কিনা। ভিসা পেলে একটা পেইজে নিচের মত ভিসা লাগানো দেখবেন।
ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা
আমি প্রথমবার ১২ মাসের এপ্লাই করেছিলাম, কিন্তু ওরা ৬ মাসের ভিসা দিয়েছে (উপরের ছবিতে)। আর এইবার জানুয়ারী ২০১৯ এ ট্রানজিট ভিসা নিয়ে ঘুরে এলাম ভুটান। তো ঘুরে আসুন ইন্ডিয়া আর এসে লিখে ফেলুন আপনার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা।
আমি গতবছরের মে মাসে ঘুরে এলাম মেঘালয় থেকে। আমি ঘুরেছি, ডাউকি, মাউলিলং, স্নোনেংপেডেং, চেরাপুঞ্জি ও শিলং। আমার লেখা মেঘালয় ভ্রমণ গাইড পড়ুন এখানে। মেঘালয়/শিলং ভ্রমণ গাইড বিস্তারিত খরচ ও অন্যান্য তথ্য।
আর ভিসা না পেলে পেইজে কিছুই থাকবে না, মানে পাসপোর্ট যেমন জমা দিয়েছেন সেরকমই ফেরত পাবেন। Bad luck :-(. আবার চেষ্টা করুন ভাই।
ভিসা পেলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আমার পোস্ট কারো কাজে লেগেছে জানলে ভাল লাগবে আমার।
আশা করি ইন্ডিয়ান ভিসা প্রসেসিং সম্পর্কে আপনাদের সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছি। তারপরেও আরো কোন প্রশ্ন থাকলে করুন। আমি উত্তর দিব। প্রশ্নের জন্য সাইটের মেইন কমেন্ট বক্সে প্রশ্ন করলে আমার কাছে ইমেইলে নোটিফিকেশনে আসবে তাই দ্রুত উত্তর দিতে পারব। আর ফেসবুক কমেন্ট করলে আমাকে ম্যানুয়্যালি চেক করতে হয়, তাই একটু দেরি হতে পারে।
আর আপনার কাছে যদি আপডেট তথ্য থাকে অথবা কোন তথ্য ভুল মনে হয় তাহলে দয়া করে কমেন্ট করে জানান, আমি আপডেট করব। এতে সবারই উপকার হবে। আমি প্রপার ক্রেডিট দেয়ার চেষ্টা করব।
অনেক ধন্যবাদ কষ্ট করে পড়ার জন্য।
Credit goes to Saiful islam Sohel
আপনি যদি পাসপোর্ট করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে এখানে পাসপোর্ট ক্লিক করুন।