শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
FoyEz00

Call

মার্কিন বিজ্ঞানী আরভিং ল্যাংমুয়ার প্রথম প্লাজমা শব্দটির প্রচলন করেন। প্লাজমা হলো উচ্চ তাপমাত্রায় আয়নিত গ্যাস, যেখানে মুক্ত ইলেকট্রন এবং ধনাত্মক আয়ন প্রায় সমপরিমাণে থাকে। প্লাজমার কণাগুলি আয়নিত বলে সাধারণ গ্যাসের সঙ্গে এর আচরণগত কিছু পার্থক্য আছে। তবে গ্যাসের মতোই প্লাজমার নির্দিষ্ট আকার বা আয়তন নেই। চৌম্বকক্ষেত্রের প্রভাবে প্লাজমা পদার্থ ফিলামেন্ট, বীম বা দ্বি-স্তর গঠনে পরিণত হতে পারে। যেহেতু এর সকল কণা বৈদ্যুতিক চার্জযুক্ত, বিদ্যুৎ ও চৌম্বক ক্ষেত্রের সাহায্যে তাই প্লাজমাকে সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

যেকোনো গ্যাস দুটি উপায়ে প্লাজমা হতে পারে। গ্যাসকে কোনো পাত্রে রেখে এর ভেতর বৈদ্যুতিক বিভব পার্থক্য তৈরি করে প্লাজমা তৈরি করা যায়। অথবা উচ্চমাত্রায় তাপ প্রয়োগ করে গ্যাসকে প্লাজমায় পরিণত করা যায়।

সূর্যের কেন্দ্রে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম এবং সামান্য পরিমাণ অন্যান্য ভারী মৌল থাকে সেগুলো। কিন্তু সাধারণ পরমাণুর আকারে থাকে না। থাকে প্লাজমা অবস্থায়। সূর্য বা নক্ষত্রগুলোর ভেতরে সবসময় চলে প্লাজমা তৈরি খেলা। উচ্চ তাপমাত্রায় মৌলের পরমাণুগুলো থেকে নিউক্লিয়াস ও ইলেকট্রন আলাদা হয়ে আয়ন আর ইলেকট্রনের এক প্লাজমা দানব তৈরি করে।

প্লাজমা আমাদের কাছে অচেনা মনে হয়। আসলে কিন্তু পৃথিবীতে অহরহই এর দেখা মেলে। আকাশের বিদ্যুৎচমক, বৈদ্যুতিক স্ফূলিঙ্গ, ফ্লুরোসেন্ট বাতি বা টিউব লাইট, আকাশের উজ্জ্বল তারা, নিওন বাতি– এগুলোর সবই প্লাজমা অবস্থার উদাহরণ। এছাড়া শিল্প কারখানায় বা জাহাজের লোহার পাত কাটার সময় একধরনের নীলচে গ্যাসীয় শিখা দেখতে পাই। এটা আসে প্লাজমা টর্চ থেকে। এসি ও ডিসি বিদ্যুৎ, রেডিও-ফ্রিকোয়েন্সি অন্যান্য গ্যাসীয় বিক্রিয়কের সাহায্যে প্লাজমা টর্চে প্লাজমা গ্যাস তৈরি করা হয়।

পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত প্লাজমা হল নিয়ন সাইন। বিভিন্ন আলোকসজ্জাতে এই নিয়ন সাইন ব্যবহার করা হয়। গ্যাসনলের ভেতর বিদ্যুৎ প্রবাহ চালিয়ে নিয়ন গ্যাসের প্লাজমা তৈরি করা হয়। সেই প্লাজমা গ্যাসই নিয়ন সাইনের আলোর উৎস।


ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ